শেষের পাতা
এবার সমুদ্র চুরি
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১ পাইপ কাটার ৪৬ লাখ ৫০ হাজার, হাতুড়ি ৯১০০০ টাকা
জালাল রুমি, চট্টগ্রাম থেকে
৪ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবারমহেশখালীর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সাধারণ কিছু ‘হ্যান্ড টুলস’ আমদানিতে বড় ধরনের অনিয়মের বিষয় উঠে এসেছে। এতে ছোট ছোট পাইপ কাটার, হাতুড়ি, মেটালসহ মোট ১৯টি সাধারণ যন্ত্রপাতি কিনতে হাজার গুণ পর্যন্ত বেশি মূল্য ধরা হয়েছে। এরমধ্যে একটি পাইপ কাটারের দাম ধরা হয়েছে ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যেটার সাধারণ বাজারমূল্য সর্বসাকুল্যে ৭ হাজার টাকা। একটি হাতুড়ির দাম ধরা হয়েছে ৯১ হাজার টাকা। যেটার বাজার মূল্য ৮৩৪ টাকা। জানা যায়, গত ৯ই জানুয়ারি রাষ্ট্রায়ত্ত কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)-এর অনূকূলে জার্মানি থেকে ৩৪৪.৫ কিলোগ্রাম ওজনের একটি চালান আসে। এই চালানের আমদানিমূল্য মোট ২.৭৫ কোটি টাকা। আর ১১ই জানুয়ারি যাচাইয়ের সময় কাস্টমস্ কর্মকর্তারা এটি দেখেই চমকে উঠেন। সেখানে দেখা যায়, দুটি পাইপ কাটারের দাম দেখানো হয়েছে ৯২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। আর যে দুইটির সাধারণ বাজারমূল্য ১৪ হাজার টাকা। দুটি হাতুড়ির দাম দেখানো হয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার টাকা। যার সাধারণ বাজারমূল্য ১৬৮৪ টাকা। পরে কাস্টমস কর্মকর্তারা চালানটি আটকে দেন।
সূত্র জানায়, আমদানিকৃত এই ১৯টি আইটেমের মধ্যে বাকি ১৫টি আইটেমেরও এভাবে দাম দেখানো হয়। চালানটির অন্যান্য আইটেমগুলো হলো সেট মেকানিক্যাল পায়ার, মাঙ্কি পায়ার, টুলবক্স, স্ক্রু-ড্রাইভার, রেঞ্জ, চিসেল অ্যান্ড স্পান্সার, স্প্যানার, কার ফিটার সেট। এসব টুলের সরবরাহকারী জার্মানির প্রতিষ্ঠান হলেও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হলো জাপানের কেএস টুলস ওয়ার্কডেজ। এদিকে এনবিআরের নথিতে এসব পণ্যের আমদানি ব্যয় তাদের সার্ভারের (আমদানি-রপ্তানি ডেটাবেস) রেকর্ড মূল্যের চেয়ে ৫ থেকে ১৮ হাজার ৫৪৫ গুণ বেশি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কায়িক পরীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাইপ কাটার টুলের দাম ডেটাবেজ মূল্যের চেয়ে ১৮ হাজার ৫৪৫ গুণ, পাইপ রেঞ্জ ১ হাজার ৫৩ গুণ, মাঙ্কি প্লায়ারের দাম ৯১২ গুণ, স্ক্রু ড্রাইভারের দাম ৮৩৩ গুণ এবং হাতুড়ির দাম ১১২ গুণ বেশি। অস্বাভাবিক মূল্যের এই চালানটি আটকে দেয়ার পর চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সিপিজিসিবিএল ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে চিঠি দেয়। সেই চিঠিতে লেখা হয়, ‘কায়িক পরীক্ষায় প্রাপ্ত পণ্যের ছবি দেখে স্পষ্ট বোঝা যায়, পণ্যগুলো সাধারণ হ্যান্ড টুলস, যা স্বল্পমূল্যের পণ্য হওয়াই যুক্তিযুক্ত। অর্থাৎ আমদানি পণ্যের ঘোষিত মূল্য পণ্যের রেফারেন্স মূল্য অপেক্ষা অস্বাভাবিক বেশি।
কাস্টমস কমিশনার ফায়জুর রহমানের স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে আরও বলা হয়, আমদানি পণ্য চালানটি অস্বাভাবিক উচ্চ ঘোষিত মূল্যে শুল্কায়ন করা ঝুঁকিপূর্ণ হবে এবং মূল্যের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মন্ত্রণালয় থেকে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন বলে দপ্তর মনে করে। