শেষের পাতা
২৫ বছরে বর্ণিল চ্যানেল আই
স্টাফ রিপোর্টার
১ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার
গণ-আকাক্সক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছে গেছে গণমাধ্যম। গণমাধ্যমের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে চলেছে। মানুষের এই চিন্তা ও প্রত্যাশার সম্প্রসারণটিই ঘটেছে আদর্শ গণমাধ্যমের কাছ থেকে। মানুষ যখন দেখে টেলিভিশন তার জীবনকে সহজ করে দিচ্ছে, টেলিভিশন তাকে আত্মবিশ্বাসী করছে, টেলিভিশন তাকে স্বপ্নবান করছে তখনই মানুষ টেলিভিশনের প্রতি ঝুঁকতে থাকে। গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের এই আস্থা ও বিশ্বাস সৃষ্টির পেছনেই নিবিড় কর্মসাধনা রয়েছে চ্যানেল আই-এর।
বিশ্বময় বাংলা ভাষাভাষীর স্বপ্ন, আকাক্সক্ষা আর জীবনধারার প্রিয় সঙ্গী চ্যানেল আই পথচলার চব্বিশ বছর পার করে পা রাখছে পঁচিশ বছরে। শতভাগ পেশাদারিত্ব, নতুনত্ব, সৃজনশীলতা ও তারুণ্যের জয়গান গেয়ে চ্যানেল আই-এর অভিযাত্রা। তাই ২৫ বছরে এসে চ্যানেল আই-এর স্লোগান- পঁচিশ উচ্ছ্বাস লাল সবুজে বিশ্বাস।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক বিকাশ, খাদ্য নিরাপত্তায় শতভাগ স্বনির্ভরতা অর্জন তথা বাংলাদেশের গঠনমূলক পরিবর্তনের সরব সঙ্গী চ্যানেল আই। মানুষ যা দেখতে চায়, যা শুনতে চায়, যা উপলব্ধি করতে চায় তা নিয়েই চ্যানেল আই-এর পথচলা। এর সঙ্গে জীবনকে এগিয়ে নেয়া, রুদ্ধ দুয়ারকে খুলে দেয়া, সত্যকে শাণিত করার পথেও থাকতে হয়েছে অবিচল। টেলিভিশন কিংবা গণমাধ্যম নিয়ে মানুষের তৃষ্ণা ও প্রত্যাশাগুলো পূরণ করে এগিয়ে চলেছে চ্যানেল আই। তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ ও আকাশ সংস্কৃতির নতুন নতুন অগ্রযাত্রার ভেতর চ্যানেল আই-এর পথচলা নতুন নতুন উদ্ভাবনের ভেতর দিয়ে। প্রথম দিন যে নতুনত্বের মালা গেঁথেছিল, আজও তা গেঁথে চলেছে চ্যানেল আই।
এদেশে টেলিভিশনের ইতিহাস যখন পঁয়ত্রিশ বছরের, তখন ১৯৯৯ সালের ১লা অক্টোবর পথচলা শুরু হয় চ্যানেল আই-এর। সেদিন বুকভরা স্বপ্ন আর দেশ ও জনগণের কল্যাণে শতভাগ দায়বদ্ধতার এক নতুন প্রত্যয় ছিল চ্যানেল আই-এর পরিচালনা পর্ষদের। একটি আধুনিক টেলিভিশন, যা মানুষের তথ্যের তৃষ্ণা মেটাবে, মানুষের মূল্যবোধ জাগ্রত করবে, তার বন্ধ চোখ খুলে দেবে, তার জীবনের প্রয়োজনের সঙ্গে মিশে যাবে- এই ছিল স্বপ্ন। পথচলার শুরু থেকে চ্যানেল আই দেশের শিল্প সংস্কৃতির সব গুণী মানুষদেরকে যুক্ত করেছে তার পথচলার বিশাল কাফেলায়। দিনে দিনে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে বিশাল বিশাল ইভেন্ট নিয়ে। পৃথিবীর ছয়টি মহাদেশের বাংলা ভাষাভাষীরা সব দিনে দিনে যুক্ত হয়েছেন চ্যানেল আই-এর লাল সবুজ রঙে। যুক্ত হয়েছেন হৃদয়ে বাংলাদেশ চেতনায়।
আজ দেশের সংগীত প্রতিভার কথা উঠলেই আসে চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের কথা, আসে চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠের কথা, শিশু-শিল্পীর গান মানেই চ্যানেল আই-এর ক্ষুদে গানরাজ অনুষ্ঠান, অভিনয় প্রতিভা আর নতুন মুখ অনুসন্ধান মানেই লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টারসহ চ্যানেল আই-এর বিভিন্ন ইভেন্ট, আবৃত্তি শিল্পী গড়তে আবৃত্তি ছন্দে আনন্দে, নাচের শিল্পী গড়তে চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে অনুষ্ঠানগুলো স্বনামেই খ্যাত হয়ে উঠেছিল। প্রতি বছরই চ্যানেল আই-এর কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোগ। সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বের করে আনা হচ্ছে গুণী মুখ। সত্যিকারেই এক কারিগরের ভূমিকায় থেকে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুনের জয়গান ধরে রাখছে চ্যানেল আই।
