বাংলারজমিন
রাজশাহীতে বিএনপি’র মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, গ্রেপ্তার ৫
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে
২০ নভেম্বর ২০২৩, সোমবার
রাজশাহীতে বিএনপি’র মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ৮টার দিকে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় বিএনপি’র ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে হরতালের কারণে বন্ধ ছিল দূরপাল্লার বাস চলাচল।
জানা যায়, ঘোষিত হরতালের সমর্থনে শনিবার সন্ধ্যার পর রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা। এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
প্রত্যক্ষর্শীরা জানান, মিছিল বের করার কিছুক্ষণ পর পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশার ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে তিনি আহত হন। এদিকে মিছিলে আসা দলটির ৫ সদস্যকে পুলিশ আটক করে। একপর্যায়ে পুলিশের ধাওয়ার মুখে বিভিন্ন দিকে চলে যান বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে আরএমপি’র বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে মিছিল থেকে বিএনপি’র ৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এদিকে গতকাল হরতালের প্রথম দিন রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল করলেও ছিল না কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক যাত্রী। সরজমিন নগরীর রেলগেট এলাকায় দেখা যায়, চাঁপাইনবাগঞ্জ বাস কাউন্টারের মো. রিপন নিজেই যাত্রী খুঁজছেন। সহকারী মাস্টার মো. বেলাল টিকিটের বই ও কলম নিয়ে কপালে হাত দিয়ে বসে আছেন। এ ছাড়া রাজশাহী-চাঁপাইনবাগঞ্জ রুটে চলাচলকারী আয়ান ট্রাভেলস নামে একটি বাসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাসের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, মাত্র ১১ জন যাত্রী বসে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জন নারী যাত্রী।
এ সময় রেলগেট কাউন্টারের মাস্টার মো. রিপন ও মো. বেলাল জানান, স্বাভাবিক সময়ে এ রুটে দিনে প্রায় ১২ লাখ ৩২ হাজার টাকা ইনকাম হতো বাস মালিকদের। কিন্তু এখন দেড় লাখ টাকাও উঠছে না। প্রতি ট্রিপে ২২ হাজার টাকা করে আয় হতো। এখন চার ভাগের একভাগও নাই। মাত্র আড়াই হাজার টাকা আসছে প্রতি ট্রিপে। গাড়ির খরচই উঠছে না। গাড়ির সংখ্যাও কমে এসেছে।
এদিন শিরোইল এলাকায় বাস টার্মিনালে গিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের আলসে সময় পার করতে দেখা যায়। রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের সব রুটের বাস কাউন্টার নগরীর ভদ্রা এলাকায়। বেলা ১১টার দিকে ওই কাউন্টারের সামনে দ্বীপ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বাস ‘যাত্রীশূন্য’ অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল।
এ ব্যাপারে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সভাপতি মতিউল হক টিটো বলেন, দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। আন্তঃজেলা রুটে কিছু বাস চলাচল করছে। কিন্তু জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের না হওয়ার ফলে যাত্রী একেবারেই কম। মো. মাহাবুল আলম নামে আরেক বাস মালিক নেতা বলেন, অন্য সময়ে যে রকম যাত্রী আমরা পাই, এখন অনেক কম। অর্ধেকেরও কম যাত্রী পাচ্ছি আমরা। আমারও এক আত্মীয় বাস রেখে অন্য গাড়িতে রাজশাহী আসলেন। আসলে মানুষ বাসে চলাচল ঝুঁকি মনে করছে। এ ছাড়া কিছু হলেই বাস ও ট্রাকের ওপর হামলা বেশি হচ্ছে। ইজিবাইক বা গাড়িগুলো কম হামলার শিকার। যে কারণে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন।