খেলা
রেকর্ড গড়েও আফসোস তৃষ্ণার
স্পোর্টস রিপোর্টার
৩ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাজে ভাবে হার। এরপর টানা দুই ম্যাচ হেরে টি-টোয়েন্টি সিরিজটাও হয়েছে হাতছাড়া। তবে এমন ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে স্মরণীয় করেছেন বাংলাদেশের পেস বোলার ফারিহা তৃষ্ণা। দলীয় পারফরম্যান্সের চরম হতাশার সিরিজে বলা চলে ব্যক্তিগত অর্জনের আলো। সিরিজে প্রথমবার মাঠে নেমেই তৃষ্ণা তুলে নেন এই অর্জন। একাধিক হ্যাটট্রিক করে বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার জায়গা করে নেন রেকর্ডের পাতায়। অজিদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে গতকাল শেষ ওভারের শেষ তিন বলে তিন উইকেট নিয়ে এই কীর্তি গড়েন তিনি। ২০২২ এ সিলেটে এশিয়া কাপের ম্যাচে মালয়েশিয়ার বিপক্ষেও হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি। মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একাধিক হ্যাটট্রিক করা মাত্র তৃতীয় বোলার বাংলাদেশের এই ২১ বছর বয়সী পেসার। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে যতটা উচ্ছ্বাস নিয়ে তার আসার কথা সেটি হয়নি। কারণ দল হেরে গেছে। তাই দারুণ এই প্রাপ্তির পরও তার কণ্ঠে ঝরে আফসোসও। তার কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-
ব্যাটিংয়ে শুরুটা দারুণ ছিল, জিতবেন এমন বিশ্বাস ছিল কিনা?
তৃষ্ণা: প্রত্যাশা ছিল ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো। অনেক দিন পর টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলাম। ভালো কিছু করার, দলকে কিছু দেয়ার চেষ্টা করেছি। শুরুটা ভালো ছিল। আশাবাদী ছিলাম যে ম্যাচটা ভালোভাবে শেষ করতে পারবো। শেষ পর্যন্ত কিন্তু চেষ্টা করেছি।
হ্যাটট্রিক বলটার সময় মাথায় কি ছিল?
তৃষ্ণা: মাথায় চলতেছিল যে জায়গায় বল করবো। আল্লাহ সহায় হলে যদি কিছু হয়।
অনেক সময় ব্যক্তিগত অর্জনের খুশির চেয়ে দলের হারটা আফসোসের কারণ হয়। আপনি কীভাবে দেখছেন?
তৃষ্ণা: আফসোস তো অবশ্যই আছে। দলের অর্জন বড় হলেই নিজের অর্জনের আনন্দটা বেশি হয়। দল জিতলে এ আনন্দটা হয়তো আরও ভালোভাবে উদ্যাপন করা যেতো। দলই সবার আগে।
ইনজুরির কারণে দীর্ঘদিন ছিলেন মাঠের বাইরে, সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে হ্যাটট্রিক কতোটা কঠিন ছিল?
তৃষ্ণা: কিছুটা কঠিন ছিল। চোটটা গভীরই ছিল। সেখান থেকে সবকিছু মেইনটেইন করে ফিরে আসতে সময় লেগেছে একটু।
ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো হ্যাটট্রিক কেমন লাগছে?
তৃষ্ণা: ভালো তো লাগেই। দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকটা করতে পেরেছি। অর্জন করতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর অশেষ রহমতে হ্যাটট্রিকটা করতে পেরেছি। ডাউট ছিল না। চোটে ছিলাম। প্রথম লক্ষ্য ছিল সেরে ওঠা। সেরে ওঠার পর লক্ষ্য ছিল প্রক্রিয়া অনুযায়ী এগোবো। বাকিটা আল্লাহ ভরসা। আমি আমার প্রক্রিয়া অনুযায়ী যাচ্ছিলাম। সুযোগ পেলে সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করবো, এটিই ইচ্ছা ছিল।
ইনজুরি ম্যানেজ কীভাবে করেছেন?
তৃষ্ণা: রিহ্যাবটা শুরু হয়েছে প্রথমে আইসোমেট্রিক টাইপ করে, ব্যান্ড দিয়ে আসে। সেটা শেষ করার পর স্কিলে আসি। মাঝে দুইটা পেস বোলিং ক্যাম্প পেয়েছি চম্পকা রমানায়েকের সঙ্গে। সেটা কাজে এসেছে।
মাত্র একজন পেসার নিয়ে খেলা হচ্ছে, বিষয়টা কীভাবে দেখছেন?
তৃষ্ণা: টিম কম্বিনেশনের ওপরই নির্ভর করে কয়টা পেসার খেলবে। আমরা চেষ্টা করছি, ভালো করা। তাহলে দলে হয়তো পেসারদের সংখ্যা বাড়বে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বলতে কিছু নেই। মারুফা ওয়ার্ল্ড ক্লাস বোলার। ও ওর জায়গাতে বেস্ট। হয়তো বিকল্প ভাবা কঠিন। কারণ ওর সুইং সবকিছুই বেস্ট। আমার চিন্তা ছিল শুধু ভালো করার চেষ্টা করবো।
জেতার সম্ভাবনা ছিল কিন্তু, শেষ পর্যন্ত হলো না?
তৃষ্ণা: শুরু ভালো হওয়ার পর কন্টিনিউ করার চেষ্টা করেছি, জেতার চেষ্টা করেছি। মাঝে একটা ধস নামাতে হয়নি। এই রান চেজ করার জন্য আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। ওরা ব্যাটিং (অর্ডার) চেঞ্জ করলেও আমার মনে হয় না খুব একটা চাপে রাখার চেষ্টা করেছিলাম।