কোহলি শচীনের রেকর্ড স্পর্শ করলে কার একচোখে বিষাদ, অন্যচোখে আনন্দ?      

আজ তার জন্মদিনে বিরাট কোহলি যদি শচীন টেন্ডুলকারের ওয়ান ডে শতরানের রেকর্ডটি স্পর্শ করেন তাহলে একই সঙ্গে আনন্দের সাগরে ভাসবেন এবং বিষাদের সমুদ্রে তলিয়ে যাবেন কে? অমিতাভ বচ্চনের কৌন বনেগা ক্রোড়পতির কোনও কনটেস্ট্যান্টও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে খাবি খাবেন।  উত্তরটা তাহলে দিয়েই দেয়া যাক।  মুম্বইয়ের বাসিন্দা ৭০ বছরের আসলাম চৌধুরী হলেন এই ব্যক্তি যিনি আজ কোহলি সেঞ্চুরি করলে একই সঙ্গে আনন্দে আর বিষাদে ভাসবেন। কে এই আসলাম চৌধুরী? ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এম. আশরাফ ব্রাদার্স এর মালিক এই বৃদ্ধ।  মুম্বইয়ে কোনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ থাকলেই ডাক পড়ে তার। থলিতে ছেনি হাতুড়ি নিয়ে তিনি হয় পৌঁছে যান টিম হোটেলে কিংবা প্যাভিলিয়নে ।  কেন উইলিয়ামসন, শেন ওয়াটসনদের ব্যাট তিনি মেরামত করে দেন অনায়াসে।  শচীন টেন্ডুলকার আসলাম এর তৈরি আর মেরামত করা ব্যাট ছাড়া কোনও দিন খেলতেন না।  বিরাট কোহলির হাতে আজ যে ব্যাট শোভা পাবে তাতে ছোঁয়া থাকবে এই আসলাম চৌধুরীরই।  শচীন জীবনে আসলামের ব্যাট ছাড়া খেলেন নি।

বিরাট কোহলিও তাই। সেই কারণেই আজ ৭০ বছরের ব্যাটম্যানের  একচোখে জল, অন্য চোখে বিষাদ থাকবে।  এম আশরাফ ব্রাদার্স এ একটি পাঁচ টন এর ইলেকট্রিক কনভেয়ার ফ্লাইহুইল ছাড়া বাকি সবই হাতের কারিকুড়ি। আসলাম নিজে হাতে ব্যাট বাঁধেন। শচীন টেন্ডুলকার কিংবা বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে তাই তার পরোক্ষ অবদান থাকে। শচীন কিংবা বিরাটকে কখনও তার কারখানায় আনেননি আসলাম। ওরা এলে দোকান উপচে পড়বে ভিড়ে। একবার আইপিএলের সময় শ্রীলংকান লাশিথ মালিঙ্গা এসেছিলেন। তাতেই ভিড় সামলাতে পারেননি আসলাম। শচীন কিংবা বিরাট এলে তো জনবিস্ফোরণ  হবে। আজ বিরাট সেঞ্চুরি করলে ফার ফ্রম দ্য মাডিং ক্রাউড, মুম্বইয়ের এম. আশরাফ কোম্পানিতে বসে টিভিতে ম্যাচ দেখে একচোখে জল আর অন্য চোখে আনন্দ নিয়ে বসে থাকবেন এক বৃদ্ধ।  শচীন কিংবা বিরাট এর তার কথা একবারের জন্যও মনে পড়বে কি?