শরীর ও মন
প্রতিরাতে ঘুমের আগে ত্বকের পরিচর্যা
ডা. জেসমীন আক্তার লীনা
২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবারসুন্দর ত্বকের জন্য প্রধান কাজ হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। ত্বকের ময়লা ঠিকমতো পরিষ্কার করা না হলে পিম্পল, ব্রণ (Acne) হতে পারে। ত্বক হয়ে পড়ে খসখসে, রুক্ষ, অমসৃণ। তাই রাতে ঘুমানোর আগে মুখটাকে পরিষ্কার করে ঘুমালে সারা রাতের লম্বা সময় ত্বক (skin) একেবারে তরতাজা থাকবে। সারাদিনের ক্লান্তি কাটাতে এবং ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে ‘বেডটাইম বিউটি রেজিমে’র জুড়ি নেই। ছোট ছোট কিছু দিকে খেয়াল, আর সামান্য যত্নেই ত্বক (skin) হয়ে উঠবে আরও লাবণ্যময় ও উজ্জ্বল।
প্রাথমিক নিয়ম
১. বাইরে গেলে তো বটেই, না গেলেও ক্লেনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। রান্নাঘরের তেলকালিও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।
২. সাবানের পরিবর্তে ব্যবহার করুন ফেসওয়াশ বা প্রাকৃতিক কোনো উপাদান।
৩. সুন্দর দেখাতে সাহায্য করলেও মেকআপ (Makeup) ত্বকের সবচেয়ে বড় শত্রু। তাই যতই ক্লান্ত থাকুন না কেন মেকআপ ভালো করে তুলে তারপর শুতে যান।
৪.আই মেকআপ তোলার আলাদা ক্লেনজার ব্যবহার করতে পারেন।
৫. ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লেনজার বেছে নিন।
৬. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
৭. মুখের সঙ্গে সঙ্গে গলা, হাত, কনুইতেও ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন।
৮. চুল (Hair) ভালো করে আঁচড়ে হালকা করে বেঁধে ঘুমোতে যান।
শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের পরিচর্যা: যেকোনো ত্বক পরিষ্কার করতে হয় সাধারণত তিনটি ধাপে। যেমন- ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং ও অ্যায়েসথেটিকস চিকিৎসা।
১. শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বক (skin) পরিষ্কার করার জন্য ক্লিনজিং জেল ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক নরম ও মসৃণ থাকবে।
২. প্রথমে পুরো মুখে ক্লিনজিং জেল ম্যাসাজ করুন। তারপর তুলোর বল ভিজিয়ে পানি নিংড়ে তা দিয়ে ঘষে ঘষে ত্বক পরিষ্কার করুন।
৩. সবশেষে লাগান ময়েশ্চারাইজার। ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ও লোশন (Lotion) দুটোই পাওয়া যায়। হাতে খানিকটা ক্রিম বা লোশন নিয়ে কয়েক ফোঁটা পানি সঙ্গে মেশান। তারপর সার্কুলেশন মুভমেন্টে মুখে ম্যাসাজ করুন।
৪. গলায় ও হাতেও লাগাবেন। চোখের নিচে লাগান আন্ডার আই ক্রিম। তবে চোখে ক্রিম লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন না। পনেরো মিনিট পর ভেজা তুলো দিয়ে চোখের ক্রিম মুছে নিন। তা না হলে চোখের কোল ফুলে যাবে।
যদি তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বক হয়
১. এ ধরনের ত্বক পরিষ্কার করার জন্য ক্লিনজিং লোশন বেশ উপকারী। প্রথমে পুরো মুখে ক্লিনজিং লোশন (Cleansing lotion) লাগান। তারপর ভেজা তুলা দিয়ে ঘষে তুলে ফেলুন।
২. এরপর ফেসওয়াশ বা উপটান দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ফেসওয়াশ বা উপটান প্রথমে মুখে ভেজা হাতে ম্যাসাজ করুন। তারপর পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন খুব উপকারী।
৪. এ ধরনের ত্বকে পানি (Water) মিশিয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকে কোনো ক্রিম ব্যবহার করবেন না। কারণ এতে ত্বক (skin) আরও তৈলাক্ত হয়ে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়।
৫. ত্বকে মিশ্র প্রকৃতির ত্বক হলে নারিশিং ক্রিম লাগাতে পারেন।
৬. ত্বকে ব্রণ থাকলে চিকিৎসকের সহায়তা নিন।
যদি দেখেন আপনার ত্বক এসব করার পরও তেমন জৌলুস নেই তখন চিকিৎসকরা আপনাকে আধুনিক চিকিৎসা পিআরপি, ফেসপিআরপি, বোটক্স, ফিলার, কেমিকেলপিলিং এসব চিকিৎসার মাধ্যমে আপনার ত্বকের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক (চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি) স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
চেম্বার: আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিরপুর রোড, ধানমণ্ডি, ঢাকা
প্রয়োজনে-০১৭২০১২১৯৮২