ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

পা ফাটার কারণ ও করণীয়

ডা. দিদারুল আহসান
৩১ জানুয়ারি ২০২৪, বুধবার

পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া একটি বিব্রতকর সমস্যা। এই সমস্যাটি কারও কারও বংশগত আবার কারও পায়ের প্রতি অবিচার বা নিয়মিত পায়ের যত্ন না নেয়ার কারণে হয়ে থাকে।  সাধারণত  শীতকালে বা শুষ্ক মৌসুম ও আর্দ্রতার ঘাটতিতে এ সমস্যা হয়। পা ফাটলে পায়ের গোড়ালিতে যন্ত্রণা হতে থাকে। দীর্ঘদিন পা ফাটা থাকলে ইনফেকশন হতে পারে, পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়, পা ফুলে যায় এবং দৈনন্দিন চলাফেরা ব্যাহত হয়। 
তাই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ প্রয়োজন পায়ের সঠিক যত্ন-আত্তি।
পা ফাটা রোগের কারণসমূহ
* খালি পায়ে হাঁটা
* দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে কাজ করা
* শক্ত জুতা পরিধান করা
* ধুলাবালিতে কাজ করা
* ক্ষেতখামারে কাজ করা
* পরিমিত পানি পান না করা
* অতিরিক্ত পা ঘামানো
* ভিটামিন এ, সি এবং ই-এর অভাব
* বংশগত।
উপরের কারণসমূহের সঙ্গে কিছু রোগের কারণেও পা ফেটে যেতে পারে। যেমন-
পামোপ্ল্যান্টার কেরাটোডার্মা (palmo planter keratoderma): এটি এক ধরনের জিনবাহিত রোগ। এক্ষেত্রে রোগীর ত্বক পুরু হয়। মোটা ও পুরু চামড়া সংগত কারণেই খসখসে ও শক্ত হতে থাকে যা পরে ফেটে যায়। ফাটা স্থান দিয়ে নানা জীবাণু ঢুকে হতে পারে মারাত্মক প্রদাহ বা ইনফেকশন।  
সোরিয়াসিস (psoriasis): এটি এক প্রকার অটো ইমিউনো ডিজিজ। এই রোগে হাতে-পায়ে চাকা চাকা দাগ হয়ে যায়, চুলকানি, চামড়া ওঠা এ রোগের লক্ষণ। হাত ও পায়ের তালুতে সোরিয়াসিস হলে আক্রান্ত স্থান ফেটে গিয়ে লাল মাংস দেখা যায়। শীতকালে এই ফাটা বেড়ে যায়।
টিরিয়াসিস রুব্রা পাইলারিস (pityriasis rubra pilaris): এটি জিনবাহিত রোগ। এ রোগ যাদের আছে শীতকালে তাদের হাত-পা প্রচণ্ড শুষ্ক হয়ে যায় এবং সোরিয়াসিসের মতোই পা ফেটে যায়।
প্রতিকার যেভাবে-
পা ফাটা রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে ত্বক নরম ও মসৃণ রাখা। সেজন্য যা করা যেতে পারে-
১. খালি পায়ে চলা-ফেরা না করা
২. আরামদায়ক নরম জুতা পরা 
৩. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা
৪. নারিকেল তেল মালিশ করা 
৫. নিয়মিত ভ্যাসলিন ব্যবহার করা
৬. ঝামা পাথর বা পিউমিস পাথর দিয়ে পা ঘষে পায়ের মরা চামড়া তুলে নেয়া, এবং পরবর্তীতে নারিকেল তেল মালিশ করা। 
৭. শীত পড়া শুরু হলেই মোজা পরার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। এতে ঠাণ্ডা, ধুলাবালি, দূষণ থেকে মুক্ত থাকবে পা।
৮. আধা বালতি কুসুম গরম পানিতে ১ চিমটি লবণ দিয়ে সেখানে পা আধা ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখলে বেশ আরাম পাওয়া যায়। যাদের পা ফাটা সমস্যা রয়েছে শুধু তারাই নন, পা ভালো রাখতে যে কেউই এটা করতে পারেন।
৯.  সমপরিমাণ গ্লিসারিন ও গোলাপজলের মিশ্রণ পায়ের ফাটা স্থানে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন। এতে পা ফাটা ও ব্যথা কমবে। গ্লিসারিন ত্বক নরম রাখে। অন্যদিকে গোলাপজলে রয়েছে ভিটামিন এ, বি৩, সি, ডি ও ই। আরও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি  উপাদান।
এ ছাড়া প্রচুর পানি পান করুন। পানি/পানি জাতীয় খাবার কম খেলে ত্বকের শুষ্কতা ও পা ফাটার মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়।

আগে থেকে সতর্ক থাকলে পা ফাটার সমস্যাগুলোর অধিকাংশই এড়ানো সম্ভব। যদি লক্ষ্য করেন এসব করণীয় পালনের পরও পা ফাটা কমছে না তখন  চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 
লেখক: চর্ম, অ্যালার্জি ও যৌন বিশেষজ্ঞ
আল-রাজী হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেড।
১২, ফার্মগেট, ঢাকা।
ফোন: ০১৭১৫-৬১৬২০০

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status