বাংলারজমিন
রিপনে অশান্ত আবারো কাইতলা, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতিও
স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবারআবারো অস্থির-অশান্ত হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের কাইতলা উত্তর ইউনিয়ন। সক্রিয় রিপন আর তার সন্ত্রাসী দলবল। প্রতিদিনই তাদের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন কেউ না কেউ। তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে গ্রামের শ’দুয়েক মানুষ। এলাকা ছাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতিও। এদিকে রিপনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। গত ক’বছরে কাউতলা উত্তর ইউনিয়নকে এক ভয়ঙ্কর জনপদে পরিণত করেন রিপন মিয়া। তার রাজত্বে পরিণত করেন এই ইউনিয়নকে। অন্যায়-অবিচার, নির্যাতন-নিপীড়ন চালাতে থাকেন হরদম। নিজস্ব আদালত পরিচালনা করে ৫০ লাখ, ৪০ লাখ, কারো ২০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন। তার হুকুম না মানলেই গোমুত্রের কোয়ায় ফেলে, পাঙ্গাসের পুকুরে বেঁধে রেখে সাজা দেন। এলাকার মানুষের হাজার হাজার কানি জমি জোরপূর্বক কেড়ে নেন।
দখল করে নেন নদী এবং খাল। তার এসব অপকর্ম দৈনিক মানবজমিন এবং অন্য একটি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর গা ঢাকা দেয় রিপন আর তার দলবল। প্রশাসন তার অপকর্মের তদন্ত শুরু করে। কিন্তু মাস দু’য়েক না যেতেই আগের অবস্থা ফিরে এসেছে সেখানে। গতকাল সকালে নারুই বাজারে মাছ বিক্রি করতে গিয়ে রিপনের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছেন সাব্বির হোসেন (২৮) নামের এক যুবক। তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আরজ মিয়া নামের একজনকে মারধর করা হয়। কয়েক মাস আগে আরজ মিয়াকে একটি ঘটনায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এই টাকা না দেয়ায় তাকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। এর ২/৩ দিন আগে রাসেল মিয়া (৪০) নামে আরেক গ্রামবাসীকে মারধর করা হয়। সাবেক ইউপি সদস্য অলিউল্লাহ মুন্সী জানান- গত দু’সপ্তাহ ধরে রিপন মিয়া এলাকায় আসছেন।
তার দলবল নিয়ে মিটিং করে বলেছেন সবকিছু মিটিয়ে ফেলেছেন। বিপক্ষের লোকজনকে গ্রামছাড়া করার নির্দেশ দেন। মার্ডার করলে সে সবকিছু দেখবে। রিপনের দলবলের আক্রমণের শিকার হতে পারেন এই আশঙ্কায় এলাকা ছাড়া রয়েছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আসলাম মৃধা। এতদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকা রিপনের দলবল মহড়া দিচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। এতে পুরো ইউনিয়নে বিরাজ করছে আতঙ্ক। রিপন ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের এক সাধারণ কৃষক মো. শামসু মিয়া ওরফে গোলাম কাদেরের ছেলে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান রিপন গত ক’বছরে এলাকায় কয়েক হাজার কানি জমির মালিক হয়েছেন। ঢাকায় স্পাইডার নামে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির এমডি হওয়ার সুবাধে এলাকায় শিল্পপতি রিপন নামে তার পরিচয় ছড়িয়ে পড়ে। গত ৬ই জুলাই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. রুহুল আমিন রিপনের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের সরজমিন তদন্ত করেন। তবে এখনো তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়নি।