খেলা
বাংলাদেশের হয়ে খেলার প্রক্রিয়া শুরু
হামজার জন্ম নিবন্ধন গেল ইংল্যান্ডে
স্পোর্টস ডেস্ক
১৮ মে ২০২৪, শনিবার
বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়ার পরপরই জন্ম নিবন্ধন পাঠানো হলো হামজা চৌধুরীর জন্য। বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার জন্য লাগবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট। ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসে পাসপোর্ট বানাতে গিয়ে জন্মনিবন্ধন না থাকায় ফেরত আসতে হয় তাকে। গুঞ্জনটা অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। ইংলিশ ক্লাব লিস্টার সিটিতে খেলা হামজা চৌধুরী বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলবেন। বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) হামজার সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জন্মনিবন্ধনের কাগজও চলে গেছে ইংল্যান্ডে। লাল-সবুজের জার্সিতে খেলতে হলে সবার আগে পাসপোর্ট করতে হবে। তিন দিন আগে লন্ডনে বাংলাদেশি হাইকমিশনে গিয়েও পাসপোর্ট করতে না পারায় অসন্তুষ্ট হন হামজা ও তার বাংলাদেশি মা রাফিয়া। হামজার পিতা গ্রেনাডিয়ান। পাসপোর্ট না করেই নটিংহামে চলে যান তারা। পাসপোর্ট করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়া হামজার পুরো বিষয়টি দেখভাল করছে বাফুফে। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলতে হলে অন্যতম শর্তই হলো পাসপোর্ট।
আর প্রবাসী ও বংশোদ্ভূত হলে আরও কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার (ফিফা) কাছে আবেদন করতে হয়। তবে এই মুহূর্তে পাসপোর্ট করাটাই বেশি জরুরি। পাসপোর্ট করতে গিয়ে হামজার বিড়ম্বনায় পড়ার খবরটি অবগত আছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে এএফসি কংগ্রেস থেকে ইমরান বলেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে ফুটবল খেলতে হামজা ও তার পরিবার বেশ ইতিবাচক। আমরাও চাই হামজার মতো বড় ফুটবলার আমাদের দেশের হয়ে খেলুক। কিছুদিন আগে জন্মনিবন্ধন করতে তার পরিবারকে সহযোগিতা করেছি। সামনের সব প্রক্রিয়ায়ও বাফুফে তার পাশে থাকবে।’
হামজার বাংলাদেশি পাসপোর্ট হলে বাফুফে ইংল্যান্ড ফুটবল এসোসিয়েশনের (এফএ) কাছে তার ছাড়পত্র চাইবে। ইংল্যান্ড যুবদলের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। এফএ ছাড়পত্র দিলে বাফুফে বিশ্ব ফুটবল সংস্থার (ফিফা) কাছে আবেদন করবে। ফিফার প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি ছাড়পত্র দিলেই লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াতে পারবেন ২৬ বছর বয়সী এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) হামজার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে। হামজা এর আগে বলেন, ‘বাফুফের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, আমার এজেন্টের সঙ্গেও তাদের কথাবার্তা ভালোই এগিয়েছে। আরও কথা হবে। আমাদের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, সেগুলো খুবই ইতিবাচক।’ ফিফা’র আইন অনুযায়ী কোনো দেশের হয়ে খেলতে চাইলে সে দেশের পাসপোর্ট থাকতে হবে। কিন্তু পাসপোর্ট করতে গিয়ে জন্মনিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় বিড়ম্বনার শিকার হন হামজা। এরপর বাফুফের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ থেকে জন্মনিবন্ধনের কাগজ পাঠানো হয় ইংল্যান্ডে।
ইংলিশ ক্লাব বার্টিন অ্যালবিয়ন, ওয়াটফোর্ড ও ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে খেলেছেন হামজা চৌধুরী। বর্তমানে তিনি খেলছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন লেস্টার সিটি। এই ক্লাবের অধিনায়কত্ব করেছেন হামজা, জিতেছেন এফএ কাপও। খেলেছেন ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট ইউরোপা লীগ এবং কনফারেন্স লীগও। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসীদের দেশের জাতীয় দলে খেলার ঘটনা নতুন নয়। প্রবাসী ফুটবলার জামাল ভূঁইয়া, তারেক কাজীরা বাংলাদেশ দলের নিয়মিত মুখ। তবে হামজাকে নিয়ে বাড়তি আগ্রহ বা আলোচনার কারণ ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে খেলছেন তিনি।
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ২০২১ এফএ কাপের ফাইনালে লেস্টার সিটির জয়ের পর ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়েন হামজা চৌধুরী। হামজার জন্ম ইংল্যান্ডে হলেও বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করার সুবাদে বাংলাদেশ থেকে কখনোই মানসিকভাবে দূরে থাকেননি। হবিগঞ্জের বাহুবল থানার স্নানঘাট গ্রামে বারবার এসেছেন। হামজা যদি দেশের হয়ে মাঠে নামেন তাহলে বাংলাদেশ দল আরো শক্তিশালী হবে সন্দেহ নেই।
পাঠকের মতামত
সুলায়মা দিয়াবাতের বিষয়েও আশা করি বাফুফে উদ্যোগ নিবে