বাংলারজমিন
হাত-পা বেঁধে শিশু নির্যাতন
পীরগঞ্জে বাবা ও সৎ মায়ের ৩ বছরের কারাদণ্ড
পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
৩ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবারঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ছেলেকে নির্যাতনের অভিযোগে বাবা এবং সৎ মা’কে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ১২ বছর বয়সী ছেলে সাহাবুদ্দিনকে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে মাটিতে ফেলে রাখার অভিযোগে এই কারাদণ্ড দেয়া হয়। গতকাল ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আবু সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আইনজীবী এডভোকেট আবু সায়েম জানান, পীরগঞ্জ উপজেলার সেনগাঁও ইউনিয়নের সিন্দুর্না গ্রামের আব্দুল খালেকের প্রথম স্ত্রী সাহেরা খাতুন প্রায় ৮ বছর আগে ছেলে সাহাবুদ্দিনকে রেখে মারা যান। এরপর থেকে বাবা আব্দুল খালেক ও সৎ মা আমিন খাতুনের সংসারে বড় হতে থাকে সাহাবুদ্দিন। তখন থেকেই সৎ মা ও বাবা মিলে নানা অজুহাতে সাহাবুদ্দিনকে প্রায়ই মারপিট করতেন। ঠিকমতো খাবার দিতেন না। অমানবিক নির্যাতন করতেন। কয়েকদিন ধরে সাহাবুদ্দিনের কোনো খোঁজ না পেয়ে তার মামাতো ভাই আনোয়ার হোসেন গত ১৬ই এপ্রিল তার ফুফা আব্দুল খালেকের বাড়িতে যান। বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান, গোয়াল ঘরের ভেতরে একটি বাঁশের খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে সাহাবুদ্দিনকে মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। এ সময় ওই শিশু জানান, ৪ দিন ধরে তাকে এভাবেই হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছে। কিছু খেতে দেয়া হয়নি। ক্ষুধার জ্বালায় মাটি খেয়েছে সাহাবুদ্দিন। এ অবস্থায় আশপাশের লোকজনের সহায়তায় সাহাবুদ্দিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাসহ থানায় এজাহার দায়ের করেন আনোয়ার। এ ঘটনায় একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে তৎপর হন পুলিশ প্রশাসন। তারা বিষয়টির খোঁজখবর নেন। অভিযান চালিয়ে পিতা আব্দুল খালেক ও সৎ মা আমিনাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে থানা পুলিশ। ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার সাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। স্বাক্ষ্য-প্রমানের ভিত্তিতে গতকাল বিচারক আরিফুর রহমান পিতা খালেক ও সৎ মা আমিনাকে ৩ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেন। তবে সৎ মা আমিনার ছোট বাচ্চা থাকায় তাকে জেলখানার বাইরে থেকে সমাজসেবা কর্মকর্তার (প্রভিশন অফিসার) নিকট ৩ মাস অন্তর অন্তর হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।