অনলাইন
'ভারতে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, আইনের অপব্যবহার বাড়ছে', বার্ষিক রিপোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ আমেরিকার
মানবজমিন ডিজিটাল
(২ দিন আগে) ২৮ জুন ২০২৪, শুক্রবার, ১২:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৭ পূর্বাহ্ন
ভারতে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ধর্মান্তর বিরোধী আইন এবং বাড়িঘর ও উপাসনালয় ধ্বংসের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি হয়েছে ৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন একথা বলেছেন। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে বৃহষ্পতিবার বার্ষিক 'ধর্মীয় স্বাধীনতা' সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তখনই হিংসা থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে ভারত সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ব্লিঙ্কেন।
বলেন, ' আমরা দেখতে পাচ্ছি ভারতে ধর্মান্তর বিরোধী আইনগুলো আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বাড়ছে ঘৃণাভাষণ। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি বা উপাসনাস্থল ভেঙে দেয়া হচ্ছে। রীতিমতো কষ্ট করে ধর্মীয় স্বাধীনতা বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে সংখ্যালঘুদের।”
প্রতিবেদনে কিছু ভারতীয় রাজ্যের আইনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ এবং বিয়ের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত করার ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। "কট্টরপন্থী" গোষ্ঠীগুলির দ্বারা এই আইনগুলির অপব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে মার্কিন রিপোর্টে। সেখানে লেখা হয়েছে , 'দেশের ২৮ টি রাজ্যের মধ্যে দশটি রাজ্য — ছত্তিশগড়, গুজরাট, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, কর্ণাটক, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর প্রদেশ — ভুল উপস্থাপন, বলপ্রয়োগ, অযাচিত প্রভাব, জবরদস্তি, প্রতারণা অথবা বিয়ের মাধ্যমে ধর্মান্তরিতকরণের আইন রয়েছে। এটি রাজ্য এবং সামাজিক স্তরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। হরিয়ানায় , কর্তৃপক্ষ যেখানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছিল সেই এলাকায় ১২০৮ টি কাঠামো ভেঙে দিয়েছে। নাগরিক সমাজ সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক এনজিওগুলি মূলত মুসলিম বাড়ি এবং দোকানগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ এনেছে। আমাদের প্রতিবেদনে এমন ঘটনাগুলিও নথিভুক্ত করা হয়েছে যেখানে সামাজিক স্তরে সহিংসতা ঘটছে, কখনও কখনও দায়মুক্তি সহ, এবং এটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের দমনেও অবদান রাখে।
খ্রিস্টান সম্প্রদায় এবং মণিপুর সহিংসতা
আইরিশ এনজিও চার্চ ইন চেইনের ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, যদিও ভারতীয় সংবিধান ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়, গ্রামীণ এলাকায় খ্রিস্টানরা ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত হিন্দু চরমপন্থীদের দ্বারা ক্রমবর্ধমান নিপীড়নের সম্মুখীন’।
আইরিশ পার্লামেন্টে এনজিও দ্বারা পেশ করা ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: "উগ্রপন্থীরা ছোট গির্জাগুলিতে আক্রমণ করে, যাজক এবং সদস্যদের মারধর করে, বাড়িঘর ও গির্জার ভবনে আগুন দেয় এবং খ্রিস্টানদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করে’।
ব্লিঙ্কেনও তার বক্তৃতায় বলেছিলেন: "খ্রিস্টান সম্প্রদায়গুলি রিপোর্ট করেছে যে স্থানীয় পুলিশ জনতাকে ধর্মান্তকরণ কার্যক্রমে সহায়তা করে। তারপরে ধর্মান্তরের অভিযোগে ভিকটিমদেরই গ্রেপ্তার করে।‘
মণিপুরে জাতিগত সহিংসতার কথা উল্লেখ করে, মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতার কারণে "কমপক্ষে ২৫৩ টি গীর্জা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ২00 জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে এবং ৬০,০০০ এরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে’।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে ‘সুপ্রিম কোর্ট সহিংসতা বন্ধ করতে কেন্দ্রীয় ও মণিপুর সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করেছে, বিশেষ করে সংঘাতের প্রাথমিক পর্যায়ে’।
সূত্র : দা প্রিন্ট
পাঠকের মতামত
গ্রামে একটা কথার প্রচলন আছে " নাই কাজ খৈ বাছ " আমেরিকা ইজি কামে বিজি।