প্রথম পাতা
জেনারেল আজিজের তেলেসমাতি
শরিফ রুবেল
৫ জুন ২০২৪, বুধবার
আজিজ আহমেদ। ডাক নাম ফারুক। এক সময়ের মহাপরাক্রমশালী জেনারেল। কাজ করতেন খেয়াল-খুশিমতো। তিনি একজন
আদর্শ ভাইও বটে। শীর্ষ সন্ত্রাসী ভাইদের বাঁচাতে আজিজ আহমেদের ভূমিকা ছিল অভাবনীয়। সন্ত্রাসী ভাইদের নানা সুবিধা, ফাঁসি থেকে বাঁচানো, ব্যবসায়িক সহায়তা, অনৈতিক সুবিধা, সন্ত্রাসীর তালিকা থেকে বাদ দেয়া, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ গায়েব, নাম পরিবর্তন, ভুয়া এনআইডি ও পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তা, ফ্ল্যাট, প্লট, বাড়ি, গাড়ি, হোটেল-রিসোর্ট এমনকি বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনে ভাইদের সহায়তা করেছেন এই দাপুটে জেনারেল। আলোচিত ছিলেন নিজের কর্মগুণেও। শুধু ভাইদের জন্য নয়। নিজেও রিসোর্ট, বাংলোবাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট, শত বিঘা জমি কিনে তেলেসমাতি দেখিয়েছেন। অনিয়ম ও পদ ব্যবহার করে দুর্নীতির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন আজিজ। দেশ জুড়ে তাকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা- সমালোচনা।
নামে-বেনামে যত সম্পদ: মানবজমিনের অনুসন্ধানে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। রাজধানীর তুরাগ নদ ঘেঁষা আমিনবাজার বড় বরদেশী মৌজায় সিলিকন সিটি হাউজিংয়ে আরএস ১৩০৩ নং দাগে ৭৫ কাঠা, ১৩১১ নং দাগে ৩০.৬ কাঠা, ১৭৬১ দাগে ৮০ কাঠা জমি রয়েছে আজিজ আহমেদের। ওই জমিতে তার একটি বাংলো বাড়ি রয়েছে। উঁচু দেয়ালে ঘেরা বাড়িতে হরেক রকম গাছ ও পশুপাখি লালনপালন করা হয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন আনসার সদস্যরা। সময় পেলেই এই বাড়িতে ছুটে যান আজিজ আহমেদ। মাঝেমধ্যেই স্কুল- কলেজের বন্ধুদের নিয়ে এই বাড়িতে আড্ডা দেন। এমন কয়েকটি ছবিও মানবজমিনের হাতে রয়েছে। সিলিকন সিটি হাউজিংয়ে আজিজ আহমেদের বড় ছেলে ইরফান আহমেদ সাদিব পরিচালক পদে রয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি হাইকোর্ট সিলিকন সিটির সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া সিলিকন সিটিতে আজিজ আহমেদের ছোটভাই তোফায়েল আহমেদ জোসেফের নামে প্রায় ২০০ কাঠা জমি আছে। অভিযোগ রয়েছে, জেনারেল আজিজ আহমেদ সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় সিলিকন সিটি হাউজিংয়ের এমডি সরোয়ার খালেদকে জমি দখলে সহায়তা করায় আজিজ ও তার পরিবারকে এই সম্পত্তি উপহার দেয়া হয়।
সিলিকনের ম্যাপেও আজিজ পরিবারের সম্পত্তির নির্দেশিকা দেখা গেছে। এ ছাড়া আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের মনোসন্তোষপুর মৌজায় পূর্ণিমারচালা এলাকায় আরএস ১৭১ ও ১৭২ নং দাগে আজিজ আহমেদের প্রায় ২১ বিঘা জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালের স্থানীয় ঈমান আলী, আব্বাস উদ্দিন, খোরশেদ আলম ও ফারুকের মাধ্যমে এই জমি কেনেন আজিজ আহমেদ। ১৭১ দাগের জমিতে উঁচু প্রাচীরঘেরা একটি বাংলোবাড়ি আছে। পাশের ১৭২ দাগে ইটের রাস্তার পাশে প্রায় ৫ বিঘা জমি বাউন্ডারি