ঢাকা, ২২ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতের প্রবৃদ্ধি তলানিতে

মো. আল-আমিন
২৩ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার
mzamin

দেশের জিডিপিতে গ্যাস ও বিদ্যুতের অবদান সবচেয়ে কম। চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই উপখাতগুলোর প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ধারায় যাবে বলে ধারণা দিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর শেষে জ্বালানি সরবরাহের এই উপখাতে প্রবৃদ্ধি নেমে ঋণাত্মক শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশে দাঁড়াবে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে শিল্প খাতে। ৪ বছরে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি কমে অর্ধেকে নেমেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় দেশের সার্বিক অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর প্রভাব পড়বে।

বিবিএসের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে দেশের জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন্ন। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি আরও কমে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ হয়। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে এই খাতের প্রবৃদ্ধি কমে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশে নামবে বলে প্রাক্কলন করেছে বিবিএস।

এদিকে চলতি অর্থবছরে শিল্পের উপখাত বিদ্যুৎ ও গ্যাসের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ধারায় যাবে বলে ধারণা দিয়েছে বিবিএস। সংস্থাটির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিদ্যুৎ উপখাতে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ০ দশমিক ২১ শতাংশ, যা এর আগের অর্থবছরে ছিল ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। সে হিসাবে এই উপখাতের প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়ে ঋণাত্মক ধারায় পৌঁছেছে।  এ ছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদ্যুতে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। 

অন্যদিকে গ্যাসের প্রবৃদ্ধি গত তিন বছর ধরে নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। চলতি অর্থবছরে গ্যাসের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ০ দশমিক ৯৩ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করেছে বিবিএস। আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপিতে এই খাতের অবদান আরও বেশি নেতিবাচক ছিল। এসময় প্রবৃদ্ধির হার ঋণাত্মক ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ হয়। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্যাস খাতে ঋণাত্মক দশমিক ৬১ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ছিল।

গ্যাস ও পেট্রোলিয়ম পণ্যের উত্তোলনেও নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির তথ্য দিয়েছে বিবিএস। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, গ্যাস ও পেট্রোলিয়ম পণ্য উত্তোলনে বিগত দুটি অর্থবছরের মতো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এই খাতে ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর আগের অর্থবছর নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। এদিকে দেশের শিল্পের উৎপাদনও গত চার বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে। চলতি অর্থবছরে এ খাতের প্রবৃদ্ধি কমে ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ হয়েছে, যেটি আগের বছরে ছিল ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ। 

গ্যাস, বিদ্যুৎ, ম্যানুফ্যাকচারিং ও শিল্পের প্রবৃদ্ধি কমার ফলে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব পড়তে পারেÑ এমন প্রশ্নে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি অনেক কম। এই খাতের প্রভাব মোট প্রবৃদ্ধির ওপরেও পড়েছে। শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি কমলে শুধু দেশের অর্থনীতিই না, কর্মসংস্থানের ওপরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। প্রবৃদ্ধি কম হওয়ার বড় কারণ হিসেবে সংকুচিত আমদানি নীতি বলে মনে করেন তিনি। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ এখন খুব বেশি নেই। মূল অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করাটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ। যদি মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা যায়, এক্সচেঞ্জ রেটে স্থিতিশীলতা আনা যায় তাহলে প্রবৃদ্ধি আবারো ঘুরে দাঁড়াবে।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status