বাংলারজমিন
রাজবাড়ীর অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে মানুষ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
১০ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার
ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বেনাপোল, টুঙ্গিপাড়াসহ নিয়মিত চলাচল করছে বেশ কয়েকটি ট্রেন। ট্রেন চলাচল করলেও অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ। রাজবাড়ীকে রেলের শহর বলা হলেও জেলার ৫টি উপজেলার বিভিন্ন সড়কের উপর দিয়ে ৫৭টি বৈধ ও অবৈধ রেলক্রসিং অরক্ষিত।
চলতি বছর রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হয়েছেন ১২ জন। সবশেষ গত ৪ঠা ডিসেম্বর কালুখালীর সূর্য্যদিয়ায় ট্রেন ও ব্যাটারিচালিত ভ্যানের সংঘর্ষে ট্রেনে কাটা পড়ে দু’জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনারোধে প্রতিটি রেলক্রসিংয়ে বেরিয়ার অথবা গেটম্যানের দাবি স্থানীয়দের। এ ছাড়া রাজবাড়ী থেকে ট্রেনে কুষ্টিয়া, পোড়াদহ, রাজশাহী, খুলনা, টুঙ্গিপাড়া, ভাটিয়াপাড়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গা, গোয়ালন্দ ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করা যায়। ট্রেনে যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এসব রুটে যাত্রীদের সংখ্যা। কিন্তু সে তুলনায় এখনো রেলরুটে রয়ে গেছে অরক্ষিত রেলক্রসিং। যার কারণে মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। জানা গেছে, রাজবাড়ী জেলা অংশের রেলপথে বিভিন্ন স্থানে বৈধ ও অবৈধ মিলে মোট ৫৭টি রেলক্রসিং রয়েছে। যার মধ্যে বৈধ ৪৩টি। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ২১টিতে বেরিয়ার ও গেটম্যান রয়েছে এবং একটু কম গুরুত্বপূর্ণ ২২টিতে কোনো বেরিয়ার বা গেটম্যান নেই। এ ছাড়া অবৈধ ১৪টি রেলক্রসিং সম্পূর্ণ অরক্ষিত। যেগুলো স্থানীয়রা তাদের সুবিধার্থে জোরপূর্বক তৈরি করেছেন। পাংশা কুড়াপাড়ার বাসিন্দা সামসুল ইসলাম, আলমগীর ও আশরাফুল হাসান জানান, গত এক বছরে পাংশার কুড়াপাড়া রেলক্রসিং এলাকায় তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই ভ্যানচালক ও একজন মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। এসব স্থানে বেরিয়ার বা গেটম্যান জরুরি। তারা আরও বলেন, এখনো বেশির ভাগ মানুষ ট্রেনের সময়সূচি জানে না, যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। আর এখন ট্রেনগুলো খুব দ্রুত যায়, অনেক সময় বোঝাও যায় না। তারপর আবার রাস্তার দুই পাশে থাকে গাছগাছালি। যে কারণে ট্রেন এলে বোঝা যায় না। রাজবাড়ী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোমনাথ বসু বলেন, রাজবাড়ী থেকে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল করে এবং মাঝেমধ্যেই ট্রেনে কাটা পড়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। ট্রেনে কাটা পড়ে কেউ যেন মারা না যায়, সেজন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেন তারা। এ ব্যাপারে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল পাকশীর সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা অবৈধ রেলক্রসিং বন্ধে কাজ করছেন এবং ধাপে ধাপে অনেকগুলো বন্ধও করেছেন। অন্যান্য অবৈধ রেলক্রসিং বন্ধের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
পাঠকের মতামত
এটা জনগনের দায়িত্ত বোধের অভাব। সব যায়গায় সব ক্রসিং এ সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। আবার যাকে দায়িত্ত দেওয়া হবে সেও প্রত্যান্ত অঞ্চলে তার দায়িত্ত ঐ ভাবে পালন করবে না যে ভাবে করতে হয়। এই সব অঞ্ছলের জনগন যখন এই ক্রসিং গুলি পার হবে তখন নিজ দায়িত্তে লাইনের দু'পাশে দেখে তারপর পার হতে হবে। প্রত্যান্ত অঞ্চলে এমন কোন ভিড় ভাট্টা নেই যে দেখতে বা রাস্তায় চলতে অসুবিধা হওয়ার কথা। তা ছাড়া প্রতিটি ক্রসিং এ রেলের ইনজিন ড্রাইভার হুইসেল দেয়,সেটাও শুনতে হবে। সব সেবাই সব যায়গায় সরকারের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়, নিজ থেকেও কিছু সামান্য দায়িত্ত ঘাড়ে নিতে হয় তা'হলেই অনেক কিছু সমস্যার সমাধান করা যায়।