প্রথম পাতা
মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু
রওশনপন্থিদের নিয়ে জাপায় কৌতূহল
স্টাফ রিপোর্টার
২১ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার
নির্বাচন নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি জাতীয় পার্টি (জাপা)। দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানানো হবে- এমনটা বলে আসছেন নেতারা। সর্বশেষ গতকাল দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু জানিয়েছেন, নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়টি ৩০শে নভেম্বরের আগেই জানাবেন চেয়ারম্যান জিএম কাদের। এমন অবস্থার মধ্যে গতকাল থেকে দলটি দলীয় মনোনয়ন বিক্রি শুরু করেছে। প্রথম দিনে ফরম বিক্রি হয়েছে ৫৫৭টি। তবে কৌতূহল দেখা দিয়েছে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ ও তার অনুসারীদের নিয়ে। রওশন এরশাদ ও তার অনুসারী নেতাদের কেউ গতকাল দলের বনানী কার্যালয় থেকে মনোনয়পত্র নেননি। গতকাল রওশন এরশাদের মুখপাত্রের বরাতে এক বার্তায় জানানো হয় রওশন এরশাদের পক্ষে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র বিক্রির বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত জানানো হবে। রওশনপন্থিদের পক্ষ থেকে এই বার্তা আসার পর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন কৌতূহল দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি নিয়ে নতুন কোনো জটিলতা তৈরি হতে পারে।
গতকাল সকাল ১০টায় মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরুর কথা ছিল।
গতকাল পার্টি অফিসে উপস্থিত থাকলেও মনোনয়ন ফরম কেনেননি মহাসচিব চুন্নু।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আছি। আমরা একটা পরিবেশ আশা করেছিলাম যে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে সেই আস্থা এখনও পুরোপুরি আসে নাই। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন একটা শিডিউল করেন। জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল। আমরা আশা করেছি, একটা আনন্দমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। দেশের মানুষ সে নির্বাচনে স্বতঃফূর্ত ভোট দিতে পারবে। সকল দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমরা সেই নির্বাচনে যাওয়ার প্রক্রিয়া আরম্ভ করেছি। নির্বাচনে যাওয়ার জন্য প্রাথমিক কাজগুলোর সর্বশেষ হলো মনোনয়ন ফরম বিক্রি। আমাদের পার্লামেন্টারি বোর্ড প্রার্থী বাছাই করবে তারপর প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।
নির্বাচনে যাওয়ার জন্য যা যা করতে হয় তা জাতীয় পার্টি করছে উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, খুব শিগগিরই আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবো। মহাজোটে নয়, এবার এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে জাতীয় পার্টি। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, ভোটাররা যেন নিজের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন কেন্দ্রে এসে। এমন আস্থা যাতে সৃষ্টি হয় আমরা সংশ্লিষ্ট মহলকে সেই অনুরোধ জানাই।
নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চুন্নু বলেন, সরকারি দল ও বিএনপি কেউ আগ্রহী নয় সংলাপে, তবে এখনও সময় আছে আলোচনায় বসার।
ওদিকে পার্টি অফিসে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নেচে গেয়ে মনোনয়ন ফরম কিনতে আসেন নেতাকর্মীরা। ব্যানার-পোস্টার, কাঠের তৈরি লাঙ্গল নিয়ে আসেন কার্যালয়ে। এ সময় তারা জাতীয় পার্টি ও তাদের নেতার পক্ষে স্লোগান দেন।
বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রত্যাশী বরিশাল বিভাগীয় নেতা মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের লড়াই আওয়ামী লীগের সঙ্গে। নির্বাচন করলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবো। বরিশাল-১ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কেনেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট সেরনিয়াবাত সেকেন্দার আলী। তিনি বলেন, একা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ পার পাবে না। সহযোগী লাগবেই তাদের। আমরা যদি নির্বাচনে যাই আমাদের হটিয়ে দিতে পারবে না তারা। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যারা এখনো নির্বাচনের বাইরে আছে তারাও নির্বাচনে আসবে।
প্রথমদিনে উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে কো- চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান রতনা এমপি, রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, আতিকুর রহমান আতিক, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি মনোনয়ন ফরম গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার নির্বাচনী আসন রংপুর-১’র জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল মামুন।
প্রতিটি ফরমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। মোট তিনদিন ফরম বিক্রির কথা থাকলেও সময় বাড়ানো হয়েছে দু’দিন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেনা যাবে ফরম। ২৪শে নভেম্বর থেকে শুরু হবে সাক্ষাৎকার। মনোনয়ন ফরম প্রত্যাশীদের ২৪শে নভেম্বর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ, ২৫শে নভেম্বর খুলনা ও বরিশাল বিভাগ, ২৬শে নভেম্বর ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং ২৭শে নভেম্বর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সাক্ষাৎকার নেয়া হবে।
এদিকে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ মনোনয়ন ফরম কিনেছেন বলে গুঞ্জন শোনা যায়। তবে ময়মনসিং বিভাগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা জানান, সকালে রওশন এরশাদের নাম লেখা একটি ফরম নিয়ে কয়েকজন আসেন। তারা ছবিও তোলেন। কিন্তু কেউ টাকা জমা না দিয়েই চলে যান। এই বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতার একান্ত সচিব মো. মামুন হাসান স্বাক্ষরিত এক বার্তায় বলা হয়, ফরম কেনার তথ্যটি ভুয়া।
পাঠকের মতামত
নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় বেইমান হবে ।
জাতীয় দালাল পার্টি।
বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বেইমান দল।যাদের কোনো কথারই ঠিক নাই
মন্তব্য করুন
প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন
প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত
চোখ আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকার দিকে/ কৌতূহল, নানা আলোচনা
টাইমস অব ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয়/ শেখ হাসিনাকে দিল্লির বলা উচিত...

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]