দেশ বিদেশ
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নারী সাংবাদিকদের ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় সভা
স্টাফ রিপোর্টার
৯ জুলাই ২০২৫, বুধবারবর্তমানে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার ঘটনা ক্রমাগতভাবে বেড়েছে প্রকাশ্যে, সহিংসতার চিত্রও বদলেছে। এই পরিস্থিতিতে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গণমাধ্যমকে সঙ্গে নিয়ে নারী আন্দোলন আরও সংগঠিত, অগ্রসর করতে করণীয় নির্ধারণে নারী সাংবাদিকদের মতামত ও সুপারিশ গ্রহণে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারী আন্দোলন ও গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক। জেন্ডার বৈষম্যকে প্রতিহত করা না গেলে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে না। গণমাধ্যম খবর প্রকাশে আরও সংবেদনশীল হতে হবে, সর্বোপরি আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারীর প্রতি সমাজের মধ্যে থাকা বিদ্বেষকে বর্তমানে নানাভাবে উস্কে দেয়া হচ্ছে। নারীর মানবাধিকার রক্ষায় আইন থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ কতোটুকু সেটি আমরা জানি।
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচারের ফলে প্রতিনিয়ত সমাজে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি আমরা দেখতে পাই। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গণমাধ্যম নারী আন্দোলনের অন্যতম সহযোগী।
দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ প্রতিনিধি মুনিমা সুলতানা বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে দেখা যায় গত ৬ মাসে প্রায় ১ হাজার ৫৫৫ জন নারী ও কন্যা সহিংসতার শিকার হন। এর মধ্যে মার্চ মাসে সহিংসতার ঘটনা বেশি ঘটেছে; তবে পরবর্তীতে সহিংসতার ঘটনা কমে গেলেও তা নারীর জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করে না।
আফরুজা আরমান বলেন- গত এক বছরে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে প্রতিটি সহিংসতার ঘটনায় কন্যাদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি। বাল্যবিয়ে, যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় কন্যাদের প্রতি সহিংসতার হার বেশি, যাদের বয়স ২-১৮ বছরের মধ্যে। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত নারী সাংবাদিকরা বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীকেই পুনরায় নিগৃহীত করা হয় সঠিকভাবে সংবাদ প্রচার না করে, নারীর প্রতি সহিংসতার সঠিক তথ্য সকল পত্রিকায় আসে না, আসলেও অনেক সময় বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়। নারীর প্রতি বিদ্বেষ সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে। গণমাধ্যম খবর প্রকাশে সংবেদনশীলতার জায়গাটিও খুবই ভয়াবহ, এই পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমকে কৌশলগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; খবর প্রকাশে সংবেদনশীল হতে হবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতার তথ্যের বিকৃত উপস্থাপন বন্ধে সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।