করে রাখা আছে। ভেতরে ছোট্ট একটি ঘরে আজিজ আহমেদের বাসার কাজের লোক সাবেক সৈনিক মাইন উদ্দিন সুমন তার পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তিনি প্রায় ২ বছর ধরে এই সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্বে আছেন। সরজমিন গিয়ে আজিজ আহমেদের জমির নিরাপত্তারক্ষী মাইন উদ্দিন সুমনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমার বাড়ি বছিলা ঘাটারচর। আমি আজিজ স্যারের বাসায় কাজ করতাম। অবসরে যাওয়ার পরে আমারও চাকরির মেয়াদ শেষ হয়। পরে আমি এখানে চলে আসছি। এই জমির মালিক কে জানি না। তারা (আজিজ) আমাকে এখানে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি দায়িত্ব পালন করছি। আমার কাজ শুধু দেখাশোনা করা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি মানবজমিনকে বলেন, আজিজ আহমেদ প্রায়ই এই জমি দেখতে আসেন। আশুলিয়া জিরাবোর ফারুক হোসেন তাকে এই জমি কিনে দিয়েছেন। ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীর গাড়ি নিয়েই তিনি এখানে আসতেন। এখন কম আসেন। তার ভাই জোসেফ ২ থেকে ৩ মাস পর পর আসেন। কয়েকটি গাড়ি নিয়ে আসেন। জমি দেখে আবার চলে যান। শুনেছি আজিজ আহমেদ জমিগুলো ফারুক হোসেন ব্যাপারীর নামে কিনেছেন। পরে তার কাছ থেকে পাওয়ার নিয়ে রেখেছেন।
তার মনোসন্তোষপুর মৌজায় ৫০ বিঘার উপরে জমি আছে। ফারুকের যত জমি সবগুলোই আজিজ আহমেদের। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর রামচন্দ্রপুর মৌজায় জাকের ডেইরি ফার্মের অপর পাশে আরএস ৫৮২ নং দাগে আজিজ আহমেদের ৪ কাঠার দুটি প্লট আছে। প্লট দুটির দাম আনুমানিক ৬ কোটি টাকা। ওই প্লটে আজিজ আহমেদের নামে সাইনবোর্ড ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পরদিন ওই সাইনবোর্ড সরিয়ে নেয়া হয়। একই মৌজায় মোহাম্মদিয়া হাউজিং লিমিটেড ৪ নং রোডে কুবা মসজিদের গলিতে ৯৯ নং বাসায় আজিজ আহমেদ ও তার ভাইদের নামে বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বাড়িটি নির্মাণ করা ইউনিক হোল্ডিংয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০০৫ সালে বাড়িটি নির্মাণের সময় আজিজ আহমেদের ভাইয়েরা নির্মাণে বাধা দেন। প্রায় ৫ মাস নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। পরে তাদের ফ্ল্যাট দেয়ার শর্তে নির্মাণকাজ শেষ করা হয়। ওই বিল্ডিংয়ে তাদের নামে কয়েকটি ‘দানের’ ফ্ল্যাট রয়েছে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদের ওই ফ্ল্যাট দিতে হয়েছে। তাই দানের ফ্ল্যাট বললাম। এ ছাড়া ভাকুর্তা ইউনিয়নের বাহেরচর এলাকায় শ্যামলাপুর মৌজায় আজিজ আহমেদের নামে বেশ কিছু প্লটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শ্যামলাসি কলাতিয়া পাড়ার পেছনে জমজম হাউজিংয়ের রাস্তার ডান পাশে ৮০ শতাংশের প্লট, এর একটু দূরেই ৫০ শতাংশের আরেকটি প্লট আছে আজিজ আহমেদের। এ ছাড়া শ্যামলাসি দুদু মার্কেট এলাকায় অ্যাকটিভ প্রিক্যাডেট স্কুলের পাশে ১৭ শতাংশের একটি প্লট রয়েছে তার। ওই জমি বিক্রির চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। ভাকুর্তা ইউনিয়নের শ্যামলাপুর মৌজার বাহেরচর ও লুটেরচর এলাকায় আজিজ আহমেদের সহায়তায় বিপুল পরিমাণ জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বড় ভাই আনিস আহমেদের ছেলে আসিফ আহমেদের বিরুদ্ধে। সিএস ৩৪৩ ও ৩৪৪, আরএস ২৫০২ দাগে ৭৮ শতাংশ। জমিটি আগে সেজান জুসের মালিকানায় ছিল।
