ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩, সোমবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

নির্বাচনকে সামনে রেখে সক্রিয় হচ্ছে ইসলামী দলগুলো

নূরে আলম জিকু
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার

জাতীয় নির্বাচনের বাকি মাত্র কয়েক মাস। এরইমধ্যে নানা ইস্যুতে মাঠে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলো। পিছিয়ে নেই ইসলামী দলগুলোও। অধিকাংশ দলের চাওয়া নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। এ দাবিতে কর্মসূচিও পালন করছেন দলগুলোর নেতারা। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলনের প্রস্তুতিও রয়েছে তাদের। তফসিল ঘোষণার আগেই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন নিশ্চিত করতে চান তারা। সে লক্ষ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রমে জোর দিচ্ছে কয়েকটি দল। ইসলামী দলগুলোর নেতারা বলছেন, আগামীর নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য। সেখানে সবগুলো দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন
দলীয় সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এ জন্য নির্বাচনের আগেই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। এ জন্য আন্দোলনের মধ্যদিয়ে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে। 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকারবিরোধী আন্দোলনে রয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে বেশ কয়েকটি বড় কর্মসূচিও পালন করেছে। দলটির চাওয়া জামায়াতের আমীরসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও  কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে অনেকটাই কৌশলে এগোচ্ছে দলটি। দলটির শীর্ষ একাধিক নেতা বলেন, তফসিল ঘোষণার আগেই কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে জামায়াতের। এর আগে সভা-সমাবেশের মধ্যদিয়ে সাংগঠনিক শক্তির সক্ষমতা যাচাই করছেন তারা। পরিবেশ ও পরিস্থিতি বুঝে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামবেন। দাবি নিশ্চিতে সরকার বিরোধী দলগুলোর সঙ্গেও ঐক্যের পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। এদিকে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সারা দেশে কর্মসূচি পালন করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। টানা ২ মাস ধরে কর্মসূচি পালন করছে দলটি। আগামী ২৯শে সেপ্টেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করার কথা রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের। ঢাকার এই সমাবেশ শেষে আরও কঠোর কর্মসূচির পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতারা।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান  মাওলানা এম এ মতিন মানবজমিনকে বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে জোর দিচ্ছি। তবে ২০১৪ সালের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমরা নির্বাচনে যাবো না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টও আন্দোলন করছে। বিএনপি যেভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সেটাকেও সাপোর্ট করছি না, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডকেও সমর্থন করবো না। এই মুহূর্তে দরকার একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। তার জন্য রাজনীতিক দলগুলোকে সংঘাতময় পরিস্থিতি পরিহার করতে হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে একসঙ্গে বসতে হবে। একটা সংলাপের প্রয়োজন। যাতে সবগুলো দল একসঙ্গে বসে একটা দীর্ঘমেয়াদি নির্বাচনী ফর্মুলা বের করা খুবই জরুরি। 

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের মানবজমিনকে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। দলীয় সরকারের অধীনেও কোনো দিন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। বিগত কয়েকটি নির্বাচনের সেই নজির স্পষ্ট। আমরা ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছি। ’১৮ সালের নির্বাচন থেকে বলে আসছি যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। তখন শেখ হাসিনা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি কথা রাখেননি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ৬০টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন করে। ভোটের মাঠে নেতাকর্মী ও এজেন্টদের মেরে বের করে  দেয়া হয়। সুতরাং আমরা এবার নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া আর কোনো নির্বাচনে যাবো না। আমরা সরকারবিরোধী আন্দোলনে রয়েছি। এককভাবে কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের দাবি একটাই নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আরও কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। 

ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ইসলামী ঐক্যজোটের একটি নিজস্ব বলয় রয়েছে। এটি একটি নির্বাচনমুখী দল। আগামী নির্বাচন হবে, কীভাবে হবে এসব বিষয়গুলো আমাদের শূরা কমিটি পর্যবেক্ষণ করছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আগামী নির্বাচনকে সামনে  রেখে এই মুহূর্তে আমাদের কাজ সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা। তৃণমূল পর্যায়ে যে সাংগঠনিক পরিধি তা বৃদ্ধি করার জন্য আমরা কাজ করছি। মূলত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক চাই। সেই রকম নির্বাচন হলে ইসলামী ঐক্যজোট অবশ্যই বিবেচনা করবে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য।

পাঠকের মতামত

ইসলামী দল গুলোর মধ্যে ঐক্য কামনা করি৷ জামায়াতে ইসলামী, চরমোনাই, কওমী ইত্যাদি সকলের মধ্যে ঐক্য বিরাট এক ফরজ যে ঐক্যের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে মহান আল্লাহ তায়ালার ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দ্বীনের বিরাট এক ফরজ যে ঐক্যের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে কোরআনী রাষ্ট্র ও সমাজ৷ প্রতিষ্ঠিত হবে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মানবাধিকার৷ প্রতিষ্ঠিত হবে জুলুম ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ ; হবে আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক উন্নয়ন ইনশাআল্লাহ ৷

নুরুলহুদা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status