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও পণ্যমূল্যের বিষয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদানের আহ্বান জানানো হয়। তবে জবাবে এই তিন পক্ষের পক্ষ থেকে উল্লিখিত মূল্য স্বাভাবিক আছে জানিয়ে শুল্কায়নের অনুরোধ জানানোর কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শুল্কায়ন করেন। সূত্র জানায়, অস্বাভাবিক আমদানি মূল্য দেখিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছে। আর বাণিজ্যিকভাবে এসব আইটেম প্রচুর আমদানি হয়। এ কারণে বাজারে এসব পণ্য সহজলভ্য। চট্টগ্রাম কাস্টমসের আমদানি ডেটাবেজে এ ধরনের পণ্য প্রচুর পরিমাণে আমদানি ও শুল্কায়নের তথ্য রয়েছে।
এরমধ্যে অন্যান্য আমদানিকারকরা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গত ৩ মাসে এসব পণ্যের অন্তত শতাধিক চালান খালাস করেছেন। সেসব পণ্যের আমদানি মূল্য সিপিজিসিবিএল-এর আমদানি পণ্যের চেয়ে কয়েক শ’ গুণ কম। তবে মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পের পরিচালক ও সিপিজিসিবিএল-এর কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই চালানের প্রোডাক্টগুলো বিশেষভাবে বিশেষ উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তাই বাজারের পণ্যের সঙ্গে এসব পণ্য মেলানো যাবে না। তিনি বলেন ‘সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঠিকাদারের চুক্তি অনুযায়ী চালানটি এসেছে। একটি চালানে হাজার হাজার আইটেম থাকতে পারে। পুরো চালানের জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে যে চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছে, এর চেয়ে এক টাকাও বেশি দেয়ার বা ব্যয় করার কোনো সুযোগ নেই। আলোচ্য চালানটি আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইটেমের মূল্য ঘোষণায় তারতম্য বা বাজারমূল্যের চেয়ে কমবেশি হতে পারে। প্রকৃত অর্থে ওই চালানে সরকার চুক্তিমূল্যের চেয়ে এক টাকাও বেশি পরিশোধ করেনি বা করার সুযোগ নেই।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়ার পর তাতে সন্তুষ্ট হয়ে কাস্টম হাউজ চালানটি ছাড় করেছে। এদিকে আলোচ্য চালানের বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার ফাইজুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, ‘চালানটি আসার পর পণ্যগুলোর মূল্য নিয়ে আমাদের কাছে সন্দেহ হয়েছিল। যে কারণে আমরা চালানটি আটকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেই। তাদেরকে এই অস্বাভাবিক মূল্যের বিষয়টি জানাই। তবে তারা জানিয়েছেন সবকিছু ঠিকঠাক আছে। উল্লিখিত মূল্যে কোনো অসংগতি নেই। যে কারণে আমরা পরে এটি শুল্কায়ন করেছি। কারণ আমদানিকারক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ক্লিয়ারেন্স দেয়ার পর এগুলো আটকে রাখার এখতিয়ার আমাদের নেই।’ প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নের এক হাজার ৪১ একর জমিতে নির্মিত হচ্ছে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ প্রকল্প।৭ বছর আগে কক্সবাজার উপকূলে জাপানের অর্থায়নে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি জাহাজ থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য বন্দর অবকাঠামো ও জেটি নির্মাণ শুরু হয়। গত বছরের ১১ই নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের উদ্বোধন করেন।
সরকার এব্যপারে রীট করতে পারেন, আদালতও রুল জারী করবেন যেন কেউ এই কেনাকাটার ব্যপারে কোন কথা বা তদন্ত না করতে পারেন। কোন কিছু নিয়ে প্রতিবাদ, তদন্ত। উন্নয়নের পথে বিরাট বাঁধা।
A 1-3" pipe cutter costs $14.99 and a hammer costs less than $10 (Source: Internet).
Corrupt face of a corrupt government.