এ ছাড়া শ্যামলাপুর মৌজায় আরএস ২৬৬৪ দাগে ৯৮ শতাংশ জমি আছে। জমিটি আগে ছিল লুটেরচর বড় মসজিদ ও বছিলা মসজিদের। এই জমিতে ৩৮টি প্লট তৈরি করে চারদিকে প্রাচীর দিয়ে রাখা হয়েছে। পাশের প্লটেই এসএ ৮২৫, আরএস ২৫০০ ও ২৫০১ দাগে আজিজ আহমেদের বোন জামাই নুরুল ইসলামের ৩৯ শতাংশ জমি রয়েছে। এই জমির মালিক ছিলেন খোরশেদ আলম। পুরো জায়গাটি ইটের প্রাচীর তৈরি করে জিনি পাওয়ার টেকনোলজি লিমিটেডের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া চরওয়াশপুরে আসিফের নামে ৫২ শতাংশ জমি আছে। এই জমির একটি সাইনবোর্ড প্রতিবেদকের কাছে আছে। শ্যামলাসি স্কুলের পাশে রাস্তা থেকে নেমে আরএস ২৮৮৬ দাগে ৫ কাঠা জমিতে আজিজ আহমেদের একটি একতলা বাড়ি আছে। ওই বাড়িটি তিনি তার বোনকে লিখে দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আজিজ পরিবারের যত বাড়ি: মিরপুর ১২ নম্বরের সিরামিক ৪ নং গেইটের পাশে বঙ্গবন্ধু কলেজ রোডে ৫ কাঠার প্লটে আজিজ আহমেদের একটি ১০তলা বাড়ি রয়েছে। বাউনিয়া মৌজায় বাড়ি নং ১৩/১৪ ব্লক ডি, এভিনিউ-২, মিরপুর-১২, পল্লবী। ওই বিল্ডিংয়ে ২১টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০১৮ সালে বাড়ি নির্মাণের পরে হাউজিং কোম্পানির কাছ থেকে বাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নেন আজিজ আহমেদ। গত ২৫শে মে বাড়িটির নামফলক মুছে ফেলা হয়। ভবনের অধিকাংশ ফ্ল্যাট ফাঁকা আছে।
এলাকাবাসী জানান- আজিজ আহমেদের ম্যানেজার বাড়িটি বিক্রির জন্য স্থানীয় জমি কেনাবেচাকারীদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন। অনেকে বাড়ি দেখেও গেছেন। তবে বিক্রি হয়েছে কিনা তা কেউ বলতে পারছে না। মিরপুর সিরামিক ৪নং গেইটের ঠিক উল্টোপাশে বাউনিয়া মৌজায় ৩ কাঠা প্লটে আজিজ আহমেদের টিনশেডের আরেকটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ির সম্মুখভাগে ৪ থেকে ৫টি দোকান রয়েছে। যা ভাড়া দেয়া আছে। সিরামিক রোডের ১০তলা ভবনের বিষয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা হলে তারা মানবজমিনকে বলেন, আজিজ আহমেদের এখানে বাড়ি আছে, এটা জানে না, এই এলাকার এমন কোনো মানুষ নেই। ২০১৮ সালে বাড়িটি নির্মাণের সময় তিনি নিজে এসে দেখভাল করতেন। প্রায় প্রতিদিন আসতেন। পাশের চা দোকানি আলামিন মিয়া মানবজমিনকে বলেন, এই রোডে ১০ তলা একমাত্র বিল্ডিংই আজিজ আহমেদের। সেনাপ্রধানের লাল বিল্ডিং বললেই যে কেউ দেখিয়ে দিবে। রিকশাওয়ালাকে বলতেই নিয়ে আসবে। এই রোডে তার আরও একটি প্লট আছে। সামনে গিয়ে দেখেন তার নাম লেখা সাইনবোর্ড ঝুলানো আছে। ওই সাইনবোর্ডে আরেকজন অফিসারের নামও আছে। মনে হয় শেয়ারে জমি কিনেছেন। মিরপুর ডিওএইচএসে আজিজ আহমেদের ১টি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। রোড