ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

বগুড়ায় পালিত হলো নদী দিবস

প্রশাসন চাইলেই দখলমুক্ত করতে পারে নদীকে

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার
mzamin

 নদীমাতৃক বাংলাদেশ আস্তে আস্তে নদীহীন হয়ে যাচ্ছে। দখল আর দুষণে ইতিমধ্যেই দেশের খরস্রোতা বহু নদী মৃতপ্রায় হয়েছে। প্রশাসনের উদাসীনতা আর সাধারণ মানুষের চুপ হয়ে বসে থাকার সুযোগে হাতেগোনা কিছু রাঘব বোয়ালদের হাতে প্রতিদিন দেশের নদী নিহত হচ্ছে। কখনো ক্ষমতার দাপট, কখনো আবার অর্থের বিনিময়ে প্রশাসনের চোখ-মুখ বন্ধ করে নদী দখলে নেমে পড়ছে দস্যুরা। এমন দস্যুতার শিকার বগুড়ার করতোয়া নদীও। এক সময় সুদূর খুলনা থেকে করতোয়া নদী বেয়ে নৌকা আসতো বগুড়া শহরে। শতশত বণিকরা তাদের মালামাল আনা-নেয়া করতো এই নদী দিয়েই। আজ সেই নদী হাতে গোনা কিছু মানুষের অমানুসিক রোষানলে নালায় পরিণত হয়েছে। বগুড়ার প্রশাসনের চোখের সামনেই একটি এনজিও এবং প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি করতোয়া দখল করে ইচ্ছেমতো বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করেছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষ, কিছু সামাজিক সংগঠন মাঝে মধ্যে প্রতিবাদ করলেও অদৃশ্য কারণে তারা থেমে যায়। নদী দস্যুরা সেই সুযোগে আবারো মেতে উঠে দখলে। এভাবেই চলছে বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নদী করতোয়া দখলের মহোৎসব। 

বগুড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান মানবজমিনকে বলেন, এক সময় এই করতোয়া ছিল খরস্রোতা। তীব্র স্রোতের কারণে উল্টোদিক থেকে আসা নৌকা তীরে ভিড়তে অনেক সময় নিয়েছে। তিনি বলেন, এখনো আমার স্মৃতিতে স্পষ্টভাবে ভেসে ওঠে করতোয়ার দৃশ্যপট। সুদূর খুলনা থেকে নারকেল বোঝাই নৌকা বগুড়া শহরে ভিড়তো। এখানে আসতে শাজাহানপুরের একটি অংশে করতোয়াতে তীব্র স্রোত হতো। ঘূর্ণিপাক খেতো পানি। সেইপথ পাড়ি দিয়ে নৌকা সহজে আসতে পারতো না। মাত্র কয়েক কিলোমিটার পথ আসতে ৩-৪ দিন সময় লেগে যেতো শহরের ঘাটে পৌঁছাতে। মাঝিমাল্লারা সেই নৌকাতেই রান্না করে খেতো। নৌকাতেই রাত্রিযাপন করতো। তিনি আরও বলেন, আমি নিজে দেখেছি বগুড়ার চেলোপাড়া অংশে চ্যালা মাছের দেখা মিলতো প্রচুর। সেখানে জাল ফেলে জেলেরা চ্যালা মাছ ধরতো এজন্যই ওই পাড়ার নাম চ্যালোপাড়া হয়েছে। সেই নদী চোখের সামনে আজ অসহায় করুণ হয়ে পড়ে আছে। কেউ কোনো উদ্যোগ নেয় না নদীকে সচল করতে।   

 

গতকাল রোববার ছিল বিশ্ব নদী দিবস। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বগুড়া শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন, র‌্যালি এবং করতোয়া নদীতে প্রতীকী কাগজের নৌকা ভাসানোর এবং দখল-দূষণমুক্ত নদীর দাবির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করে। বাপা বগুড়া শাখার সহ-সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে করতোয়া নদী তীরবর্তী বগুড়া মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে বিশ্ব নদী দিবস কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বগুড়ার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-প্রাবন্ধিক, কবি বজলুল করিম বাহার। এ সময় নদী দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বাপা’র কেন্দ্রীয় সদস্য ও বগুড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান। বক্তারা বলেন, এই অঞ্চলের কৃষিকে বাঁচাতে হলে করতোয়ার প্রাণ ফেরানো জরুরি। জীববৈচিত্র্য রক্ষাতেও নদীকে প্রয়োজন। প্রশাসন চাইলেই করতোয়াকে দখলমুক্ত করতে পারে। আলোচনার মঞ্চ থেকে বক্তারা বগুড়াবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আসুন আমাদের নদীকে আমরা সবাই মিলে রক্ষা করি। 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status