এতো কিছুই না! সামনে আরো বড় বড় চুরি হবে, মহাসাগর চুরি হবে, বিশ্ব চুরি হবে, মহাবিশ্ব চুরি হবে। কারণ যারা চুরি করছে তারাই সরকারকে বাঁচিয়ে রেখেছে। তারা জানে সরকার তাদের কিছুই করতে পাবরে না বা কিছুই করবে না। দেশে অনির্বাচিত সরকার থাকলে পরিস্থিতি এমনই হবে জানা কথা।
গরিব, দুঃখী, মেহনতি, অসহায় জনগণের ট্যাক্সের টাকা যারা আত্মসাৎ করছে, যারা সুযোগ করে দিচ্ছে, যারা সহযোগিতা করছে কেউ বাঁচতে পারবে না, এদের পেট ফেটে এসব টাকা একদিন বেরিয়ে পড়বে ইন্শাআল্লাহ।
দুইটা হাতুড়ি দাম ২ লাখ বিরাশি হাজার টাকায় আমদানি করা হয়েছে। স্বাভাবিক বাজার মুল্য ১৬৮৪/- ।দেশে উন্নয়ন হয়েছে বিধায় এত বেশী দামে ক্রয় করা সম্ভব হয়েছে। তারপরও দেশ বিরোধীরা উন্নয়ন চোখে দেখে না।
আমার একটা হাতুরি আছে, বেচতে চাই ....
আরে ভাই এটা বিশেষ ভাবে নির্মিত শুনা দিয়ে মুরানো, আমার বাড়িতেও আছে এমন ৯৩ লাখ টাকার হাতুড়ি । যদিও এটা দিয়ে কিছু করি না, প্রতি দিন সকালে এক গ্লাস পানিতে চুবিয়ে খাই
কেন্দ্র প্রধানের বয়ানটি কি সূরে সূরে বর্ণিত হয়েছে নাকি ভেজা বিড়ালের মত মিনমিনে ছিলো ? এ সব বিশেষ মাল যেমন বিশেষ ধাতু দিয়ে তৈরী তখন তার বয়ানও বিশেষ ভাবে ধৃষ্টতাপূর্ন।
ঐ বিশেষ ইন্জিনিয়ারের পিছন দিকে ঐ বিশেষ ধাতু দিয়ে বিশেষ ভাবে তৈরি হাতুরি আর পাইপ কাটার বিশেষ ভাবে ঢুকালেই এই বাটপারি বন্ধ হবে।
মারহাবা । অপূর্ব যুক্তি । এগুলো হয়ত ডায়মন্ড দিয়ে তৈরী ।
যেই দেশে জনগণের মূল্য নাই। যেই দেশে প্রতিরোধ। করার সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আইনের মারপ্যাচে ফেলে আটকে দেওয়া হয়। যেই দেশে প্রতিবাদ করলে আবরার ফাহাদ নির্মম ভাবে মৃত্যু হয়। যেই দেশে স্বাধীন ভাবে কথা বলার অধিকার নাই। যেই দেশে জনগণের ম্যান্ডেড ছাড়া সরকার পরিচালনা করা যায়। যেই দেশে ভোট চুরি করে ক্ষমতাই থাকা যায়। যেই দেশে জনগণের মতামত কে উপেক্ষা করে সব কিছুর দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিতে পারে। সেই দেশে স্বাধীন ভাবে চুরিও করতে পারে
এই ভাবেই টাকা পাচার করে বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে তলা বিহিন ঝুড়িতে বানিয়ে দিতে চায়।
বালিশ কান্ডের পর সমুদ্র চুরি।
disgusting.
বলার ভাষা
সরকারি প্রকল্প থেকে সরাসরি টাকা পাচার করার প্রমান। তার পরেও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে মনে হয় না।
দেশটা কে এভাবে লুটিফুটে খাচ্ছে।
সরকার এব্যপারে রীট করতে পারেন, আদালতও রুল জারী করবেন যেন কেউ এই কেনাকাটার ব্যপারে কোন কথা বা তদন্ত না করতে পারেন। কোন কিছু নিয়ে প্রতিবাদ, তদন্ত। উন্নয়নের পথে বিরাট বাঁধা।
মহাকাশ মহা সমুদ্র ও যে চুরি করার ক্ষমতা সোনার বাংলার সোনার আদম সন্তানদের আছে তাই বার বার প্রমান করার পরও বিশ্ব রেকটের স্বীকৃতি পাচ্ছি না, আর কী প্রমান চান বিশ্ব?
কিচ্ছু করার নেই, আইনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে।
There are no one safe bangladeshi peoples from the corruption. When government is corrupt then who will check.
এদের আশ্রয় দেওয়া হলে পস্তাইতে হবে অতি নিকটে।
পুরো দেশটাই ডাকাতি হয়ে বসে আছে। মানুষের সবকিছু সয়ে গেছে। আহা স্বদেশ। কি যে আছে এই জাতির ভবিষ্যতে।