অনলাইন
মোদি-হাসিনা বৈঠক
সম্পর্ক জোরদার করতে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা সই
মানবজমিন ডিজিটাল
(১০ মাস আগে) ২২ জুন ২০২৪, শনিবার, ৫:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৩ পূর্বাহ্ন

বাণিজ্য ও সংযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । দুই সরকার প্রধান বেশ কয়েকটি নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সমুদ্র সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতিতে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য একাধিক সমঝোতা স্মারক সই করেছেন। স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলির মধ্যে একটি হলো ডিজিটাল ক্ষেত্রে শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন এবং আরেকটি ‘সবুজ অংশীদারিত্ব’ । পাশাপাশি রেল যোগাযোগের বিষয়েও একটি সমঝোতা সই হয়েছে। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'আজ আমরা নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করে একটি ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছি। সবুজ অংশীদারিত্ব, ডিজিটাল অংশীদারিত্ব, সুনীল অর্থনীতি এবং মহাকাশের মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে যে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে তা থেকে উভয় দেশের তরুণ প্রজন্ম উপকৃত হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতকে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিবেশী এবং বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেন, “ভারত আমাদের প্রধান প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অনেক মূল্য দেয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে এই সম্পর্কের সূত্রপাত। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত সরকার ও জনগণের অবদানকে আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। শেখ হাসিনা ভারতের সাহসী বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন, যাঁরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। মোদির সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। যেখানে আমরা নিরাপত্তা, বাণিজ্য, সংযোগ, অভিন্ন নদী থেকে পানি বণ্টন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতাসহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছি।
লোকসভা নির্বাচনের শেষে ভারতে নতুন সরকার গঠনের পর এটিই প্রথম কোনো বিদেশি রাষ্ট্র নেতার দ্বিপাক্ষিক রাষ্ট্রীয় সফর। শেখ হাসিনা দুই দিনের ভারত সফরে এসেছেন। ২১ জুন তিনি ভারতে পা রাখেন । এক্স-এর একটি পোস্টে, ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন -'প্রধানমন্ত্রী তাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আগে হায়দ্রাবাদ হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। ২০১৯ সাল থেকে শুরু করে দুই নেতা একে অপরের সাথে দশবার দেখা করেছেন, যা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
বৈঠকের আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রাজঘাট পরিদর্শন করেন এবং মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি বই এবং মহাত্মা গান্ধীর আবক্ষ মূর্তি উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে একটি আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনাও গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনের প্রাঙ্গণে উভয় দেশের মন্ত্রী ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে একপ্রস্থ সাক্ষাৎ করেন দুই নেতা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা, প্রতি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং এবং কীর্তি বর্ধন সিং উপস্থিত ছিলেন।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বড় ধরনের উন্নতি: ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের অফিসিয়াল মুখপাত্র, রণধীর জয়সওয়াল একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন-' বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে এসেছেন। বাংলাদেশ ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং বিশ্বস্ত প্রতিবেশী। এই সফর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করবে। দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বকে জোরদার করবে। 'বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর গতকাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং বৈঠকের পরে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছিলেন যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই রাষ্ট্রীয় সফর দুই দেশের মধ্যে "ঘনিষ্ঠ এবং স্থায়ী সম্পর্ক" তুলে ধরে। নবনিযুক্ত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সফরের সময়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখরের সাথেও সাক্ষাত করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আন্তর্জাতিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন যারা ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
সূত্র: দ্য হিন্দু