প্রথম পাতা
চিনির দাম নিয়ে তুঘলকি কাণ্ড, বিশ্ববাজারে কমেছে ৪০, দেশে ৩ শতাংশ
মো. আল-আমিন
২৬ জুন ২০২৪, বুধবারচিনির দাম নিয়ে স্বস্তিতে আছে বিশ্ববাসী। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মাসভিত্তিক ফুড প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, গত বছরের মে মাসে চিনির বৈশ্বিক গড় দামের সূচক ছিল ১৫৭ দশমিক ২ পয়েন্ট, যা চলতি বছরের মে মাসে কমে ১১৭ দশমিক ১ পয়েন্ট হয়েছে। অর্থাৎ এক বছর আগে এই সূচক রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর গত মাসে তার মান ৪০ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশনের (আইএসও) তথ্যও বলছে, বিশ্ববাজারে ধারাবাহিকভাবে চিনির দাম কমেছে। তবে বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। চিনি নিয়ে অস্বস্তি এখনো কাটেনি। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে দেশের বাজারে চিনির দাম কমেছে মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ।
এফএও’র ফুড ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল জুড়ে চিনির বাজার অস্থিতিশীল ছিল। ওই বছরে চিনির গড় মূল্যসূচক ছিল ১৪৫ পয়েন্ট। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চিনির মূল্যসূচক সবচেয়ে বেড়ে ১৬২ দশমিক ৭ পয়েন্ট হয়। অক্টোবরে অল্প কমে ১৫৯ দশমিক ২ শতাংশ হয়।
ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশনের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর এক টন অপরিশোধিত চিনির মূল্য ছিল প্রায় ৭০০ ডলার। চলতি বছরের মে মাসে তা কমে ৫৩০ ডলারে নেমে আসে। অর্থাৎ ৬ মাসের ব্যবধানে চিনির দাম ১৭০ ডলার কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, প্রতি ডলারের দাম ১১৭ টাকা হলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি ডলারের জন্য তাদের গুনতে হচ্ছে ১২৫ টাকা। প্রতি ডলার ১২৫ টাকা দরে এক টন চিনির আমদানি মূল্য হয় ৬৬ হাজার ২৫০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি চিনির আমদানি মূল্য ৬৬ টাকা। এর সঙ্গে জাহাজ খরচ, আমদানি শুল্ক, ভ্যাট এবং কোম্পানির আনুষঙ্গিক খরচ যুক্ত হয়। এতে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়ছে না বলে জানান দেশের চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
দেশবন্ধু গ্রুপের সিইও শফিউল আজম তালুকদার মানবজমিনকে জানান, বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমেছে এটা ঠিক, তবে দেশের বাজারে দাম না কমার বেশকিছু কারণ রয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমার বেনিফিট বাংলাদেশ নিতে না পারার অন্যতম কারণগুলো হলো- জাহাজ খরচ বৃদ্ধি পাওয়া, ডলার সংকট, এলসির সীমাবদ্ধতা, ডলারের রেট এবং কাস্টমস ডিউটি। বর্তমানে চিনির দাম কমানোর একটাই পথ আছে, সেটি হলো ডিউটি ফি কমানো। এটি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি চিনির শুল্ক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ঘোষণায় অন্যান্য শুল্ক বহাল রেখে শুধু কাস্টমস ডিউটি টনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ (অপরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে) থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। পরিশোধিত চিনির কাস্টমস ডিউটি ৩ হাজার থেকে কমিয়ে ২ হাজার টাকা করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১লা নভেম্বর একই প্রক্রিয়ায় অপরিশোধিত চিনির কাস্টমস ডিউটি ৩ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা এবং পরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে করা হয়েছিল ৩ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দেশের কোম্পানিগুলো দাম বাড়ানোর সময় বিশ্ববাজারের অজুহাত দিয়ে থাকে। আর বিশ্ববাজারে দাম কমলে ভ্যাট, ডলার সংকট, ডিউটি ফির অজুহাত দিয়ে দেশে জিনিসের দাম কমায় না। তিনি বলেন, কাস্টমস ডিউটি তো দেশে কমানো হয়েছে। কিন্তু তার প্রভাব তো বাজারে দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেন, ট্যারিফ কমিশন ব্যবসায়ীদের হয়ে এনালাইসিস করে। তারা যেহেতু একটি পক্ষকে খুশি করার জন্য এনালাইসিস করে থাকেন, সেহেতু ভোক্তাদের স্বার্থ উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। ট্যারিফ কমিশনের এনালাইসিস সঠিক হচ্ছে না।
জনবান্ধব সরকার হলে ঠিকই আমাদের মায়া মমতা বুঝতেন। তিনি আমাদের উপর ঠান্ডা মাথায় স্টীম রোলার চালাচ্ছেন। এর বিচার আল্লাহ করবেন।ইনশা আল্লাহ।
কি আর করার আছে সাধারণ জনগণের ? যখন সর্ষের মধ্যে ভূত থাকে।
বিশ্বের উল্টো পথে চলে বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য। যদি বিশ্বের বাজারে বাড়ত তাহলে ভোরেই দাম বৃদ্ধি হত ।