প্রবাস
লন্ডনে অমর একুশে উদযাপিত
আরিফ মাহফুজ, লন্ডন থেকে
(১০ মাস আগে) ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার, ৬:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
প্রভাতফেরির মাধ্যমে লন্ডনে উদযাপিত হয়েছে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। পূর্বলন্ডনের আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
''আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি '' গানটি ছিল সকলের মুখে, সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে একের পর এক বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো শহীদ মিনারে পুষ্প অর্পণ করেন। প্রতিবছরের ন্যায় প্রভাতফেরির আয়োজন করে যুক্তরাজ্য প্রভাতফেরি উদযাপন পরিষদ। এতে নেতৃত্ব দেন টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান।
১৯৫২ সালে নিজের মাতৃভাষা রক্ষায় বিজাতীয়দের সাথে সংগ্ৰামে লিপ্ত হয়ে আত্নহুতি দিয়েছে আমাদের দামাল ছেলেরা , গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামগাথা এই ইতিহাস ও ভাষার ঐতিহ্য বিলেতে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্ম ও অন্যান্য কমিউনিটির মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে দিনের বেলা শহীদ মিনারে প্রভাতফেরির মাধ্যমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের নিয়ম চালু করা হয়েছে।
উপস্থিত বাংলাদেশি নেতারা বলেন বাঙালিদের আত্মদান বিশ্বমানবের জন্য অনুপ্রেরণা ও গৌরবের। যার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিকভাবে পালন করা হয় এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
প্রভাতফেরিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করতে এসেছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান। যুক্তরাজ্যের কমিউনিটিতে বাংলাভাষার বিকাশে ও চর্চার জন্য সকল সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। মেয়র বলেন, আমাদের মাতৃভাষা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কমিউনিটি ভাষা সার্ভিস পুনরায় চালু করতে টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিল ৮ লক্ষ পাউন্ড বরাদ্দ করেছে। আমাদের মাতৃভাষাকে ও এর ইতিহাস বৃটেনের বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের কাছে ভালোভাবে পৌঁছাতে যেকোনো সহযোগিতায় আমি প্রস্তুত।
প্রভাতফেরিতে আগত বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা তাসনিম মুনা বলেন , প্রবাসে বাংলা ভাষার বিকাশে বাংলাদেশি কোন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন যদি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে আর্থিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও বাংলা বই দেয়া সহ সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
ভাষা শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ পার্লামেন্টের এমপি আফসানা বেগম। অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি প্রতি বছর পার্লামেন্টে আন্তর্জাতিক ভাষাকে নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করি , আমি গত দুবছর আগে সংসদে বাংলা সিলেটি ভাষায় কথা বলেছিলাম যা আগে কখনো হয়নি এ নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল , আমি চাই সবাই তার নিজ মাতৃভাষায় সংসদে কথা বলুক , তাদের মাতৃ ভাষাকে সংসদে সামনে নিয়ে আসুক। আমাদের মাতৃভাষা নিয়ে গর্ব করা উচিত। সংসদে মাতৃভাষায় কথা বলার চর্চা নিয়মিত করা উচিত।
ভাষা শহীদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে এসেছিল যুক্তরাজ্য বিএনপি, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, উদীচী শিল্পগোষ্ঠীসহ সকল রাজনৈতিক -সামাজিক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও সমাবেশের সমাপ্তি ঘটে।