শেষের পাতা
সিলেটে তৎপর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৫ ডিসেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবারসিলেটে মনোনয়ন দাখিল ও যাচাই বাছাই শেষ। এই সময়ে প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিপদে পড়েছেন। নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচনী আচরণবিধি পালন নিয়ে অনুসন্ধান করছে। ইতিমধ্যে সিলেটে ৪ প্রার্থীকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নোটিশ করা হয়েছে। এবং নোটিশের জবাব সশরীরে উপস্থিত হয়ে দিতে হচ্ছে প্রার্থীদের। এতে করে টনক নড়েছে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের। সাবধানে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারা। নির্বাচনের এই আচরণবিধি পালন বাধ্য করা অনুসন্ধান কমিটিতে রয়েছে বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা সিলেটের আদালতের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সিলেটে শুধু নির্বাচনী নয়, নগরে সাঁটানো সব ধরনের ব্যানার ফেস্টুন সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যেসব স্থানে পোস্টার ছিল সেগুলোও সরিয়ে ফেলা হয়। প্রার্থীরা জানিয়েছেন, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি এবারের নির্বাচনে তৎপর।
এ কারণে তারাও সতর্ক থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সিলেট-৫ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে গতকাল তলব করেছিলেন ওই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তা ও সিলেট যুগ্ম মহানগর জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ দিদার হোসাইন। গতকাল বেলা ১১টায় কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির অস্থায়ী কার্যালয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ প্রথম আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে মাসুক উদ্দিন লিখিত জবাব উপস্থাপন করেছেন।
এ সময় তার সঙ্গে আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন। শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মাসুক উদ্দিন আহমদ শতাধিক মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনের বিশাল বহর নিয়ে সিলেট থেকে জকিগঞ্জে যাওয়ার পথে মহড়া দেন এবং পথসভা করেন। এতে কানাইঘাট উপজেলার বাংলাবাজার থেকে জকিগঞ্জ সদর পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় নির্বাচনী অনুসন্ধান ক?মি?টির চেয়ারম্যানের গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় এবং তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮-এর ৬(ক), ৮(ঘ) ও ১২ ধারার বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। গতকাল জবাব দাখিল শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে এসে মাসুক উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন- ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে আমি তার লিখিত জবাব দিয়েছি। আমার জবাবে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
একই সঙ্গে সাবধান করেছেন যাতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।’ ওই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তার ব্যক্তিগত স্টাফ বদরুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রার্থী মাসুক উদ্দিন নিজে এসে তার জবাব দিয়ে গেছেন। এখন জবাব পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে জানানো হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী ও স্বতন্ত্র মোশাহিদ আলী। গত রোববার পৃথক চিঠিতে তাদের সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির (সিলেট-২) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তাইন বিল্লাহ। চিঠিতে মঙ্গলবার সিলেট জজ কোর্টের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ইসির তলব করা দু’জনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশাহিদ আলী মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। শফিকুর রহমান চৌধুরী নির্বাচনে শোডাউন দিয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। শফিকুর রহমান চৌধুরীর সমর্থকরা জানিয়েছেন, আজ তারা এ ব্যাপারে লিখিত জবাব দাখিল করবেন। প্রার্থী নিজে গিয়ে জবাব দিয়ে আসবেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইয়াহইয়া চৌধুরীকে শোকজ করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সিলেট ২ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তাইন বিল্লাহ তাকে শোকজ করেন। চিঠি সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলা রিটার্নিং অফিসার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় মিছিল সহকারে প্রবেশ করেন এহিয়া। যা ‘সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০’ এর বিধি ৮(খ) এর লঙ্ঘন। রোববার সকালে এমপি প্রার্থী এহিয়া সশরীরে হাজির হয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তার কাছে তার লিখিত জবাব দাখিল করেছেন। তাকেও প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।