চ্যানেল আই বরাবরই তার পথচলার ভেতর দিয়েই শিক্ষা গ্রহণ করে। তাই মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে টেলিভিশন মানে শুধু বিনোদন নয়। টেলিভিশন মানে জনকল্যাণ, টেলিভিশন মানে মানবসেবা, টেলিভিশন মানে জাতির উন্নয়ন ও ক্রমবিকাশের অনন্য বাহন। চ্যানেল আই এদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বহুসংখ্যক গুণী শিল্পীকে আজীবন সম্মাননা দিয়েছে। একইসঙ্গে তাদেরকে নিয়মিত পৃষ্ঠপোষকতাও অব্যাহত রেখেছে। একটি টেলিভিশন নিতে পারে সমাজের অনেক ভালো ও শুভ ঘটনার নেপথ্য শক্তি। টেলিভিশন মানুষকে আরও সক্রিয় করতে পারে দেশের পথে। এই বিশ্বাস থেকে প্রতি বছরই নিয়মিত কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করেছে নতুন নতুন কিছু কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান। যেগুলো এক ধরনের সামাজিক আন্দোলন।
জন্মদিনে নানা আয়োজন
১লা অক্টোবর থেকে ২৫ বছরের পথচলা শুরু চ্যানেল আই-এর। উন্নয়নশীল বাংলাদেশের ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের গঠনমূলক ও সৃজনশীল বিকাশের ইতিহাসে চ্যানেল আই-এর এই অগ্রযাত্রা উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত।
যে দায়বদ্ধতা নিয়ে শুরু হয়েছিল পথচলা, সেখান থেকে এক চুলও সরেননি চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নিষ্ঠাবান কর্মীরা, যাদের প্রতিদিনের প্রয়াসেই টেলিভিশনে সূচনা হয় একেকটি নতুন অধ্যায়ের, নতুন ধারার। পথচলার এই সময়ে চ্যানেল আই পরিবার কামনা করে বিশ্বভরা বাঙালির অবিরত ভালোবাসা, এ ভালোবাসা অক্ষুণ্ন থাক বছরের পর বছর।
চ্যানেল আই-এর ২৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে থাকছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে ১লা অক্টোবর চ্যানেল আই ভবন প্রাঙ্গণে রয়েছে দিনব্যাপী মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ১লা অক্টোবর পথচলার প্রথম প্রহর রাত ১২.০১ মিনিটে এবং সন্ধ্যায় কেক কাটা পর্বে চ্যানেল আই পরিবারের সঙ্গে যোগ দিবেন দেশের সর্বস্তরের বিশিষ্টজনেরা।
বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজনে সকাল ৭.৩০ মিনিটে ‘গান দিয়ে শুরু’তে প্রচার হবে দেশের প্রথিতযশা শিল্পীদের পরিবেশনায় গান। অনুষ্ঠানে দেশের সিনিয়র শিল্পীদের অংশগ্রহণ থাকবে। সকাল ৯.৩০ মিনিটে থাকছে ‘সংবাদপত্রে বাংলাদেশ’-এর বিশেষ পর্ব। সকাল ৯.৪৫ মিনিটে প্রচার হবে ‘তৃতীয়মাত্রা’র বিশেষ পর্ব। চ্যানেল আই-এর ২৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানে নানা বিষয়বস্তু এবং চ্যানেল আই-এর নানা কর্মকা- নিয়ে কথা বলেছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। উপস্থাপনায় জিল্লুর রহমান। সকাল ১১:০৫ মিনিট থেকে দিনব্যাপী প্রচার হবে মিলনমেলা- ‘২৫শে উচ্ছ্বাস লাল সবুজে বিশ^াস’। এই মিলনমেলায় শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা গ্রহণ ছাড়াও মঞ্চে থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বাংলাদেশের খ্যাতিমান সংগীতশিল্পীরা অংশ নেবেন এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। চ্যানেল আই চেতনা চত্বর থেকে সরাসরি সম্প্রচারিতব্য অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন আমীরুল ইসলাম ও শহিদুল আলম সাচ্চু। দুপুর ২টার সংবাদের পর পর দেখানো হবে ভিকি জাহেদের রচনা ও পরিচালনায় বিশেষ টেলিফিল্ম ‘পুনর্জন্ম অন্তিম’। সন্ধ্যা ৬টায় রয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলার দর্শকদের চ্যানেল আই সম্পর্কে ভাবনা ও প্রত্যাশা নিয়ে অনুষ্ঠান ‘আমার চ্যানেল আই’। সন্ধ্যা ৬:২০ মিনিটে প্রচার হবে ফরহাদুর রেজা প্রবালের পরিচালনায় বিশেষ অনুষ্ঠান ‘জমজমাট জন্মদিন’। রাত ৮:২০ মিনিটে দেখানো হবে মুকিত মজুমদার বাবুর পরিকল্পনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় প্রকৃতি ও জীবন-এর বিশেষ আয়োজন ‘অ্যাডভেঞ্চার অ্যারাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড’ এবারে থাকছে জাপানের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য। রাত ৯:৩৫ মিনিটে প্রচার হবে জাহান সুলতানা’র চিত্রনাট্য ও ভিকি জাহেদের পরিচালনায় বিশেষ নাটক ‘বেড নম্বর ০৩’।