প্রথম পাতা
বই পড়ে সময় কাটালেন
ড. ইউনূসের এজলাসে ৪ ঘণ্টা
রাশিম মোল্লা
২১ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানিতে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টার বেশি সময় আদালতের এজলাসে কাটিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সময় তিনি যুক্তিতর্ক শুনে এবং বই পড়ে সময় কাটিয়েছেন।
সোমবার বেলা ১২টা ২০ মিনিটে চতুর্থ বারের মতো শ্রম আদালতে হাজির হন তিনি। ছয়তলা সিঁড়ি বেয়ে এজলাসে আসেন ১২টা ২৫ মিনিটে। আদালতকক্ষের ভেতরে আসনের দ্বিতীয় সারিতে বসে শুনানির যুক্তিতর্ক শোনেন ড. ইউনূস। নিজের মামলার কার্যক্রম শুরুর আগে দীর্ঘ সময় তিনি বই পড়ে সময় কাটান। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের মামলার কার্যক্রম শুরু হয় দুপুর ১টা ২ মিনিটে। এ সময় তাকে মনোযোগ দিয়ে যুক্তিতর্ক শুনানি শুনতে দেখা যায়। দুপুরে বিরতি দিয়ে সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী যুক্তিতর্ক চলে। এই পুরো সময় তাকে বই পড়তে দেখা যায়। এজলাসে থাকা গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম মানবজমিনকে জানান, ড. ইউনূস স্যার যেখানেই যান সঙ্গে বিভিন্ন বই নিয়ে যান।
আদালতে তার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ ও এডভোকেট এসএম মিজানুর রহমান। আদালতকে ড. ইউনূসের আইনজীবী বলেন, এই মামলায় ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় এক নম্বর আসামি হওয়ার কথা গ্রামীণ টেলিকমের। কারণ আইনে প্রতিষ্ঠান একটি ব্যক্তি। কোনো কিছু হলে ব্যক্তির মতো প্রতিষ্ঠানও দায়ী থাকে। অথচ প্রতিষ্ঠানকে আসামি না করে আক্রোশ থেকে ড. ইউনূসকে আসামি করা হয়েছে। পরে আদালত আগামী ২৬শে নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানির নতুন দিন ধার্য করেন শ্রম আদালতের বিচারক।
গত ১৬ই নভেম্বর গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। শুনানিতে অংশ নিতেও আদালতে হাজির ছিলেন ড. ইউনূস। ওইদিন আদালত থেকে বেরিয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, গত তারিখে আমি বলেছিলাম ড. ইউনূসের মামলাটি মেট্রোরেলের চেয়েও ১০ গুণ বেশি গতিতে তারিখ পড়ছে। আজকে বলছি- মেট্রোরেল নয়, বোয়িং বিমানের চেয়েও ১০ গুণ বেশি গতিতে এই মামলায় তারিখ পড়ছে। এক মাসে এই মামলার ৫টি ডেট দিয়েছেন আদালত। আর মাত্র তিন দিন পর অর্থাৎ ২০শে নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন। অথচ এই আদালতেই ৫ বছর, ১০ বছর আগের মামলা এখনো পড়ে আছে। সাক্ষ্য হচ্ছে না। ফলে বিচার পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। মামলাটির কার্যক্রম চলছে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে।
২০২১ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ড. ইউনূস সহ চার জনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়।