ঢাকা, ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

প্রথম পাতা

এসএসসিতে কমলো পাসের হার

স্টাফ রিপোর্টার
১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
mzamin

২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর কমেছে পাসের হারসহ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা। চলতি বছর পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ শিক্ষার্থী। গত বছর এই পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৩ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। বরাবরের মতোই এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। এবার বাড়তি কোনো নম্বর না দেয়ায় কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এবার কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি প্রতিটি বোর্ডের ফলাফলের সারমর্ম তুলে ধরে।

সবচেয়ে বেশি পাস করেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এরপর আছে যশোর বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, কারিগরি বোর্ডে ৭৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭২ দশমিক ০৭ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৬৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৬৮ দশমিক ০৯ শতাংশ, ঢাকা বোর্ডে ৬৭ দশমিক ৫১ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৬৭ দশমিক ০৩ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৫৮ দশমিক ২২ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৫৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এবার সর্বমোট ২ হাজার ২৯১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণ করেছে ১৮ হাজার ৮৪টি প্রতিষ্ঠান। 

এবার সবগুলো শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন শিক্ষার্থী। তার মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৩৭ হাজার ৬৮ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ১১ হাজার ৮৪৩ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৯ হাজার ৯০২ জন, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৬ হাজার ৬৭৮ জন, যশোর বোর্ডে ১৫ হাজার ৪১০ জন, বরিশাল বোর্ডে ৩ হাজার ১১৪ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ১৫ হাজার ৬২ জন, সিলেট বোর্ডে ৩ হাজার ৬১৪ জন ও রাজশাহী বোর্ডে ২২ হাজার ৩২৭ জন। 

সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে মেয়েরা। এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মেয়েদের সংখ্যা ছিল ৭,৭৯,৭৫৭ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫,৫১,০৭৭ জন। মেয়েদের মধ্যে পাসের হার ৭০. ৬৭ শতাংশ। অন্যদিকে, এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছেলেদের সংখ্যা ছিল ৬,৯৯,৫৫৩ জন। ছেলেদের মধ্যে পাস করেছে ৪,৫৫,৪৭৭ জন। ছেলেদের মধ্যে পাসের হার ৬৫.১১ শতাংশ। 
এ বছর সকল শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী ৩.৭৯% বেশি পাস করেছে এবং ৮,২০০ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৭৩ হাজার ৬১৬ জন এবং ছাত্রের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৪১৬ জন। অর্থাৎ ছেলেদের তুলনায় ৮ হাজার ২০০ জন মেয়ে জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ১৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৫৮ হাজার ২৩৮ এবং ছাত্রী ৬৬ হাজার ৭৮০ জন ছাত্র। অর্থাৎ জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে ছাত্রীরা।
দাখিলে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ৯ হাজার ৬৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৪ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ৪ হাজার ১৭৯ জন। অর্থাৎ মাদ্রাসা বোর্ডে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রয়েছে ছাত্ররা। ভোকেশনালে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ৪ হাজার ৯৪৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র দুই হাজার ২৯১ এবং ছাত্রীর সংখ্যা দুই হাজার ৬৫৭ জন।

এবারের পরীক্ষায় ১৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউই পাস করেনি। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে। এ বছর ৯৮৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২৯৬৮। ফলে আরও দেখা যায়, ৬ লাখ ৬৬০ জন শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এর মধ্যে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৭১৬ জন ছাত্র এবং ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৪ জন ছাত্রী।

প্রবাসে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪২৭ জন শিক্ষার্থী। পাস করে ৩৭৩ জন। সে হিসাবে প্রবাসে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমার বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবির বলেন, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় কাউকে গ্রেস মার্কস বা বাড়তি নম্বর দেয়া হয়নি। যে ফলাফল আমরা প্রকাশ করলাম, এটি প্রকৃত ফল। মেধার প্রকৃত মূল্যায়নের শতভাগ প্রচেষ্টা করা হয়েছে। পরীক্ষকদেরও সেভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। ফলে এটিই প্রকৃত ও সত্য ফলাফল। এ নিয়ে সন্দেহ-সংশয় ও ক্ষোভের সুযোগ নেই।

ঢাকা বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে ফলাফল তুলে ধরেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে কী হয়েছে, কীভাবে ফল তৈরি করা হয়েছে; তা আমরা বলবো না। এখন যে ফল আমরা দিয়েছি, সেটিই প্রকৃত। উত্তরপত্র যথাযথভাবে মূল্যায়নের পর যা এসেছে, সেটি উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে আমাদের কোনো হাত নেই। আমাদের ওপর মহল থেকে কোনো ধরনের চাপ ছিল না। আমাদের বলা হয়েছে যে রেজাল্ট হবে, সেটিই দিতে হবে। আমরাও পরীক্ষকদের এ অনুরোধ জানিয়েছি। তাদের যথার্থভাবে খাতা মূল্যায়ন করার জন্য বলা হয়েছে।

প্রকাশিত ফলাফলে কোনো পরীক্ষার্থী অসন্তুষ্ট হলে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে। এ আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে শুক্রবার থেকে। এ প্রক্রিয়া চলবে আগামী ১৭ই জুলাই পর্যন্ত।

আবেদন করতে হবে টেলিটক সিম দিয়ে, ফি ১৫০ টাকা। 
 

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status