ঢাকা, ৩ জুলাই ২০২৪, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬ জিলহজ্জ ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

বিষয় ছাড়া কীভাবে ডায়ালগ হবে?

তারিক চয়ন, ফিলিপাইন থেকে
৩০ জুন ২০২৪, রবিবারmzamin

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ডিবেটে বসা প্রশ্নে মুখ খুলেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন চা বিরতির ফাঁকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন এই অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আপনার নানা বিষয়ে ভিন্নমত আছে- এ কথা বলতেই ড. ইউনূস অবাক হয়ে বলেন, ‘কোন্‌ বিষয়ে ভিন্নমত আমিতো জানি না!’ জানতে চাওয়া হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন যে, এই ভিন্নমত দূর করতে তিনি আপনার সঙ্গে সংলাপ করতে চান। আপনি এ ব্যাপারে কী বলবেন?’ ড. ইউনূস তখন বলেন, ডিবেট তো হয় বিতর্কিত বিষয় নিয়ে। এখানে তো বিতর্কের কিছু নাই! হয় আপনি করেন, না হয় করবেন না। কেউ তো বিতর্ক করতে যাচ্ছে না। কী বিষয়ে বিতর্ক করবো? এখানে (সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনে) কেউ কোনো বিতর্ক এনেছে? তাকে ফের প্রশ্ন করা হয়- সংলাপ হলে তো অবশ্যই আপনি রাজি আছেন? ড. ইউনূস বলেন, কী নিয়ে ডায়ালগ হবে, একটা বিষয় তো থাকতে হবে। বিষয় ছাড়া কীভাবে ডায়ালগ হবে! তখন তাকে বলা হয়, আপনি আগে রাজি হলে তখন হয়তো বিষয় বলা হবে। ড. ইউনূস মৃদু হেসে বলেন, এটা কী ধরনের কথা! আমি আগে রাজি হবো, তারপর বিষয় হবে...। এ সময় জন্মদিন নিয়ে সাংবাদিকরা অনুভূতি জানতে চাইলে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ও রকম কোনো অনুভূতি নাই।

বিজ্ঞাপন
যেহেতু পারিবারিকভাবে কোনোদিন জন্মদিন পালন করি নাই, এই ঐতিহ্য পরিবারে নাই। যখনই জন্মদিনের কথা আসে লোকে পালন করতে চায়। আমি বললাম, জন্মদিন পালন করবো না, সেদিন বরং সোশ্যাল বিজনেস ডে করবো। সেভাবে বাংলাদেশে সোশ্যাল বিজনেস ডে শুরু হয়। তিনি বলেন, এটি একটি পরিবার, এটি পারিবারিক পুনর্মিলনী। জন্মদিন যদি হয় এটা পরিবারিক অনুষ্ঠান। আমরা বৃহত্তর পরিবার নিয়ে সেটা করছি। প্রত্যেকবার আমরা সবাইকে একত্র করি। সেটা বাংলাদেশেই ৭ বছর ধরে করেছি। পরবর্তীতে সেটা বাংলাদেশে পালন করা সম্ভব হলো না।

কেন সম্ভব হলো না? এমন প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের হোটেল নিতে দিলো না, জায়গা পেলাম না (২০১৭ সালে)। আমাদের বিদেশি যারা আসছিল, প্রায় ৩৫০ জন বিদেশি অলরেডি তখন এসে গেছে ঢাকা শহরে। তাদের কোথায় নিয়ে যাবো, কোথায় বসাবো, কোথায় আলাপ করবো? কোথাও জায়গা পাচ্ছিলাম না। শেষে হোটেলের লবিতে আমরা আয়োজন করলাম, যেহেতু আর জায়গা পাচ্ছি না। তখন থেকে ঠিক করলাম যে দেশের ভেতরে ধস্তাধস্তি করার চাইতে..... কারণ খুব গুরুত্বপূর্ণ লোকজন এসেছিল। জাতিসংঘের লোকজন এসেছিল, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোকজন এসেছিল। তাদের  নিয়ে আমরা খুব বিব্রত হলাম।  তাদের কথা শুনতে পারছিলাম না, যদিও তাদের কথা বলার জন্য আনছি। তখন মনে করলাম, এটা আর করা ঠিক হবে না। সেই থেকে আমরা বাইরে বাইরে করছি। দেশে অনুমতি পাওয়া যায় না।

আপনি ৮৪ বছরে পদার্পণ করলেন, এর মধ্যে ৫৩ বছর কেটে গেল স্বাধীন বাংলাদেশে। বাংলাদেশ জন্মের সময় আপনার একটা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ছিল। আপনার কি ওই কথা কখনো মনে হয়?-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম ইরি ধান দিয়ে। আগে সঠিক পদ্ধতিতে ধান লাগানো হতো না। যেখানে- সেখানে ধান লাগিয়ে চলে যেতো। আমরা বললাম এভাবে হবে না, ইরি ধানের চাষ করতে হবে, তাহলে ফসল বাড়বে। মানুষ ইরি ধানের নাম শোনেনি, কিচ্ছু নাই, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এলাম মাঠে। তখন কাদামাটির মধ্যে পা ঢুকানো প্রথম অভিজ্ঞতা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের। মানুষ খুব অবাক হয়ে গেল। এখানে এমএ/বিএ পড়তে এসেছে, তারা এখন মাঠে গিয়ে চাষার সঙ্গে কাজ করছে। এটা কোন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়! এটা ৭৩/৭৪ এর ঘটনা। 

এর সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের সম্পর্ক কী? ড. ইউনূস বলেন, এই একটা থেকে আরেকটা আইডিয়া এলো। তখন দেখলাম এখানে অনেক লোক...চাষ নাই। তারা মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জীবন চালায়। তারা হলো চাষি, তাদের জমি নাই। তখন মনে হলো এদের জন্য কী করা যায়। তাদের জন্য করতে গিয়ে নানান কর্মসূচি এলো।

দুঃখ প্রকাশ: ‘বিষয় ছাড়া কীভাবে ডায়ালগ হবে’- শিরোনামে শনিবার মানবজমিন-এ প্রকাশিত সংবাদে ভুলবশত এ সংক্রান্ত অন্য একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা বিনীত দুঃখিত। 
প্রধান বার্তা সম্পাদক 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status