নং ১৩, প্লট নং ১৩২০, এভিনিউ-২, মিরপুর ঢাকা। ঢাকা সেনানিবাসে জেনারেল আজিজ আহমেদের একটি বিশাল বাংলোবাড়ি রয়েছে। হাউজ নং-০৩ (পথিকৃৎ) ঢাকা সেনানিবাস। এই বাড়িতে তিনি দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি পালন করেন। এ ছাড়া কুর্মিটোলা গল্ফ ক্লাবের পাশে নিকুঞ্জ-১ এর ৬ নম্বর রোডের মাথায় আজিজ আহমেদের একটি আলিশান বাড়ি রয়েছে। বাড়ি নং- RCF9+F5P, বাড়ির নাম আজিজ রেসিডেন্স। মিরপুর সিরামিক গেইটে আজিজ আহমেদের টিনশেড বাড়ির পাশের ৩০ নং প্লটের মালিকানা নিয়েও স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে বিরোধ চলছে। মো. হোসেন ফারুক লিটন নামের এক ব্যক্তি বর্তমানে ওই জমির ভোগদখলে আছে। স্থানীয় এক ফার্মেসি দোকানি মানবজমিনকে বলেন, এই জমি যার দখলে আছে সেই লিটন সাবেক সেনাপ্রধানের লোক। তার বলেই তিনি এই জমিতে আছেন। আজিজ আহমেদ মাঝেমধ্যে এখানে এসে জমির সামনে দাঁড়িয়ে লিটনের সঙ্গে কথা বলেন। তখন এলাকার কেউই এখানে আসার সাহস পান না।
পরিবারের সদস্যদের বাড়ি দখল: আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিংয়ের ৮ নম্বর রোডের মাথায় জমি দখল করে বিলাসবহুল একটি ১০ তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন আজিজ আহমেদের ভাই জোসেফ আহমেদ। বাড়ি নং ৫৪/১৯ এ, ব্লক#ক# ১২। বাড়ির নাম মায়ের আঁচল। এ ছাড়া পাশেই আজিজের ভাতিজা আসিফ আহমেদেরও একটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ি নং ৫৪/১৯ বি, ব্লক # ক # ১২। বাড়ির নাম ডায়মন্ড রিজেন্সি। বাড়িটি নির্মাণে প্রায় ৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ ছাড়া আদাবর নবোদয় হাউজিংয়ের ৫ নং রোডের এ ব্লকে ৭ নং বাড়িটিও আজিজ আহমেদের ক্ষমতা ব্যবহার করে দখল করে নেন জোসেফ। পরে ওই বাড়িটি জোসেফের বোন জামাই নুরুল ইসলামকে দেয়া হয়। মাস চারেক আগে মোহাম্মদপুর নুরজাহান রোডের ফিলবার্ড ক্যাবল অফিসের উল্টো পাশে একটি টিনশেড বাড়ি দখলে নেন জোসেফ।
হারিছের হাউজিং দখল: বাড্ডার সাতারকুলে মগারদিয়ার পূর্ব হাররদিয়া মৌজায় প্রায় ২৩৫ বিঘা জমি দখলে রয়েছে আজিজ আহমেদের ভাই হারিছ আহমেদ ও স্থানীয় এমপি’র ছেলে হেদায়েতউল্লাহ রন’র। আজিজ আহমেদ, শাহজাহান (যিনি আগে ওই জমির মালিক ছিলেন বলে অনেকের দাবি), হেদায়েতউল্লাহ রন ও হারিছ আহমেদের বৈঠকের একটি ছবিও প্রকাশ পায়। সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাড্ডা মডেল টাউনের ২৩৫ বিঘা জমির বড় বড় খণ্ডগুলোতে বিশাল বিশাল সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কালো রংয়ের সাইনবোর্ডে সাদা কালিতে লেখা রয়েছে এই সম্পত্তির মালিক হাসান হারিছ আহমেদ ও হেদায়েত উল্লাহ রন। পুরো প্রকল্প জুড়ে প্রায় ১৭টি সাইনবোর্ড দেখা গেছে। তবে সাইনবোর্ডে জমির পরিমাণ ও দাগ খতিয়ান কিছুই লেখা নেই। কিছু কিছু সাইনবোর্ডে আবার হারিছ আহমেদের সঙ্গে এপেক্স প্রপ্রার্টিস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের নাম রয়েছে। স্থানীয় হালিম শেখ নামের এক ব্যক্তি মানবজমিনকে বলেন, একজনের দখল করা জমি, আবার আরেকজন দখল