খেলা
মানবজমিন এর চোখে ফ্লপ একাদশ
সৌরভ কুমার দাস
২১ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার
বিশ্বকাপ আসর একজন খেলোয়াড়ের কাছে নিজেকে চেনানোর সবচেয়ে বড় মঞ্চ। ৪ বছর ধরে ক্রিকেটাররা এই মঞ্চে পারফর্ম করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন। অনেকের প্রতি তার দল, সমর্থকদের প্রত্যাশাও থাকে আকাশ ছোঁয়া। তবে নিশ্চিতভাবেই সবাই প্রত্যাশা মেটাতে পারেন না। এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও এমন ক্রিকেটারের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডের জস বাটলার বা পাকিস্তানের বাবর আজম সবাই হতাশ করেছেন।
প্রত্যাশা ও পারফর্মেন্স বিচারে এবারের বিশ্বকাপের ‘ফ্লপ’ একাদশ সাজিয়েছে দৈনিক মানবজমিন। একাদেশ থাকতে পারতেন বাবর আজম-মোহাম্মদ নবীরাও। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম ৯ ম্যাচে করেছেন ৩২০ রান। তবে দলের জন্য খুব কাজে দেয়নি তা। ৯ ম্যাচের পাঁচটিতে হেরে আসর শেষ করে ১৯৯২’র চ্যাম্পিয়নরা। আফগানিস্তানের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীর পরিসংখ্যানটা ভ্কতদের জন্য ভয়াবহ। আসরে ৯ ম্যাচে তার সাকুরে্য সংগ্রহ ৫৫ রান। বল হাতে শিকার ৫ উইকেট। এবারের বিশ্বকাপে জলে উঠতে পারেনি।
মানবজমিনের চোখে এবারের বিশ্বকাপের ফ্লপ একাদশ-
জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড)
এই একাদশে ওপেনার হিসেবে রাখা হয়েছে ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টোকে। এবারের বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে পুরো সময়েই নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন তিনি। ৯ ম্যাচে ২৩.৮৮ গড়ে জনি করেন মাত্র ২১৫ রান। যেটা একজন ওপেনারের কাছ থেকে মোটেও কাম্য নয়।
টেম্বা বাভুমা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
বিশ্বকাপের আগেও স্বপ্নের ফর্মে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ভারত আসার আগে ১০ ম্যাচে তার রান ছিল ৬৩৭ রান। অথচ সেই বাভুমা বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচ করলেন ১৮.১২ গড়ে ১৪৫ রান। নিশ্চিতভাবে তিনি এবারের আসরে অন্যতম সেরা বাজে ওপেনার।
জো রুট (ইংল্যান্ড)
২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন জো রুট। কিন্তু এবারের টুর্নামেন্টে পুরোপুরি ব্যর্থ হন তিনি। ৯ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৩০.৬৬ গড়ে ২৭৬ রান।
স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়া নিজেদের ষষ্ট বিশ্বকাপ জিতলেও ব্যাট হাতে পুরো আসরেই নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন স্টিভেন স্মিথ। ফাইনালেও হাসেনি তার ব্যাট। পুরো আসরে ১০ ম্যাচে ৩৩.৫৫ গড়ে তিনি করেন ৩০২ রান।
জস বাটলার (ইংল্যান্ড-অধিনায়ক)
২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। ওই সময় অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যানের অন্যতম বড় অস্ত্র ছিলেন জস বাটলার। অথচ এরবারের আসরে রান করতেই যেন ভুলে গেলেন তিনি। ৯ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৫.৩৩ গড়ে ১৩৮ রান। জস এই একাদশের অধিনায়কত্ব করবেন।
সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ-সহ অধিনায়ক)
২০১৯ বিশ্বকাপটা স্বপ্নের মতো কাটান সাকিব আল হাসান। তবে এবার অধিনায়ক হিসেবে খেলা সাকিবের বিশ্বকাপ কেটেছে দুঃস্বপ্নের মতো। ৭ ম্যাচে ২৬.৮৬ গড়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৮৬ রান। সাকিবকে এই একাদশের সহ অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সূর্যকুমার যাদব (ভারত)
দ্রুত রান তোলার তার সুনাম চারদিকে। অথচ বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ সময়েই এই কাজে ব্যর্থ ভারতের সূর্যকুমার যাদব। ফাইনালেও ক্লাব ক্রিকেটারের মতো আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। ৭ ম্যাচ খেলা সূর্য করেন ১৭.৬৬ গড়ে ১০৬ রান।
মঈন আলি (ইংল্যান্ড)
এবারের আসরে ইংল্যান্ডের ভরাডুবির অন্যতম কারণ মঈন আলীর অফ ফর্ম। ৬ ম্যাচে ১৫.৮৩ গড়ে রান করেছেন মাত্র ৯৬। আর সমান ম্যাচে তার শিকার ৫ উইকেট।
হারিস রউফ (পাকিস্তান)
এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের অন্যতম হতাশার নাম হারিস রফউ। বল হাতে ১৬ উইকেট পেলেও মিডল আর ডেথ ওভারে দেদারসে রান খরচ করেন তিনি। ফলে উইকেটগুলো দলের কাজে খুব একটা আসেনি।
মার্ক উড (ইংল্যান্ড)
জোরে বল করতে পারেন, মিডল ওভারে উইকেট এনে দিতে পারেন, এটাই ইংলিশ পেসার মার্ক উডের বড় গুন। এবারের বিশ্বকাপে যেটার কোনোটাই করতে পারেননি তিনি। ৭ ম্যাচে নিয়েছেন মাত্র ৬ উইকেট।
ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)
নতুন বলে উইকেট এনে দেওয়ার জন্য সুনাম কুড়িয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে উইকেট বা প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্ক তৈরি করা এর কোনোটাই করতে পারেননি তিনি। যদিও বল হাতে নিয়েছেন ১৪ উইকেট।