বাংলারজমিন
ছোট হয়ে আসছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
৭ ডিসেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবারদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটনকেন্দ্র পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কুয়াকাটা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। সাগরের অব্যাহত ভাঙনের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সৈকতের বালু ধুয়ে যাওয়ায় সৈকত কোথাও নিচু আবার কোথাও উঁচু হয়ে গেছে।
কুয়াকাটা ভ্রমণ প্রিয় মানুষের কাছে পছন্দের একটি স্থান। বিশেষ করে কুয়াকাটা সংলগ্ন ফাতরার চর বা টেংরাগিরি বনাঞ্চল, সমুদ্রের জলরাশি, জেলেদের মাছ ধরার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এবং একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করতে সবার ভালো লাগে। এ কারণে কুয়াকাটায় ছুটে আসেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পর্যটকের সংখ্যা আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়েছে। তবে সমুদ্রের অব্যাহত ভাঙন এবং যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে আকর্ষণীয় স্থানটি দিন দিন শ্রীহীন হয়ে পড়েছে। সরজমিন দেখা যায়, কুয়াকাটা সৈকতে যাওয়ার মূল সড়কের দুই পাশের এলাকা ভেঙে এবড়ো-খেবড়ো হয়েছে। তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে লাগোয়া পর্যটন পার্ক, মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। তাছাড়া সাগর থেকে ফুঁসে ওঠা প্রবল জোয়ারের কারণে সৈকতের পূর্ব পাশের বাগান, জাতীয় উদ্যান ও গঙ্গামতি এলাকায় বন বিভাগ সৃজিত বাগানের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ উপড়ে পড়েছে। সৈকতে যাওয়ার মূল সড়কটির অন্তত ২৫ ফুট সাগরে গিলে খেয়েছে।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুম্মান ইমতিয়াজ বলেন, ৩ বছর ধরে সৈকতের ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হলেও খুব একটা কাজে আসেনি। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো- বর্ষার সময়ে এ কাজগুলো করা হয়। এতে কেবল অর্থের অপচয় হয়েছে। এটি একসময় সাড়ে ৩ কিলোমিটার প্রশস্ত ছিল। ২০১০ সাল থেকে পর্যটন এলাকা তুলনামূলক বেশি ভাঙনের কবলে পড়েছে। বছরে গড়ে ১৫০ মিটার করে ভাঙলে গত ১৩ বছরে কমপক্ষে ১ হাজার ৯৫০ মিটার এলাকা সাগরগর্ভে বিলীন হয়েছে। বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম জানান, সমুদ্রের প্রবল জোয়ারে সৈকত এলাকায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ গাছ উপড়ে পড়েছে। এ বছর বর্ষা মৌসুমে সমুদ্রের কয়েক দফা জোয়ারের কারণে এসব বাগানের বেশি ক্ষতি হয়েছে। পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ বিন অলীদ বলেন, সাগরের প্রবল জোয়ারের কারণে ভাটার সময় কুয়াকাটার ওপরের স্তরের মিহি বালু গভীর সমুদ্রের দিকে চলে যাওয়ার কারণে সৈকতটি ক্রমেই ছোট ও সরু হয়ে যাচ্ছে। পাউবো কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় ৭৫৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তবে অনুমোদন হয়ে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে, তা পাউবো নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি।