ভারত
তৃতীয় দফার ভোটে অশান্ত মুর্শিদাবাদ, বিক্ষিপ্ত গোলোযোগ জঙ্গিপুর এবং মালদহের দুই কেন্দ্রে
সেবন্তী ভট্টাচার্য্য , কলকাতা থেকে
(১১ মাস আগে) ৮ মে ২০২৪, বুধবার, ১:৩৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:০৯ পূর্বাহ্ন

পশ্চিমবঙ্গের চারটি লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হয়েছে মঙ্গলবার। বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে মুর্শিদাবাদে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৭৬.৪৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ এবং জঙ্গিপুরে ভোটদানের হার যথাক্রমে ৭৩.৩ শতাংশ, ৭৩.৬৮ শতাংশ এবং ৭২.১৩ শতাংশ।
মুর্শিদাবাদে ভোট শেষে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন ভোট কর্মীরা। অভিযোগ- ভোটপর্ব শেষ হওয়ার পর ইভিএম নিয়ে বহরমপুর স্ট্রং রুমে জমা দিতে যাওয়ার সময় তৃণমূল কর্মীদের দ্বারা বাধা প্রাপ্ত হন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এবং ভোটকর্মীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পাহাড়পুর-পালপাড়া এলাকায়। অভিযোগ- পথের মধ্যে বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী প্রিজাইডিং অফিসার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরকে পায়ে হেঁটে তাদের জন্য নির্দিষ্ট বাসের দিকে যেতে বাধা দেন। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা অভিযোগ তোলেন- বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভোট কর্মীরা বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। তৃণমূল কর্মীদের আরও অভিযোগ -ভোট কর্মীদেরকে ইভিএম এবং অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে যেতে বারণ করলে তাদের সুরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা গুলি করার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন। যদিও একটি বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার জানিয়েছেন- তাদের জন্য একটি বড় বাস প্রশাসনের তরফে বরাদ্দ করা হয়েছিল। পাশাপাশি ডোমকলে কংগ্রেস সমর্থকের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। কয়েকটি বুথে শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে বাম-কংগ্রেস এজেন্ট এবং ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মুর্শিদাবাদের কোনও কোনও বুথে রাজ্য পুলিশের উপস্থিতির অভিযোগও উঠে এসেছিল। বিজেপির অভিযোগ, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর যখন সমস্ত ইভিএম ফিল করার কাজ চলছিল সেই সময়েই অশোক কর্মকার নামে বিজেপির এক এজেন্টকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ঘটনার প্রতিবাদে রঘুনাথগঞ্জ লালগোলা রাজ্য সড়কে অবরোধ শুরু করেন বিজেপির কর্মী, সমর্থকরা। অবরোধের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি প্রার্থীও। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে বচসা থেকে হাতাহাতি বেঁধে যায়।
অন্যদিকে ভোটের ডিউটিতে এসে মালদহে আক্রান্ত হলেন শিলিগুড়ি থানার আইসি পার্থ ঘোষ। জখম হয়েছে এক নারী সাব ইন্সপেক্টরও।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে মালদহের হবিবপুর ব্লকের মঙ্গলপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধাকান্তপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২২ নম্বর বুথে। পুলিশ সূত্রের খবর, গ্রামবাসীদের ছোড়া ইটের আঘাতে মাথা ফেটেছে আইসির। নারী পুলিশ কর্মীরও মাথায় ও হাতে চোট লেগেছে। এছাড়াও অল্প বিস্তর জখম হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ কর্মী। ওই বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল কি না, থাকলে তারা কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।
ওই পুলিশ কর্তা জানান, অনুন্নয়নের প্রতিবাদে রাস্তা, ব্রিজের দাবিতে নাকি অনেকদিন ধরেই ভোট বয়কটের কথা জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।
অন্যদিকে উত্তপ্ত ছিল মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রও। এই লোকসভার অধীনে ইংরেজবাজার পুর এলাকায় বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। শ্রীরূপার অভিযোগ, তৃণমূলের প্রবীণ নেতা তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী কাকলি ভোটকেন্দ্রের সামনে জমায়েত করে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। এছাড়াও একাধিক বুথে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন শ্রীরূপা।