দেশ বিদেশ
এএফপি’র প্রতিবেদন
ভারতের অসন্তোষ সত্ত্বেও চীনের প্রতি ঝুঁকছে বাংলাদেশ
মানবজমিন ডেস্ক
৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার
গত বছর সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের রাজনীতির পট পরিবর্তন হতে দেখা গেছে। পরিবর্তন এসেছে কূটনীতিতেও। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ভারতের ক্রোধের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নয়াদিল্লি-ভিত্তিক বিশ্লেষক প্রবীণ ডন্থি বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে সম্ভবত এর আগে এমন বৈরিতা দেখা যায়নি। ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নয়াদিল্লির হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার হাসিনাকে আশ্রয় দেয়াতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, সম্পর্ক এখন পুনর্গঠনের পর্যায়ে রয়েছে। মার্চে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদান নিশ্চিত করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের নেতৃত্বস্থানীয় রাজনীতিবিদদের সঙ্গেও সরাসরি যোগাযোগ করেছে বেইজিং। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চীন বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আন্তরিকভাবে আগ্রহী। সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নতি হয়েছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন বলেছেন, এই ত্রিদেশীয় জোট বাণিজ্য, শিল্প, শিক্ষা ও কৃষিসহ অন্যান্য সহযোগিতা বিষয়ক কর্মসূচিতে সম্মত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষক ওবায়দুল হক বলেছেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিকল্প স্বাস্থ্যসেবা। যার জন্য এক সময় ভারতে পাড়ি জমাতেন বাংলাদেশের মানুষ। ভারত যখন চিকিৎসা সেবার জন্য যাওয়া বাংলাদেশিদের দেশটিতে প্রবেশ কঠিন করে দেয় তখন এ দেশের মানুষকে তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার সুযোগ করে দেয় চীন।
গত বছর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্র পথে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এতে চিন্তার ভাঁজ দেখা গেছে ভারতের কপালে। ডন্থি বলেছেন, ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দেশটির প্রতি শত্রু ভাবাপন্ন ঢাকার এমন কোনো সরকারকে মেনে নিতে অনিচ্ছুক। ঢাকা, ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের মধ্যকার দৃশ্যমান সম্পৃক্ততা এই ধারণাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি একে অপরের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রতিবেশী এ দুই দেশ। ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশের ওপর একাধিক বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে ভারতীয় তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক পণ্য ও খাদ্যপণ্য আমদানির ওপর কঠোর নিয়ম আরোপ অন্যতম। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত সাবেক বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেছেন, ঢাকার উচিত জোট গঠনের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা এবং বহুপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করা। এদিকে বাংলাদেশের ওপর শতকরা ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। যা ১লা আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। এ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশের বাণিজ্য মহল। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বোয়িং বিমান, গম, তেল আমদানি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা। জুনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে বলেন ড. ইউনূস। অন্যদিকে ডন্থি বলেছেন, দিল্লি যদি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট হয় এবং ঢাকায় যোগ্য কাউকে ক্ষমতায় আসতে দেখে তখনই পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে পারে।
পাঠকের মতামত
ভারত বাংলাদেশের নয়, ভারত হাসিনার। ৫ আগষ্টের পর তা স্পষ্ট। তারা চরম মুসলিম বিদ্বেষী। তাদের সাথে সম্পর্ক রাখার কোন প্রশ্নই উঠে না।
ভারতের অসন্তোষ??????
Who is ভারত ?
Bangladesh doesn't care about what India thinks.