খেলা
‘ওয়ানডে’ ব্যর্থতার হিসাব টেস্টে মেলাতে চান না শান্ত
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৮ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার
ওয়ানডে বিশ্বকাপে স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স। ৯ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত দুই জয় আর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সান্ত্বনা নিয়ে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। এবার টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপের তৃতীয় চক্রের চ্যালেঞ্জ। রঙিন পোশাকের ব্যর্থতার পোস্টমর্টেম চলছে এখনো। ব্যর্থতার দায়ে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে সরিয়ে দেয়ার দাবি দেশের ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে বোদ্ধাদেরও। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের(বিসিবি) তা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই। তাই প্রধান কোচ হিসেবে পূর্ণশক্তিতেই বহাল আছেন হাথুরু। টেস্ট সিরিজেও দায়িত্ব পালন করছেন। তবে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নেই। কারণ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তিনি। আপাতত ক্রিকেট রেখে তিনি ব্যস্ত রাজনীতির ময়দানে। যে কারণে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ভারতে বিশ্বকাপেও সাকিবের পরিবর্তে দুটি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই টেস্ট সিরিজের আগে তার সামনেও সেই ব্যর্থতার প্রশ্ন হাজির। যদিও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ওয়ানডের ব্যর্থতার হিসাব টেস্টে মেলাতে একেবারেই নারাজ। বর্তমান নিয়ে ভাছেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট করে কী শিখেছি বলা মুশকিল। ওটা ওয়ানডে ছিল, এটা টেস্ট। বিভিন্ন সিচুয়েশনে আরও ভালো কীভাবে করা যেত এসব ছোট ছোট বিষয়। নিউজিল্যান্ড খুবই ভালো দল। টেস্টে অনেক চ্যালেঞ্জিং ও শক্তিশালী দল। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা, স্পিনার বা ব্যাটিং চিন্তা করলে আমরা অবশ্যই ভালো দল। পরিকল্পনা কাজে লাগালে এই দলকে হারানো সম্ভব।’
টেস্ট ক্রিকেটে এখনো পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ। একশ’রও বেশি ম্যাচ খেলে জয় এসেছে মাত্র ১৮টিতে। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি জয়ও আছে। এখন পর্যন্ত দেশ-বিদেশ মিলে ১৭ বার মুখোমুখি হয়ে কিউইদের বিপক্ষে এই একটি জয়ই সম্বল টাইগারদের। তবে ঘরের মাঠে তিনবার ড্র করার কৃতিত্বও আছে। দেশের মাটিতে খেলা বলে শান্ত যখন আত্মবিশ্বাসী তখন বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ ভুলে গেলে কি করে হয়। নিউজিল্যান্ড দল এখন এশিয়ার মাটিতে আনাড়ি নয়। ভারতের মাটিতে তারা ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছে সেমিফাইনালে। আর টেস্টে তারা তো আরো বেশি শক্তিশালী। ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ী। তাই তামিম ইকবাল, সাকিবদের ছাড়া হাথুরুর নতুন ধাচের বাংলাদেশ দলের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে।
৫ বছর পর সিলেটে টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ দল। সবশেষ ২০১৮ এর নভেম্বরেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল এই মাঠে। ফলটা সুখকর নয়, এখানে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরেছিল ১৫১ রানের বড় ব্যবধানে। তারওপর নয়া কিউরেটর এখানে যে উইকেট বানিয়েছেন তা দলের জন্য একেবারেই অচেনা। যে কারণে গতকাল অনুশীলনের সময়টা জুড়ে অধিনায়ক, প্রধান কোচ, নির্বাচকরা বার বার উইকেট দেখেছেন। টিম ম্যানেজম্যান্ট লম্বা সময় উইকেট নিয়েই আলোচনা করে কাটিয়েছে। যে কারণে উইকেট নিয়ে ম্যাচের আগে শান্ত তেমন কিছু বলতে রাজি হননি। যা জেনেছেন তা রাখতে চান নিজেদের মধ্যেই। তিনি বলেন, ‘এখানে (সিলেট) টেস্ট খুব কম হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ম্যাচ যা হয়েছে ধারণা বলতে এতটুকুই। উইকেট নিয়ে খুব লম্বা আলোচনা হয়েছে তা না। উইকেট কীরকম বোঝার চেষ্টা করেছি। হোম এডভান্টেজ এই কথা বলতে চাই না। প্রত্যেক দলই যখন হোমে খেলে অটোমেটিক কিছু এডভান্টেজ থাকে। আমরা সেটা নেওয়ার চেষ্টা করবো। কাল (মঙ্গলবার) ম্যাচ শুরু হলে আরও স্পষ্ট বোঝা যাবে, উইকেট কেমন আচরণ করছে। তবে কিছুটা হলেও ধারণা হয়েছে। কী ধরনের উইকেট হবে এটা বলা তো ঠিক হবে না।’
অন্যদিকে নিজের নেতৃত্ব নিয়ে বেশ আশাবাদী শান্ত। তিনি বলেন, ‘ক্যাপ্টেন তো ক্যাপ্টেনই। আমার মনে হয় ঐ সামর্থ্য আমার আছে। এটা আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস। যে-ই অধিনায়ক হবে যদি লম্বা সময়ের জন্য হয় দল নিয়ে তার পরিকল্পনা সাজাতে সুবিধা হবে। সামনে যে-ই আসবে যদি পর্যাপ্ত সুযোগ পায় অনেক ভালো কিছু করবে। অধিনায়ক লম্বা সময় ধরে থাকলে পরিকল্পনা করতে সুবিধা হয়, আশা করছি বোর্ডও লম্বা সময়ের জন্য দিবে। তবে আমার মনে হয় না খেলোয়াড়রা এটা নিয়ে এত কিছু ভাবছে। যে-ই অধিনায়ক হবে সে তার দায়িত্ব পালন করবে। প্রত্যেকে যার যার ভূমিকা পালন করলে দল ভালো অবস্থানে থাকবে।’