করছে। এতে আমাদের কোনো লাভ-ক্ষতি হয়নি। প্রথমে শাহজাহান এক পাকি কিনে ১০ পাকি ভরাট করছে। তখন এলাকাবাসী বাধা দিয়েও কিছু করতে পারেনি। এখন তার দল ক্ষমতায় নেই তার জমিই অন্যরা দখল করে নিচ্ছে। এ ছাড়া হাজারীবাগ মডেল টাউনেও আজিজ আহমেদের ভাই হাসান হারিছ আহমেদ ও হেদায়েতউল্লাহ রন’র নামে ১১টি প্লট রয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে ’২১ সাল পর্যন্ত তারা এই প্লটগুলো দখলে নেন। এ ছাড়া হেমায়েতপুর আলিপুর ব্রিজের পাশে মাকান রিভারভিউ হাউজিংয়ে হাসান হারিছ আহমেদ ও জোসেফের নামে ২১টি প্লট আছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
হ্যারিটেজ রিসোর্টে শেয়ার: আজিজ আহমেদের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র মানবজমিনকে জানিয়েছেন নরসিংদীর মাধবদী রাইনাদী দিঘিরপাড় আজিজ আহমেদের আংশিক শেয়ারে একটি রিসোর্ট রয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই রিসোর্টের নাম হ্যারিটেজ রিসোর্ট। এর মালিকানায় আছেন মিনহাজুর রহমান রাজু ভুঁইয়া। তিনি জেনারেল আজিজ আহমেদের ছোট ভাই জোসেফের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ২০২০ সালে জেনারেল আজিজ আহমেদ ওই রিসোর্ট পরিদর্শনে যান। এমন বেশ কয়েকটি ছবিও মানবজমিনের হাতে রয়েছে। আজিজ তখন ঘুরে ঘুরে রিসোর্টের নির্মাণকাজের খুঁটিনাটি দেখেন। রিসোর্টের আশপাশের লোকজন বলেন, অনেকটা জোরজবরদস্তি করে পুলিশের ভয় দেখিয়ে রিসোর্টের জমি কিনে নেয়া হয়। এক বিঘা কিনে ৩ বিঘা ভরাট করা হয়। প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে এই রিসোর্ট। নির্মাণের সময় প্রায় প্রতিদিনই সেখানে পুলিশ পাহারা চলতো। মাঝেমধ্যে একটি বিশেষ বাহিনীর লোকজনকেও সেখানে যাতায়াত করতে দেখেছে এলাকাবাসী। তবে ওই রিসোর্টে আজিজ আহমেদের মালিকানার বিষয়ে দালিলিক কোন তথ্য মিলেনি।
প্রাপ্ত তথ্যের বিষয়ে জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে দফায় দফায় কল দেয়া হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পাঠকের মতামত
নানাজনের নানান মন্তব্য দেখলাম। আমার কথা হল, এইগুলো এখন প্রকাশ করছেন কেন? আগে কোথায় ছিলেন? নাকি আপনারা সব জেনেও চুপচাপ ছিলেন? বেনজির, আজিজ সব লুটপাটের রাজত্ব কি একদিনেই কায়েম করেছিল? আপনারা এতদিন প্রকাশ করলেন না কেন? এখন জনসম্মুখে এই ইতিহাস তুলে ধরে লাভ কি? এই রকম হাজারো রাঘব বোয়াল আমাদের আশেপাশে রয়েছে, পারলে এদের ঘোমটা খুলুন, জাতি আপনাদের স্বাগত জানাবে এমনকি দেশের সম্পদও কিছুটা রক্ষা পাবে।
মানবজীবন পত্রিকার প্রতিবেদককে এরকম একটি প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আসলে আমাদের পচন ধরেছে মাথার। একজন তার ইচ্ছা পূরন করে ক্ষমতায় আসিন থাকতে চারপাশে এসব নীতি-আদর্শহীন লোকদের ক্ষমতায়ন করেছে। এখন যা হবার তাই হচ্ছে। এখন তো মাত্র ২/১ জনের আমলনামা প্রকাশ পাচ্ছে, সময়ে আরও জানা যাবে আশাকরি। ধন্যবাদ।
