শেষের পাতা
‘টাকা না দিলে আপনার ছেলে মেয়েকে তুলে আনতেও পারবো’
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
২ অক্টোবর ২০২৩, সোমবারটাকা না দিলে আপনার ছেলে-মেয়েকে তুলে আনতে পারবো। আমরা ছেলেগুলো ভালো না। কাজেই জায়গামতো নিজের নাম লিখে টাকাগুলো রেখে আসবেন। বাড়ি বাড়ি নোটিশ লাগিয়ে এমন চাঁদা দাবি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে দুর্বৃত্তরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়ার কাহালু উপজেলার একটি গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ভিন্ন ভিন্ন অংকের টাকা দাবি করে মূল দরজার সামনে নোটিশ লাগিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। টাকা না পেলে ওই বাড়ির ছেলে-মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেয়া হয়েছে নোটিশে। গত শনিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে নোটিশটি লাগানো হয়। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ওইসব বাড়ির লোকজন এবং এলাকাবাসী। পুলিশ বলছে, বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
নোটিশটিতে কারও কাছে ২০০, কারও কাছে ২০০০ আবার কারও কাছে ৩০০০ টাকা, এভাবে ভিন্ন ভিন্ন অংকের টাকা দাবি করে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘টাকা ৬ তারিখে দিতে হবে। না হেইলে ৭ তারিখ থেকে আপনাদের ছেলে-মেয়ে হারায় গেলে আমার কোনো কিছু করার থাকবে না। আমি বা আমরা কে সেটা না খুঁজে আমি যা বলছি সেটা করার চেষ্টা করেন তাহলে কিচ্ছু হবে না। অল্প কিছু টাকার জন্য বাচ্চাদের বিপদে ফেলায়েন না। যদি ছেলে-মেয়ের মঙ্গল চান তাহলে, লোয়া-পুকুর সোলার লাইট এর সাথে যে বক্স থাকবে, নিজের টাকার সাথে একটা কাগজে নিজের নাম লিখে ওই বক্স-এ ফেলান আর নিজের বাচ্চাকে সুরক্ষিত করুন ধন্যবাদ।’ [বি.দ্র.] আমার এই কাগজ আপনি পড়ছেন, তাহলে মনে করেন আপনার ছেলে/মেয়েকে তুলে আনতেও পারবো। দয়া করে টাকাটা দিয়েন, আমরা ছেলেগুলা ভালো না। ভালো থাকবেন ৬ তারিখ পর্যন্ত, Shadow. এদিকে, ঘুম থেকে উঠেই বাড়ির দরজায় চাঁদা দাবির এমন নোটিশ পেয়ে আতঙ্কিত গ্রামবাসী। গ্রামের লোকজন সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। সন্তানদের সব সময় চোখে চোখে রাখার চেষ্টা করছেন। আবার নোটিশ দেখার পর অনেকেই সন্তানদের স্কুলে পাঠাননি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাহালু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেন, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ির দরজায় দরজায় স্টিকার লাগানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি এটা মাদকসেবীদের কাজ হতে পারে। এটা তেমন হাইগ্রেডের কেউ না। অল্প বয়সী কিছু বখে যাওয়া ছেলেপেলে থাকে না বিভিন্ন এলাকায় গ্রামে যারা সহজ পন্থায় কিছু টাকা পয়সা উপার্জন করতে চায়। যাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে তারা যদি টাকা না দেয় সেক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে থানা পুলিশের পাশাপাশি আমাদের সার্কেল এসপি স্যার এবং বগুড়া থেকে ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমাদের নজরদারি আছে, আমাদের টিম ওই গ্রামে আছে। এ ছাড়া আমরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করেছি কোনো সমস্যা নেই। আমরা এখনো এমন কোনো তথ্য পাইনি কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বের করতে আমরা চেষ্টা করছি।