ঢাকা, ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

বাংলারজমিন

বন্যায় আয়-রোজগার নেই বিপাকে বড়লেখার পাটিশিল্পীরা

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২৪ জুন ২০২২, শুক্রবার
mzamin

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বাজার। তাই ছাতা মাথায় পানিতে পাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন পাটিশিল্পী ষাটোর্ধ্ব নিরেন্দ্র কুমার দাস। কারণ পাটি বিক্রি করে তার সংসারের চাকা চলে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো ক্রেতার দেখা পাচ্ছিলেন না তিনি। তাই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাটিশিল্পী ফরিন্দ্র দাসকে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিরেন্দ্র বললেন, দিন এভাবে আর চলে না।  নিরেন্দ্র কুমার দাস মৌলভীবাজারের বড়লেখার তালিমপুর ইউপি’র হাকালুকি হাওরপারের গগড়া গ্রামের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই বাপ-দাদার কাছ থেকে শেখা এই পেশাকে আঁকড়ে ধরে কোনোমতে পরিবার নিয়ে দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে-পরে তার সংসার চলছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাকালুকি হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে হাকালুকি হাওরের বাংলাবাজার তলিয়ে যাওয়ায় নিরেন্দ্র কুমার পড়েছেন চরম বিপাকে। কারণ বাজারে ক্রেতা নেই। ফলে পাটি বিকি-কিনিও নেই। এই অবস্থায় বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় পানিতে দাঁড়িয়ে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন নিরেন্দ্র। আলাপকালে পাটিশিল্পী নিরেন্দ্র কুমার দাস এই প্রতিবেদককে বলেন, ছোটবেলা থেকে পাটি তৈরি করে বিক্রি করছি। বাপ-দাদার কাছ থেকে এই কাজ শিখেছি। তাই অন্য কোনো কিছু শিখিনি। তিনি বলেন, এক সময় পাটির চাহিদা ছিল। কিন্তু দিন দিন তা কমছে। তারপরও কোনোমতে পরিবার নিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে আছি। কিন্তু কয়েকদিন ধরে বন্যার কারণে বাজারে ক্রেতা নেই। তাই পাটি বিকি-কিনি একদম নেই। এ কারণে পাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। যদি কোনো ক্রেতা পাই তাহলে কম টাকায় পাটিটি বিক্রি করে দেবো। যদি পাটিটি বিক্রি করতে পারি, তাহলে ঘরে চাল-ডাল নিতে পারবো। তিনি বলেন, বন্যার পানি ঘরে উঠেছে। কোনোমতে ঘরে আছি। পানি বাড়লে অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে হবে। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। এই অবস্থায় কীভাবে খাবো, কীভাবে চলবো তা নিয়ে চিন্তা করছি।  এ সময় নিরেন্দ্রের পাশে থাকা পাটিশিল্পী ফরিন্দ্র দাস (৪৬) বলেন, পাটি বিক্রি করে আমাদের পরিবার চলে। বাজারে ক্রেতা নেই। তাই আজকে আর পাটি আনিনি। খুব কষ্ট করে ধার করে চলতে হচ্ছে। জানি না কপালে কী আছে। নিরেন্দ্র কুমারের মতো বাজারে পলিথিনে মুড়িয়ে পাটি হাতে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ঋষি কান্ত দাস (৫৫)। বাজারে ক্রেতা না থাকায় তাকেও অনেকটা হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

দেনমোহর কমাতে অভিনব কৌশল/ তালাকের পর আবার বিয়ে, কিছুই জানে না গৃহবধূ

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status