রাষ্ট্র ও সরকারের স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা না থাকার কারণে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এ ধরনের পচন ধরেছে। যার দুষ্ট ক্ষত হচ্ছে আজিজ আহমেদ, বেনজির, এসপি রফিক সহ শত শত আমলা ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদরা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। সাহসী সাংবাদিকতার জন্য মানবজমিন পরিবারকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।
প্রথমে ধন্যবাদ জাানাই মানব জমিন পত্রিকা ও সাংবাদিক ভাইকে, যিনি তার সাহসি কলমের মাধ্যমে পুরা বিশ্ববাসিকে এই তথ্য গুলো জানার সুযোগ করে দিয়েছেন।সাংবাদিক ভাইরা আপনারা আরো সাহসী পদক্ষেপ নেন,যাতে এই দুর্নীতি পরায়ন সেনা,পুলিশ,সরকারি আমলা,জনপ্রতিনিধি ও এই সুন্দর বাংলাদেশটাকে যেসব পিশাচরা ধবংস করে দিচ্ছে তাদেরকেও আপনারা আপনাদের সাহসী লেখার মাধ্যমে ধবংস করে দিন।এই দেশবাসি আপনাদের মত সৎ, নির্ভিক,দুর্নীতিমুক্ত সাংবাদিকদের পাশে সবসময় থাকবে।
এ না হয় আমার সোনার বাংলা।
এই সেনা প্রধান আর দাউদকান্দির সাবেক জেনারেল ইকবাল সাহেবের চরিত্রের সাথে অনেক গরমিল । আজিজকে সেনা প্রধান বানানো সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত ছিল , তখন আজিজের চেয়ে অনেক অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন সেনা নায়কদের অতিক্রম করে আজিজের মত নিম্নমানের অফিসারকে সেনা প্রধান বানানো যে একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল তা কর্তৃপক্ষকে স্বীকার করতেই হবে ।
আজিজ, বেনজির চলে গেছে কিন্তু রেখে গেছে তাদের প্রধান পৃষ্টপোষক এবং সাংগপাংগোদের এদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে না হলে সবাই দুর্ভিক্ষর মধ্যে পড়বে। সবাই আগামির জন্য প্রস্তুত হন। নাহলে কপালে সবার দুঃখ আছে।
আজিজ ও বেনজিরের বেআইনি সম্পত্তি দেখেই দেশের মানুষ যার পর নাই হতবাক। দেশের সর্বত্র হৈচৈ পড়ে গেল। আর এদের কারিগরদের সম্পত্তির বিষয়ে জানতে পারলে দেশের মানুষের অবস্থা কি হবে হরিদাস!!!!!!!?
Too tried to read the article.
এ রকম অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অব্যহত থাকুক
পত্রিকা পড়ে এবং শুনে একটা বিষয় পরিষ্কার পরিবার এবং ভাইরা মিঃ আজিজ সাহেরের কাছে সবার আগে। আজকাল তো দুর্নীতির গন্ধ পেলেই খুঁজে পাওয়া যায় দুর্নীতিবাজ সব সম্পদ করে বউ এবং বউ-এর বাড়ীর লোকের নামে। সে হিসাবে মিঃ আজিজ একটা নোবেল পেতেই পারে।
ক্লান্ত হয়ে গেছি জমির হিসেব মিলাতে
তারা আওয়ামী লীগের কেউ না, তারা দেশের শত্রুু। তারা পদবী ব্যবহার করে মানুষের টাকা ও জীবন লুণ্ঠনকারী। তাদের বিনাশ জরুরি।
আগে নিজে ভালো হতে হবে , রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় আগে ভালো হতে হবে , দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দুর অবস্তার জন্য দায়ী রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি এ জন্য আগে নিজে ভালো হতে হবে । দেশকে ভালো বেসে এমন সুন্দর রিপোর্ট করার জন্য মানব জমিনকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
এমন আজিজ আওয়ামী লীগেরই তৈরী।
দেশের গর্বিত বাহিনির প্রধান এমন দস্যু-ডাকাত যদি হয় তাইলে বুঝেন বাংলাদেশ আজ কোথায়!
