ঢাকা, ৪ মে ২০২৪, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

এসি’র বাজার রমরমা

নাইম হাসান
২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার
mzamin

তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশে। প্রচণ্ড গরমে মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অসহনীয় তাপমাত্রায় স্বস্তি পেতে অনেকেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) কিনতে বৈদ্যুতিক পণ্যের শোরুম বা বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে 
ভিড় করছেন। ফলে এসি’র বাজারে রমরমা অবস্থা। মূলত অতিরিক্ত গরম থেকে স্বস্তি পেতে এয়ারকন্ডিশনারের চাপ বেড়েছে বাজারে। তবে চাপ বেশি পড়ায় বাজারে এখন চাহিদা অনুযায়ী এসি নেই বললেই চলে। সরজমিন রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় অবস্থিত ট্রান্সকম, বাটারফ্লাই, র‌্যাংগ্‌স, সিঙ্গার বাংলাদেশ, মিনিস্টার, এলজি ও স্যামসাংসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শো-রুমে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি বিভিন্ন মডেলের ডামি এসি সাজানো। বিক্রেতারা বলছেন, গরমের তীব্রতা বাড়ায় এসিসহ অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় সব পণ্যেরই স্টক শেষ।

বিজ্ঞাপন
যে পণ্যগুলো স্টকে রয়েছে সেগুলো দেশের বাইরের পণ্য হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি, এজন্য এখনো বিক্রি হয়নি। কোম্পানি থেকে এসব শো-রুমের বিক্রেতাদের বলা হয়েছে, উৎপাদন সম্পন্ন হলে স্থানীয় দোকানে এসি সাপ্লাই দেয়া হবে। তবে বাজারে এসির চাপ এতই যে সেখানেও ন্যূনতম এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। 
মিনিস্টারের শো-রুমে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাদের দোকানে বিক্রি করার মতো কোনো এসি নেই। গত দুইদিনে তাদের ৪০টি এসি বিক্রি হয়েছে। এই দোকানের সেলস মার্কেটিং অফিসার শাওন বলেন, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে তার সমান বিক্রি হয়েছে গত দুইদিনে। আমাদের স্টকে যা ছিল সব শেষ। 

গত দুইদিনে ২৫টি এসি সেল হয়েছে উল্লেখ করে শেওড়াপাড়ায় অবস্থিত সিঙ্গার বাংলাদেশের শো-রুম কাম সেল্‌স সেন্টারের ম্যানেজার একেএম ফজলুল হক বলেন, কোম্পানির স্টকেই পণ্য কম ছিল। এই গরমে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২টা করে এয়ারকন্ডিশনার সেল হয়েছে। আমাদের সব পণ্য চীন থেকে আসে। এই দুইদিনে যা স্টকে ছিল, সব সেল হয়ে গেছে। কোম্পানি দিতে পারছে না। তারা বলছে, স্টকে নাই, এলসির সমস্যা, মাল আসছে না। 

বাটারফ্লাই ব্র্যান্ডের নিজস্ব পণ্য ইকো প্লাসের এসি বিক্রি করে তারা। এটি বাদেও তাদের শো-রুমে এলজি, হাইয়ার এর পণ্য রয়েছে। শেওড়াপাড়ায় অবস্থিত এই ব্র্যান্ডের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আজমীর রহমান অভি জানান, এই দুইদিনে তাদের এই দোকানে ৬০টি এসি বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে ২০টার মতো সেল দিয়েছিলাম। এই দুইদিনে তার তিনগুণ এসি সেল হয়েছে। আমাদের টেলিভিশন ও ফ্রিজ থাকলেও গরমের এই সময়ে এসিটাই মূল ফোকাস। 

চীনের তৈরি গ্রি ব্র্যান্ডের এসির বাজারে অনেক চাহিদা। গত ৩ দিনে তারা ৭৫টির বেশি এসি বিক্রি করেছে। শেওড়াপাড়ায় অবস্থিত এই দোকানের সেলসম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের ঈদের আগে থেকেই সেল মোটামুটি শুরু হয়েছে। স্টকে আমাদের পণ্য একদমই নাই বললেই চলে। কাস্টমার এসে এসি না পেয়ে ঘুরে যাচ্ছেন। এতই চাপ পড়ছে যে কেউ এসি কিনলে তা দুইদিন পরে সেট-আপ করতে হচ্ছে। গতকাল এক গাড়ি মাল নেমেছে, সব শেষ। গ্রি’র এসি বেশি বিক্রি হওয়ার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেড় টনের ইনভার্টার এসি আমরা ৭০ হাজারে দিতে পারছি। এক টনের ইনভার্টার এসির মূল্য ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকা। 

শেওড়াপাড়ায় অবস্থিত র‌্যাংগস ইমার্ট এর শো-রুমে ৫টি ব্র্যান্ডের এসি রয়েছে। তার মধ্যে প্যানাসোনিকের সব ধরনের এসি শেষ হয়ে গেছে। এলজি, তোশিনের এক টনের সকল এসি শেষ। স্যামসাং এর এক টনের কিছু এসি এখনো আছে শো-রুমটিতে। হাইসেন্স এর দেড় টন পণ্যেরও শর্টেজ রয়েছে। মিরপুর জোনের স্যামসাং এর সেলস এক্সিকিউটিভ সাইমন বলেন, দোকানে যা সাজানো রয়েছে, সবগুলোই ডামি মডেলের। আমাদের ২ থেকে ৩টা প্রোডাক্ট পাচ্ছি না। পরবর্তী পণ্য কবে আসবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নাই। বলা চলে পরবর্তী মাসেও পেতে পারি। প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০টা করে এসি বিক্রি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা সেল করছি, পরবর্তী দুইদিনে তাদের বাসায় লাগিয়ে দেবো, এই শর্তে সেল দিচ্ছি। আমাদের এই বছরে তেমন কোনো সেল ছিল না। 
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status