শেষের পাতা
বরগুনায় সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে ৯ জনের লাশ উদ্ধার
বরগুনা ও আমতলী প্রতিনিধি
২৩ জুন ২০২৪, রবিবার
আমতলী উপজেলায় একটি ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন ব্রিজ ভেঙে কনেপক্ষের অতিথিসহ একটি মাইক্রোবাস খালে পড়ে যায়। শনিবার দুপুর ২টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিহতরা হলেন- মাদারীপুর জেলার শিবচরের মুনী বেগম (৪০), তার ছোট মেয়ে তাহিয়া (৭), বড় মেয়ে তাসফিয়া (১১), একই এলাকার ফরিদা বেগম (৫৫), রাইতি (৩০), ফাতেমা আক্তার (৪০), রুবী বেগম (৪০), হলদিয়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের মেয়ে হৃদি (৫) ও তার মা জাকিয়া বেগম (৩০)। নিহত ৯ জনের মধ্যে ২জন শিশু রয়েছে। উদ্ধার কাজ চলমান রয়েছে। নিহত সকলেই কনেপক্ষের বলে জানা গেছে। আমতলী থানার ওসি কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, শনিবার দুপুর দুইটার দিকে হলদিয়া ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন ব্রিজ দিয়ে একটি মাইক্রোবাস ও অটোরিকশা পাড় হওয়ার সময় ব্রিজ ভেঙে খালে পড়ে যায়। এ সময় অটোরিকশার যাত্রীরা বের হয়ে আসলেও মাইক্রোবাসের যাত্রীরা বের হতে পারেননি। মাইক্রোবাসটিতে ১১ জন যাত্রী ছিলেন। নিহতদের স্বজনরা জানান, শনিবার দুপুরে কনের নানাবাড়ি মাদারীপুর থেকে আমতলী শহরে বরের বাড়িতে বৌ-ভাতের দাওয়াত খেতে আসে স্বজনরা। দুপুর ২টার দিকে হলদিয়া ও চাওড়া ইউনিয়নের সংযোগ ব্রিজের মাঝামাঝি আসলে ব্রিজটি ভেঙে মাইক্রোবাসটি যাত্রীসহ খালে পড়ে যায়। এসময় ব্রিজে থাকা একটি অটোরিকশা যাত্রীসহ খালে পড়ে যায়। অটোরিকশার যাত্রীরা উঠে আসলেও মাইক্রোবাসের যাত্রীরা উঠতে পারেনি। স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিস এসে ২ শিশু ও ৭ নারীকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ১৯ জনকে উদ্ধার করেছি। এরমধ্যে ১০ জন জীবিত আছে বাকি ৯ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে, উদ্ধার কাজ চলমান আছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, শুক্রবার আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে স্কুলশিক্ষক মনিরুল ইসলামের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। মনিরুলের শ্বশুরবাড়ি মাদারীপুরে। সেখান থেকে মাইক্রোবাসে করে অতিথিরা এসেছিলেন। শনিবার দুপুরে মাইক্রোবাস নিয়ে তারা ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। মাইক্রোবাসটির সঙ্গে ৬-৭ জন যাত্রী নিয়ে আরেকটি ইজিবাইক ছিল। দুটি গাড়ি সেতু পার হতে গিয়ে ভেঙে নিচে পড়ে যায়। ইজিবাইকের যাত্রীরা সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও মাইক্রোবাসের মধ্যে ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করতে পেরেছি। ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তারাও আমাদের অত্মীয়। সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে এর চাইতে আমাদেরও মইর্যা যাওয়া ভালো ছিল।’ হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান (মিন্টু মল্লিক) বলেন, গাড়িটি ঝুঁঁকিপূর্ণ সেতু পার হতে গিয়ে ভেঙে খালে পড়ে ডুবে যায়। ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় প্রশাসন এবং বাসিন্দারা ডুবে যাওয়া গাড়ি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কাজ করছেন। এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। নিখোঁজদের উদ্ধার করতে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা কাজ করছেন।