দায়িত্ব পেয়ে এদের কাজ কি সৃংখলা ঠিক করা নাকি জমি দখল করা? পুরো দেশটাকে তসনছ করে দিয়েছে।
দুদক কথাটি শুনলে খুব হাসি পায়। বেনজির , আজিজকে দেখলে মনে হয় এদের লালনের জন্যই হয়তো দুদকের জন্ম।
মাঝে মাঝে মনে হয়, মুক্তিযুদ্ধ কেন করেছিলেন ? এ প্রশ্নটার অত্যন্ত শক্ত জবাব শ্রদ্ধাভাজন জহির রায়হানের ’সময়ের প্রয়োজনে’ গল্পটাতে পাই । শুধু কান্না পায় এ দেশটার জন্য - ”অঘ্রানে তাের ভরা ক্ষেতে কী দেখেছি মধুর হাসি সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাস “
No comments....We deserve this...
২০০৭ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে ১৮ লক্ষ কোটি টাকা (প্রকাশিত)। এ গুলোর মালিক কারা ???
উনারা আরো একটু সুযোগ পেলে পুরো দেশকেই গিলে খেয়ে ফেলত.
জনাব বেনজীর, জনাব আজিজ একটা রোল মডেল। বেনজীর,আজিজ বিশ্বের মধ্যে কত নম্বর ধনী ব্যাক্তি ? অনুগ্রহ করে সেটা প্রকাশ করুন।
We need reports on officers who worked with or under Aziz Ahmed.
বেনজির আর আজিজের পাশাপাশি বর্তমান যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় পোস্টে আছে এবং ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করেন। ভয় পাওয়ার সময় শেষ, আপনার সাংবাদিক ভাইয়েরা এখন ভয় পেলে দেশটাকে একেবারে লুটেপুটে খেয়ে শেষ করে দিবে।
I'm tired......... to read such huge list of Land.
যে দেশে ন্যায় বিচার ও গণতন্ত্র নাই সে দেশে এ ধরনের শতশত হাজার হাজার আজিজ আর বেনজির তৈরি হয়েছে এবং হবে। জনগণ যতদিন সোচ্চার না হবে ততদিন পর্যন্ত এটা চলতে থাকবে।
একজন মানুষের কতো সম্পদ লাগে, লোভ এক ভয়ানক ব্যাধি।
এদের এত টাকার উৎস কোথায়। এদের বেতন কত? একজন মানুষের এক জীবনে কত লাগে?জনগনের টাকায় বিলাসী জীবন আর জনপগনের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এই রম আজিজ , বেনজির এখন মনে শত শত বাংলাদেশে। পুরো দেশটাই এরা খেয়ে ফেললো ।মানব জমিনের উচিত এই রকম আরও দুর্নীতি বাজদের তথ্য প্রকাশ করা।
মাছের মতো, আমাদের ও মাথায় পচন ধরেছে।
যে এলেকায় সরকারি চাকরিজীবি ও রাজনীতিবিদ ৫ জন পাবেন সেখানে ৩ জনের সম্পদ এমনই হবে তো উনার খোজ হচ্ছে বাকি তিনজনের খোজ হচ্ছে না।তো ভদ্রলোকের দোষ কি? তারপরও একজন ভাল মানুষ আছে এখনও।আল্লাহ নেক হায়াত দান করুন সম্পদ ভোগ করার জন্য।সংবাদপত্র না থাকলে ৫ জনের আরেক জনও চেস্টা করত এমন করার!
আর কিছু দিন খমতার মসনদে থাকলে আজিজ ও বেনজির গংয়েরা আস্ত দেশ গিলে ফেলতো!
