ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

খেলা

‘মেসি-ম্যারাডোনার মিশ্রণে গড়া’ কে এই এচেভেরি

স্পোর্টস ডেস্ক
২৬ নভেম্বর ২০২৩, রবিবার
mzamin

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলে বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ৩-০ গোলে জয়। দু’দলে ব্যবধান গড়লেন এক আর্জেন্টাইন খুদে ফুটবলার। শুক্রবার অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে আর্জেন্টিনাকে স্মরণীয় এক জয় এনে দেন ক্লদিও এচেভেরি। হ্যাটট্রিকের পর থেকেই সব চোখ ১০ নম্বর জার্সিধারী এচেভেরির ওপর। যার মধ্যে অনেকেই দেখছেন ভবিষ্যতের  লিওনেল মেসিকে। ‘পরবর্তী মেসি’র তকমাও পেয়ে গেছেন এচেভেরি। যদিও তাকে অনেকে আদর করে ডাকেন ‘খুদে শয়তান’।

মেসির সঙ্গে তার তুলনা যে মোটেই বাড়াবাড়ি নয়, সে প্রমাণ তিনি দিলেন বড় মঞ্চে গরম ম্যাচে। ব্রাজিলের বিপক্ষে এচেভেরির গোলগুলিও ছিল দেখার মতো। ২৮ মিনিটে তিনি প্রথম গোলটি করেন মাঝমাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায়। ৫১ মিনিটে করা গোলটিতে বল নিয়ন্ত্রণে অসামান্য দক্ষতা দেখান এচেভেরি। বাঁ প্রান্ত থেকে পাস পেয়ে দৌড়ের ওপর বল এক টাচে সামনে ফেলে ব্রাজিলের তিন ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বল টেনে দুরুহকোণ থেকে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে গোল করেন এচেভেরি।

আর ৭১ মিনিটে করা হ্যাটট্রিক গোলটা ছিল প্রথাগত দক্ষিণ আমেরিকান স্ট্রাইকারদের মতোই। মাঝমাঠ থেকে থ্রু পাস পেয়ে গায়ের সঙ্গে লেপটে থাকা ব্রাজিলের এক ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে গোলকিপারকেও একা পেয়ে যান এচেভেরি। তাকেও কাটিয়ে গোল করতে কোনো অসুবিধাই হয়নি তার। দুর্দান্ত এই হ্যাটট্রিকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে এচেভেরিকে নিয়ে আলোচনা। 

ডিয়েগো ম্যারাডোনা এবং লিওনেল মেসির সমন্বয়ে গড়া- এচেভেরিকে নিয়ে এমন কথা বলেছেন রিভার প্লেটের সাবেক কোচ ড্যানিয়েল ব্রিজুয়েলা। রিভার প্লেটের জন্য এচেভেরিকে আর্জেন্টিনার রেসিস্টেনসিয়া শহর থেকে খুঁজে বের করে এনেছিলেন এই জহুরী কোচ । ২০২২ সালে রিভারের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া ব্রিজুয়েলা এচেভেরিকে নিয়ে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসকে বলেন, ‘আজ আমি ততটাই রোমাঞ্চিত, যতটা আমি রেসিস্টেনসিয়াতে প্রথমবার তাকে দেখে হয়েছিলাম। সব সময় সে এমনই ছিল। রিভারের হয়ে সে এভাবেই খেলেছে। এভাবেই সে খেলেছিল বোকার (জুনিয়র্সের) বিপক্ষে। এই ধরনের ম্যাচ খেলতে সে সব সময় খুব পছন্দ করে। এসব ম্যাচ তাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। তখন সে মাত্রই এসেছিল, তাকে নিয়ে একজন কোচকে আমি বলেছিলাম, “সে ম্যারাডোনা ও মেসির মিশ্রণ।” তার মধ্যে এ দুজনের মেধা এবং ব্যক্তিত্ব আমি দেখেছিলাম।’

এচেভেরির শক্তির জায়গাগুলো নিয়ে ব্রিজুয়েলা বলেন, ‘সে এমন একজন যে কঠিন চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে। আমি যা বলতে চাই, তা হলো আমাদের দলের ১০ নম্বর জার্সির ভবিষ্যৎ নিরাপদ হাতেই আছে। এটা খুবই দারুণ ব্যাপার।’

এচেভেরিকে আবিষ্কারের কৃতিত্বটা এককভাবে নিতে চানা না ব্রিজুয়েলা। তিনি বলেন ‘একটা দল এর পেছনে ছিল। আমাদের অনেকেই ছিল। আমাদের এখানে সারা দেশের মানুষ কাজ করেছে। এটা একটা দলের কাজের ফল। এ কৃতিত্ব শুধুই ড্যানিয়েল ব্রিজুয়েলার নয়। তাই আমি রিভারের রিক্রুটে যারা কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, ক্লদিও (এচেভেরি) এবং অন্য ছেলেদের নিয়ে সবকিছু ভালোভাবেই এগিয়েছে। আমি এটা নিয়ে খুবই আনন্দিত।’

ব্রিজুয়েলা বলেন, ‘রিভারে আমরা শহরের পর শহর ঘুরে বেড়াতাম। রেসিস্টেনসিয়াতে আমরা ২০০২-২০০৩ সালে জন্মানো খেলোয়াড়দের দেখেছিলাম। এর চেয়ে ছোটদের রাখা হয়েছিল শেষের দিকের জন্য। শেষের একটি ম্যাচেই ক্লদিওকে দেখা গিয়েছিল। সে দারুণভাবে আমাদের মনোযোগ কেড়েছিল। আমরা তাকে মূল্যায়ন করতে শুরু করেছিলাম এ জন্য নয় যে সে দারুণ এক প্রতিভা ছিল। তার মধ্যে আরও কিছু বিষয় ছিল, যে কারণে আমরা তাকে রিভারে নিয়ে এসেছিলাম। সে সময় তার বয়স ছিল ৯ বছর।’

এর মধ্যে গত এপ্রিলে এচেভেরির ইউরোপের ফুটবলে আসা নিয়ে গুঞ্জন শোনা যায়। দলবদলবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ফিচাহেস বলেছিল, রিভার প্লেটের এই বিস্ময়বালকের ওপর চোখ রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির। ১৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে নিজেদের করে নেয়ার চেষ্টায় আছে পিএসজিও। 
 

খেলা থেকে আরও পড়ুন

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status