শেষের পাতা
বঙ্গবন্ধুর আদর্শই আমার প্রথম এবং শেষ ঠিকানা
স্টাফ রিপোর্টার
২৫ নভেম্বর ২০২৩, শনিবার
স্কুল জীবনে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। এরপর সিলেটের তিনটি কলেজে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ভিপি-জিএস হন। ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি। আওয়ামী লীগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে হন সাংগঠনিক সম্পাদক। নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে অভিষেক হয় জাতীয় সংসদে। একাদশ সংসদে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এমপি হয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে তিনি কথা বলেছেন মানবজমিনের সঙ্গে। জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু’র রাজনৈতিক আদর্শ ও তার রাজনৈতিক লক্ষ্যই প্রথম এবং শেষ ঠিকানা।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন আমাকে নিয়ে নানা অপপ্রচার চালিয়ে আমার দল আওয়ামী লীগের দায়িত্ব থেকে দূরে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার কারণেই আমাকে দলচ্যুত করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার বঙ্গবন্ধুপ্রেমী দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তাদেরকে আমি আশ্বস্ত করেছি, বলেছি উদ্বিগ্ন্ন না হতে। তাদের জানিয়েছি, বঙ্গবন্ধুর কন্যাদের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। তারাও আমার ব্যাপারে সহানুভূতিশীল ও ইতিবাচক। আওয়ামী লীগ ও নৌকা মার্কা ছাড়া আমি নির্বাচনে যাবো না এ ব্যাপারে তারা অবগত আছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মৌলভীবাজার স্কুল ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক থেকে ৫৪ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেই রাজনীতি করছি, জনগণের সঙ্গে আছি। সিলেটের ইতিহাসে শহরের তিনটি তৎকালীন কলেজের ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্তসহ ভিপি ও জিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শেখ মুজিব থেকে জাতির পিতা বানাতে আমাদের শ্রম, ভূমিকা ও অংশীদারিত্ব রয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী প্রতিশোধ যুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছি আজীবন। দল ও দেশের স্বার্থে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করার ক্ষেত্রেও যৎসামান্য ভূমিকা রাখতে পেরেছিলাম বলে এখন গর্ববোধ করি। তার স্নেহ, ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সহযোগিতার কারণেই এ পর্যায়ে এসেছি। আগামীতেও তার স্নেহ, ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং সহানুভূতি নিয়ে জনগণের স্বার্থে ভূমিকা রাখতে চাই।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আমি পরিস্থিতির কারণে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে নির্বাচন করেছিলাম। আমি কোনো দলে যোগ দেইনি। ওই নির্বাচনের পর ৭ই মার্চ আমিই প্রথম ঐক্যফ্রন্টের এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছিলাম। আমার শপথ গ্রহণের পর অন্যরা শপথ নেন। আমি এই সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে তখন ভিন্ন পরিস্থিতিও হতে পারতো। আওয়ামী লীগ আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করেনি। আমিও আওয়ামী লীগ ছেড়ে অন্য কোনো দলে যোগ দেইনি।
তিনি বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে ডাকসু’র ভিপি নির্বাচিত হওয়ার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধু অনুসারীদের বিজয়ের ধারা শুরু হয়েছিল। ভবিষ্যৎ রাজনীতির প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার শেষ কথা হচ্ছে, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনীতিতে জনগণের পক্ষে ভূমিকা পালন করতে চাই। এর বাইরে আমার আর কোনো চিন্তা নেই। উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে সুলতান মনসুর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে নির্বাচিত হন ডাকসু’র ভিপি। তিনিই প্রথম নানা প্রতিকূলতাকে অগ্রাহ্য করে, অস্ত্রের মুখে জীবনবাজি রেখে ডাকসু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি উত্তোলন করেন। স্বাধীনতার পর তিনি প্রথম ছাত্রলীগ সভাপতি হিসেবে ডাকসু ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিলেন তিনি।