শেষের পাতা
গণতন্ত্রের দাবিতে উত্তাল সুদান, পুলিশের গুলিতে নিহত ৯
মানবজমিন ডেস্ক
২ জুলাই ২০২২, শনিবারগণতন্ত্রের দাবিতে উত্তাল সুদান। আফ্রিকার দেশটিতে রাস্তায় নেমে এসেছে লাখো মানুষ। বিক্ষোভ থামাতে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে দেশটির পুলিশ। এতে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৭ জনকেই বুকে ও মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে সামরিক অভ্যুত্থানের পর এ ধরনের আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের গুলির মধ্য দিয়ে এ নিয়ে দেশটিতে মোট ১১১ গণতন্ত্রপন্থি নিহত হলেন। এ খবর দিয়েছে মিডল ইস্ট আই।
রাজধানী খার্তুম, ওমদুরমানসহ বেশ কয়েকটি শহরের রাজপথে হাজার হাজার মানুষ আন্দোলন করছেন। সেনা শাসকের পদত্যাগের দাবিতে সেøাগান দিচ্ছেন তারা। টায়ার জ্বালিয়ে ও পাথর দিয়ে অবরোধ করছেন সড়ক।
বিজ্ঞাপন
সুদানের বিভিন্ন অংশ থেকেই সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে এবারই সবথেকে বড় বিক্ষোভ দেখা গেল সেখানে। তবে দেশজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে পড়েন তারা। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিক্ষেপ করা হয় জলকামান, টিয়ার গ্যাস ও ফাঁকা গুলি। এতে ওমদুরমান শহরে ৪ জন, খার্তুমে ১ জন ও বাহরি শহরে ২ জন প্রাণ হারান। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে। ঘটনার পরপরই দেশজুড়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগ বিছিন্ন করে দেয়া হয়। বড় ধরনের বিক্ষোভের আশঙ্কায় শহরের সংযোগ সড়কও বন্ধ করে দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, আহতদের যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানেও টিয়ার গ্যাস হামলার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আন্দোলনকারীরা রাজধানীতে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের থামাতে রাজধানীর সংযোগ সেতুগুলোতে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। সেখানেও সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে।
সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুতদের দলগুলো এক হয়ে ‘ফোর্সেস ফর ফ্রিডম অ্যান্ড চেঞ্জ’Ñ নামের একটি সংগঠন তৈরি করেছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতায় ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে চায়। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ক্ষমতা দখল করে সেনা শাসনের অবসান ঘটানো। বৃহস্পতিবারের সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, প্রয়োজনে আমরা মরে যাব কিন্তু সেনাবাহিনীকে আমাদের শাসন করতে দেবো না।
১৯৮৯ সালের ৩০শে জুন এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সুদানের ক্ষমতায় এসেছিল স্বৈরশাসক ওমর আল-বশির। এরপর দীর্ঘ তিন দশক তিনি সুদানের শাসক ছিলেন। সেইদিনকে মাথায় রেখেই ৩০শে জুন দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করে বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে অনলাইনে সরকারবিরোধী জনমত রুখতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে সুদানের সামরিক সরকার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দু’টি বেসরকারি টেলিকম কোম্পানি জানিয়েছে, তাদেরকে ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এমনকি সুদানের অভ্যন্তরে ফোনালাপও করা যাচ্ছে না। এরমধ্যেই বিশাল সমাবেশের ডাক দেয় আন্দোলনকারীরা।
সুদানের পরস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘের প্রতিনিধি ভল্কার পার্থেস সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান। অপরদিকে খার্তুমে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে বেসামরিক নাগরিকের জীবন রক্ষার আহ্বান জানানো হয়।
ভারতে অস্থিরতার জন্য নূপুর শর্মাকে দায়ী করে ক্ষমা চাইতে বললো সুপ্রিম কোর্ট
মানবজমিন ডেস্ক: মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে কঠিন ভাষায় তিরস্কার করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তার ওই মন্তব্যের কারণেই এখন সমগ্র ভারত জ্বলছে বলে জানানো হয় কোর্টের তরফ থেকে। একইসঙ্গে নূপুর শর্মার ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
মূলত তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সমস্ত মামলা দিল্লিতে সরিয়ে আনার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে তাকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে। বিচারপতি সূর্যকান্ত গতকাল নূপুর শর্মাকে বলেন, আমরা ওই আলোচনাটি দেখেছি। যেভাবে ওই কথাগুলো বলা হয়েছে তাও দেখেছি। নিজে একজন আইনজীবী হয়ে আপনি যা করেছেন, তা লজ্জার। আপনার উচিত সারা দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া।
সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, নূপুর শর্মার টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। নিজের মন্তব্য প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে অনেক দেরি করেছেন। তাও সেই মন্তব্য শর্তসাপেক্ষে প্রত্যাহার করেছেন তিনি। নূপুর শর্মার উদ্দেশ্যে আদালত বলেছে, তার মুখে লাগাম না থাকার কারণে সারা দেশে আগুন জ্বলেছে। উদয়পুরের ঘটনার পেছনেও রয়েছে তার লাগামহীন কথা। বিচারক বলেন, এই পিটিশনেও নূপুরের ঔদ্ধত্য দেখা যাচ্ছে। তার কাছে বিচারকদের ছোট লাগছে। আপনি যে দলেরই মুখপাত্র হন না কেন, আপনার এরকম মন্তব্য করার লাইসেন্স নেই। সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, নূপুর শর্মার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। উল্টো তিনিই নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছেন। শুধু নূপুরকেই নয় দিল্লি পুলিশকেও ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। নূপুরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআরের প্রেক্ষিতে তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এক টেলিভিশন বিতর্কে নবী মুহম্মদ (সা.)-কে নিয়ে নূপুর শর্মার বিতর্কিত এক মন্তব্যের পর ভেতর এবং বাইরে থেকে ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে ভারত। দেশের অভ্যন্তরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ইসলামিক দেশগুলো এর প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ দেয়। হুমকির মুখে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক। নূপুর শর্মা ভারতের শাসক দল বিজেপির মুখপাত্র ছিলেন। বিতর্কের মুখে তাকে বহিষ্কার করে দলটি।
মন্তব্য করুন
শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন
শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত
২
প্রকাশ্যে বস্ত্রহরণ/ মদ্যপ নারীদের লাইসেন্স ছিল না, ডিবি অফিসেও হট্টগোল
৩