দেশ বিদেশ
২৫ এজেন্সিতে শ্রমিক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মালয়েশিয়ায় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
(৩ বছর আগে) ২৩ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৬:২১ অপরাহ্ন

মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান
বাংলাদেশের ২৫ টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানানের চুড়ান্ত স্বিদ্বান্তের এক দিন পরই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরে মামলা করেছে এনজিও সংগঠন ইখলাস। মঙ্গলবার ( ২১ জুন) ডাংওয়াঙ্গি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে দায়ের করা প্রতিবেদনে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান কে অভিযুক্ত করাে অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে ২৫ এজেন্সি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। খবরঃ- মালায় মেইল।
পুলিশ রিপোর্ট বা মামলা দায়ের করেছেন বেসরকারি এনজিওদের যৌথ সংগঠন ইখলাস এর সভাপতি মোহাম্মদ রিদজুয়ান আবদুল্লাহ। মামলা দায়েরের পর মঙ্গলবার বিকেলে মোহাম্মদ রিদজুয়ান আবদুল্লাহ স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে এক মত বিনিময়ে বলেন, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি তে ১৫২০ রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে মাত্র ২৫ টি এজেন্সি দূর্নীতির মাধ্যমে নির্বাচিত করেছেন এম সারাভানান ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়মের মাধ্যমে। এই ২৫ এজেন্সির মাধ্যমে ১ টি সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন যা মালয়েশিয়ার এক জন বড় ব্যবসায়ী এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রনে রয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম গুলোতে দেখা যাচ্ছে ২৫ এজেন্সির ব্যাপারে সরকার ও মন্ত্রী কিছু ই জানেন না। রেদজুয়ান আবদূল্লাহ আরো বলেন, এই দুর্নীতির বিষয় এম সারাভানানের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য পুলিশ কে আহবান করা হয়েছে।
পাশাপাশি রিদজুয়ান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন এবং প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি ইসমাইল সাবরি ইয়াকোবকে বিষয়টি দেখার জন্য আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, "আমরা মনে করি এটি একটি জাতীয় নিরাপত্তা এবং ক্ষমতার পরিপন্থী কাজ, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে তার (সারাভানানের) বক্তব্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবর্তন করে ফেলছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্য বিজনেস পোস্ট বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদের বিবৃতিতে বলেছেন যে তিনি বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেউই ২৫ এজেন্সি কে অনুমোদন করেননি। ইমরান আরও বলেছিলেন যে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) তে ২৫ টি এজেন্সির কথা উল্লেখ নেই । মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা বলছেন যদি ২৫ এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি করা হয় তাহলে তাদের খরচ আগের কলিং ভিসার চেয়েও বেশি পড়বে এবং শ্রমিকরা তাদের খরচ তুলতে দীর্ঘ সময় লাগবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনজিও সংস্থা ইখলাস সহ আরো বেশ কয়েক সংস্থা ভিন্ন ভিন্ন থানায় মন্ত্রী এম সারাভানানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। যেহেতু ২৫ এজেন্সি বাংলাদেশ অনুমোদন করেনি তাহলে এই সিন্ডিকেট এর পেছনে এম সারাভানান দায়ী।
এদিকে গত ৪ বছর আগে সিন্ডিকেটের অভিযোগে মাহাথির সরকার কলিং ভিসা স্থগিত হওয়ার পর একের পর এক জটিলতায় ঝুলে আছে অন্যতম শ্রমবাজার টি। কলিং খুলে শ্রম বাজার স্বাভাবিক করনেঃ এই ৪ বছরে অসংখ্যা মেল মিটিং ও দেন দরবার হয়েছে কিন্তু ফলাফল একই। এ অচলাবস্থা চলতে থাকলে কলিং যেমন বন্ধ হয়ে যেতে পারে আবার চালু হলেও আগের মতই মহাসংকটে পড়তে পারে কলিং ভিসার সংশ্লিষ্টরা। যেভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল ২০০৭ এ চালু হওয়া কলিং ভিসার। অবৈধ হয়ে মানবিক সংকট পড়তে পারেন সাধারণ কর্মীরা। কলিং নিয়ে এক কদম এগিয়ে আসলে আবার নতুন জটিলতায় ২ কদম পিছিয়ে যায়। সিন্ডিকেট নিয়ে বাংলাদেশেরের তীব্র আপত্তি যেমন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানা কোন কর্নপাত করছেন না ঠিক তেমনি মালয়েশিয়ার নিয়োগ কর্তাদের সিন্ডিকেট বিরোধী বক্তব্য ও কোন পাত্তাই দিচ্ছে না। এত কিছুর পরও এম সারাভানান নিজের অবস্থানে অনড়।