ঢাকা, ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল

কূটনৈতিক রিপোর্টার
২৭ মে ২০২৪, সোমবার
mzamin

যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চ পর্যায়ের বিজনেস ডেলিগেশন বাংলাদেশ সফর করছে। ৩০ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে এডভোকেসি করা ‘বাংলাদেশ-ইউএস বিজনেস কাউন্সিল’ এর প্রেসিডেন্ট অতুল কেশাপ। তার সঙ্গে রয়েছেন কাউন্সিলের উচ্চ পর্যায়ের নির্বাহীরা। যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের উচ্চ নির্বাহী প্রতিনিধি দল  আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। চার দিনের সফরে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে তাদের বৈঠক রয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সম্মানে একাধিক ডিনার হোস্ট করা হচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশের বিজনেস ডেলিগেশনের সঙ্গে তাদের আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ হবে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিজনেস কাউন্সিল গঠিত হয়। সেই থেকে মার্কিন উদ্যোক্তাদের কাছে এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা তুলে ধরতে কাউন্সিল কাজ করছে। ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের অধীন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের (ইউএসবিবিসি) বর্তমান প্রেসিডেন্ট অতুল কেশাপ গত বছরের এপ্রিলে দায়িত্ব নেয়ার পর সেপ্টেম্বরে ঢাকায় এসেছিলেন।  তবে তার আগে বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি বহুবার বাংলাদেশ সফর করেছেন। গত বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ওয়াশিংটনে স্বাগত জানান কেশাপ। সেখানে ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সহযোগিতা’ শীর্ষক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও স্মার্ট প্রবৃদ্ধি নিয়ে একটি আলোচনা হয়। ইউএস চেম্বারের রেকর্ড মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল উদ্বোধন করেন। এটি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক করিডর এবং যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্সের আন্তর্জাতিক শাখার অধীন দ্রুত বর্ধনশীল অন্যতম দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক কাউন্সিল। ইউএসবিবিসি’র কার্যক্রম বিদ্যুৎ, জ্বালানি, ডিজিটাল অর্থনীতি, আর্থিক পরিষেবা ও ডিজিটাল লেনদেন, বীমা, স্বাস্থ্যসেবা, মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা, রাইড শেয়ারিং, খাদ্য ও পানীয়, জল এবং টেকসই বিভিন্ন খাতে বিস্তৃত। অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন কূটনীতিক অতুল কেশাপ ২৮ বছর স্টেট ডিপার্টমেন্টে কাজ করছেন। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে প্রিন্সিপাল ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এবং ভারতে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারার কারণে সৃষ্ট বিশাল সুযোগের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংযোগ করতে সহায়তা করছেন। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে এডভোকেসি করা এবং পক্ষগুলোর বাণিজ্যে যুক্ত হওয়ার উপর জোর দেয়া বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিজনেস কাউন্সিল এবং অতুল কেশাপ নিজে উভয় দেশের পারস্পরিকভাবে লাভজনক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে উভয় দেশের সরকারকে সম্পৃক্ত করা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন। ঢাকা সফররত মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দল জ্বালানি, বিদ্যুৎ, ইক্যুইটি, এভিয়েশন, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, মেডিকেয়ার এবং অন্যান্য প্রধান খাতগুলো নিয়ে আলোচনা করছে। উভয়পক্ষ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের দীর্ঘমেয়াদি সুযোগ-সুবিধা এবং এসব খাতের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য মধ্যমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়েও আলোচনা করছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের সম্ভাবনা। একটি শক্তিশালী উপ-আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধির গতিপথ গড়ে তোলাসহ বঙ্গোপসাগরের সুনীল অর্থনীতির সুবিধা কাজে লাগানোর বিষয় নিয়েও মার্কিন প্রতিনিধি চারদিনের দলের সফরে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব এবং বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগের আহ্বান বরাবরই জানানো হয়। এবারের সফরে সুনির্দিষ্টভাবে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ চায় মার্কিন ব্যবসায়ী সম্প্রদায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা ও ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার, আইসিটি, সামুদ্রিক সম্পদ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম ইত্যাদিসহ গতিশীল ও সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে আরও বেশি বিনিয়োগ করুক। তাদের জন্য একটি নিবেদিত ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ রাখার প্রস্তাব আগেই দেয়া হয়েছে। সফর সংশ্লিস্টরা জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং ২৯টি হাই-টেক পার্ক রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে উদার বিনিয়োগ নীতি রয়েছে। দুর্নীতি এবং অর্থ পাচার নিয়ে সরকারের ভেতরে অস্বস্তি থাকলেও বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা, ট্যাক্স হলিডে, রয়্যালটি রেমিট্যান্স, বাধাহীন প্রস্থাননীতি, লভ্যাংশ ও মূলধন সম্পূর্ণ প্রত্যাবর্তন সুবিধা রয়েছে বাংলাদেশে, যার সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেন মার্কিন ব্যবসায়ীরা। 

পাঠকের মতামত

Public want justice, Democracy,Sanction for corruption.

Monir
২৭ মে ২০২৪, সোমবার, ৫:৪৩ অপরাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status