ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

‘শরিফুলদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত’

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
১ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবার
mzamin

শরিফুল ইসলাম। একটি মহিলা মাদ্রাসার সহ-সাধারণ সম্পাদক। নিজেও একজন বেশভূষায় মওলানা। ‘আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশ’ ড. আসাদুল্লাহ আল গালিব অংশের জেলার নেতা। সম্প্রতি তিনি তার মাদ্রাসার ছোট মেয়ে শিক্ষার্থীকে তার বাসায় নিয়ে যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যৌন হয়রানির শিকার ওই শিশু তার অভিভাবক এবং শিক্ষকদের বলে দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনা বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার বৃ-কুষ্টিয়া এলাকায় ঘটেছে। মাদ্রাসার নাম শাজাহানপুরের চুপিনগর ইউনিয়নে বৃ-কুষ্টিয়া দারুল হাদিস সালাফিয়া তাহফিযুল কোরআন এতিমখানা ও মাদ্রাসা। অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের একডালা এলাকার মহিষামুড়া গ্রামের শফিউল ইসলাম (বিএস) এর ছেলে। তিনি শাজাহানপুরের বৃ-কুষ্টিয়া এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে শরিফুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসাটির সহকারী শিক্ষিকা ফাতেমা জহুরা। এ ছাড়াও যৌন হয়রানির শিকার ওই শিশুর পিতা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদেও একই অভিযোগ দিয়েছেন। মাদ্রাসার মহিলা শাখার একজন সহকারী শিক্ষিকা  অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘আমি বেশ কিছুদিন ধরে শুনতে পাই মাদ্রাসার সহ-সাধারণ সম্পাদক ও মহিলা মাদ্রাসা ভবনের মালিক শরিফুল ইসলাম মাদ্রাসার ভেতরে ইচ্ছা মতো যাতায়াত করেন। সেই সঙ্গে ছাত্রীদের মাঝেমধ্যেই খাওয়ার লোভ দেখিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলে। আমি আরও জানতে পারি শিক্ষিকাদের মধ্যে কতিপয় শিক্ষিকা মাঝে মাঝে শরিফুল ইসলামের ডাকে কিছু কিছু ছাত্রীকে শরিফুল ইসলামের বাসায় পাঠায়।  সেই ধারাবাহিকতায় গত ১১ই নভেম্বর রাত আনুমানিক ৮টার কিছু পরে শরিফুল ইসলাম শিক্ষিকা তামান্নাকে ফোন করে ওই ছাত্রীকে তার বাসায় ডেকে পাঠায়। অতঃপর শরিফুল ইসলাম ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন কৌশলে রুমে বন্দি করে যৌন হয়রানি করে। তারপর ছাত্রীটি মাদ্রাসায় এসে কান্না করলে শিক্ষিকারা বিষয়টি জানতে পারে। পরবর্তীতে ভয়ভীতি ও শপথ করে নিয়ে যৌন হয়রানির কথা বাবা-মাকে বলতে নিষেধ করে। তারপর কিছু ছাত্রীদের মুখে আমি ঘটনাটি জানতে পারি। সেই সূত্রে অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করার লক্ষ্যে ভিকটিম ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। সে আমার নিকট তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিষয়টি স্বীকার করে, যা আমি আমার মুঠোফোনে রেকর্ড করে রাখি। পুনরায় অত্র ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে সরাসরি তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে আমি মতবিনিময় করে আসি। পরের দিন ওই ছাত্রীর বাবা চোপিনগর ইউনিয়ন পরিষদে সশরীরে উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যান বরাবর শরিফুল ইসলামকে বিবাদী করে বিচার চেয়ে আবেদন করে। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি গত ২৭শে নভেম্বর মিটিংয়ে অভিযুক্তের বিচার না করে উল্টো আমাকে এবং আরেকজন সহকারী শিক্ষিকা মাহমুদাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় শাজাহানপুর উপজেলা নারী বিষয়ক কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানার সঙ্গে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমি শিশুটির সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমার কাছে পুরো ঘটনা খুলে বলেছে। শিশুটির কথা অনুযায়ী শরিফুল ইসলাম এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনেকটা নিশ্চিত। তিনি মনে করেন ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত ওই ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status