ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

হোমনা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
২ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার
mzamin

হোমনা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মো. তাজুল ইসলাম প্রতি মাসে মাত্র ৪ থেকে ৫ দিন বিদ্যালয়ে আসেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক কোচিং করানো, শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি প্রদান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার সরজমিন দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক মো. তাজুল ইসলাম তার অফিসে নেই। তার বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, তিনি শুধু সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার স্কুলে আসেন, অন্য দিনগুলোতে আসেন না তিনি। গত মঙ্গলবার হোমনা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. তাজুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন। জানা যায়, গত বছরের ১৫ই নভেম্বরে ওই প্রধান শিক্ষক হোমনা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই এমন অনিয়মিতভাবে অফিস করে আসছেন। একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা কোচিং করতে চাই না। প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম স্যার ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির ছাত্রদের জন্য এই কোচিং বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। কোচিং বাবদ প্রত্যেক ছাত্রের থেকে ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা করে নেয়া হয়। আর কেউ কোচিং না করলে তাকে ২ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এই অতিরিক্ত টাকা দিতে আমাদের অভিভাবকদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। এ ছাড়া সকাল ৮টা থেকে কোচিং শুরু করার কারণে আমরা অনেকেই সকালে নাস্তা করে স্কুলে আসতে পারি না। আমরা অত্যন্ত টায়ার্ড হয়ে যাই। কিন্তু আমরা স্যারের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাই না।’
কোচিং এর বিষয়ে একাধিক শিক্ষক বলেন, ‘বিধি মোতাবেক কোচিং করানো যায় না। আমরাও করাতে চাইনি। হেড স্যারের নির্দেশে আমরা কোচিং করাতে বাধ্য হয়েছি। আমরা তো স্যারের নির্দেশ অমান্য করতে পারি না। আর কোচিং এর টাকার একটা অংশ হেড স্যারও নেন।’
একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী জানান, স্যারের আচার-আচরণ ভালো না। তিনি শিক্ষার্থীদের অনেক সময় বেত্রাঘাত করেন এবং ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন। এ ছাড়া স্যারের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো কথা বলা যায় না।
বাধ্যতামূলক কোচিং করানোর কথা স্বীকার করে হোমনা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীরা যাতে মাদকাসক্ত হতে না পারে সেজন্যই কোচিং এর ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, মাঝে মাঝে বিভিন্ন অনুষ্ঠানগুলোতেও আমি বিদ্যালয়ে আসি। তবে রূঢ় আচরণের কথা অস্বীকার করে বলেন, মাঝে মাঝে কিছুটা মারধর করতে হয়।
শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মাথাপিছু ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকা করে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, যেসব শিক্ষক কোচিং করান তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়। আর আমি তো সবার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নেই না, যারা অক্ষম তাদের কাছ থেকে ৫শ’ টাকাও নেই।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, উনি নিয়মনীতির বাইরে কিছুই করতে পারবেন না। এরকম কিছু হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status