এই সব খবর নিয়ে দেশের মানুষদের বাস্ত রাখাই মুল উদ্দেশ্য। চাল ডালের দাম বাড়া নিয়ে মানুষ মরুক।
এদের কারণেই ভূমিহীনদের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
বেনজীর,আজিজদের ভয়ে কি সমস্ত রাষ্ট্র ভীত ছিল? তা না হলে এসব কিভাবে সম্ভব!
আরও কিনুক সব দখল করে নিক দানব দৌত্য দেখটাকে গিলে ফেললেও এদের খুদা মিটবে না। আল্লাহ বিচার করবেন এই দুনিয়ার আদালতে বিচার না হলে
আমি চিন্তা করি গরীব মানুষদের মানসম্মানে লাগে এমন কিছু হলে আত্মহত্যা পথ বেছে নেয়! কিন্তু দেশে সবাই জানে না তার আশেপাশের লোকে জানে শুধু কিন্তু এদের লজ্জা শরম নাই এরা যেখেনে যাবে সবাইতো জানে এদের কর্মকাণ্ড সুতরাং কি করে এরা বেছে আছে?
এমন আজিজ কি আর নাই ?
ডিজিটাল থেকে স্মার্ট জমিদার
এত সম্পদ কি সাড়ে তিন হাত মাটির ভিতরে আটবে!!!!
এসবের কোন বিচার হয়তো হবে না, তবে ধন্যবাদ ও শুকরিয়া মানব জমিনকে জানাতেই হবে।
এসকে সিনহা, জেনারেল আজিজ ও বেনজির--- নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের অভিশাপের ফল ভোগ করছেন। এটা দুনিয়ার শাস্তি। আখেরাতে আরো বেশি, অনেক অনেক বেশি।।
এসব হচ্ছেটা কী !?! এসব শুনছিটা কী!?! ক্লান্তি আমায় ক্ষমা করো প্রভু .......................
বিশাল আমলনামা, যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত ।
আজিজের সম্পদের বিবরণ পড়তে পড়তে টায়ার্ড হয়ে পড়া ছেড়ে দিলাম।
এখন দুদকের উচিত আজিজ এবং বেনেজির-এর অধীনে যারা কাজ করেছে তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করা।
বাংলাদেশটাই উনার নামে লিখে নিতে পারতেন।আমাদের কপাল ভালো তা করেন নি।
absolute majority corrupts absolutely.
পুরো দেশটাই খেয়ে ফেললো। কি এক দুর্নিতীর মহোউৎসব!
You have just one life to live. How much land do you really need?
বাহ! চমৎকার উন্নয়ন।
সেনাবাহিনীর প্রধান পদে থেকে যদি এতএতো দুর্নীতি করার সুযোগ পায়। দেশ বিপদে পড়লে দেশকে রক্ষা বাদ দিয়ে দেশ প্রতিপক্ষের হাতে তুলে দেবে। হে আল্লাহ দেশকে রক্ষা করুন।
তিনি কি দেশে আছেন নাকী বেনজিরের পথ ধরেছেন?
Just wow
পুরা দেশই দেখতেছি দুই বাহিনীর প্রধান কিনে বা জবরদস্তি করে নিয়ে নিয়েছেন হে আল্লাহ তুমি হ্যাগো উপর ThaDa ফালাও আমিন
আজিজ প্রাইভেট লি:, বেনজির প্রাইভেট লি:,এস আলম প্রাইভেট লি: আবদুল হাই বাচ্চু প্রাইভেট লি: ইত্যাদি ইত্যাদি ডজন ডজন কোম্পানির চেয়ারম্যান একই পরিবারের সদস্যরা।ঐ চেয়ারম্যানের লাইসেন্স নিয়েই আজিজ বা বেনজির হতে হয়। অটোমেটিকভাবে দেশের মালিক হবার কারণে আজিজ বা বেনজিরদের কোম্পানির অটোমেটিক চেয়ারম্যান তিনি বা তার পরিবার। দেশে বা বিদেশে।
সকল অবৈধ দখলদারকে সরিয়ে আসল মালিকদেরকে তাদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন।