ভারত
পশ্চিমবঙ্গে রেমালের দাপটে প্রাণ হারালেন ৬ জন
সেবন্তী ভট্টাচার্য , কলকাতা থেকে
(৬ মাস আগে) ২৭ মে ২০২৪, সোমবার, ৫:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১২ অপরাহ্ন
কলকাতা, নামখানা, মহেশতলা, মেমারি, পানিহাটি মিলিয়ে এই নিয়ে রাজ্যে রেমালের দাপটে প্রাণ হারালেন মোট ৬ জন। ঘূর্ণিঝড় রেমালের জেরে নামখানায় মৃত্যু হলো এক বৃদ্ধার। জানা গেছে, ঝড়ের দাপটে ওই বৃদ্ধার বাড়ির চালের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগডাঙা এলাকার বাসিন্দা রেণুকা মণ্ডল। দক্ষিণ ২৪ পরগণার ওই অঞ্চলে সবথেকে বেশি ছিল ঘূর্ণিঝড়ের দাপট। প্রায় ১০০-১২০ কিলোমিটার বেগে বইছিল ঝোড়ো হাওয়া। সেই সময় ওই অঞ্চলে বাড়িতে বৃদ্ধাকে রাখা হলো কেন তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। ঝড়ের আগে মাইকিং করে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও বৃদ্ধা যাননি বলেই জানা গেছে। জানা যাচ্ছে, ঝড়ের সময় তিনি নিজের বাড়িতে বসেই খাওয়াদাওয়া করছিলেন। হঠাৎই চালের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় তার।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের নুঙ্গি মেটেপাড়ায় বাড়িতেই তড়িদাহত হয়ে প্রাণ হারান এক তাপসী দাস। তাকে প্রতিবেশীরা মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় মহেশতলা থানায়। পুলিশ ও কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করা হয়। বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালের পর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
রেমালের ল্যান্ডফলের পর ঝড়, বৃষ্টিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে মৃত্যু হলো বাবা-ছেলের। জানা গেছে, মেমারির কলানবগ্রাম এলাকায় থাকতেন তারা। ঝড়ে বাড়ির পাশে ভেঙে পড়েছিল কলাগাছ। সেই গাছেই পেঁচিয়ে ছিল বিদ্যুতের তার। কলাগাছ কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বাবা। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন ছেলে। পানিহাটিতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে আগুন লেগে যায় দুর্গাপুর স্টেশন বাজারের একটি কাপড়ের দোকানে। বৃষ্টি ভেজা সকালে ওই দোকান থেকে গল গল করে কালো ধোঁয়া বের হতে থাকে। ওই দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাজারে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। তারা দমকলে খবর দেন। কিন্তু দমকল আসতে দেরি করায় তারাই পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাতে থাকেন। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দুর্গাপুরের দমকলের একটি ইঞ্জিন। দ্রুত আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করা হয়।
রাজ্য জুড়ে ১৫০০-এরও বেশি ক্যাম্প খোলা হয়েছে । যার মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই রয়েছে ১০০০ ক্যাম্প। ঝড়ের জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একাধিক জেটির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত মেরামত করতে বলা হয়েছে পূর্ত দফতরকে। রেমালে রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতি সব থেকে বেশি সুন্দরবন ব্লকে। এখনও পর্য্ন্ত রাজ্যজুড়ে ১২০০-এর বেশি বিদ্যুৎ খুঁটি পড়ে গিয়েছে। তার মধ্যে ৩০০-এর বেশি ইলেকট্রিক পোল শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেই। সুন্দরবন ব্লকে ৩০০-রও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নবান্নের তরফে জরুরি ভিত্তিতে চলছে সমীক্ষা। সুন্দরবন ব্লকের একাধিক জায়গায় হাওয়ার গতিবেগ বেশি থাকায় উদ্ধারকাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।