খেলা
এশিয়ান গেমসে যথারীতি ব্যর্থতায় শুরু বাংলাদেশের
স্পোর্টস রিপোর্টার, হাংজু (চীন) থেকে
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার
এশিয়ান গেমসের মতো বৈশ্বিক আসরে এবারো ক্রিকেট ছাড়া বাংলাদেশের পদকের সম্ভাবনা ক্ষীণ। সেই আশা ভরসার একটি নারী ক্রিকেট কাল হতাশ করেছে. চরম ভাবে। হতাশায় শুরু হয়েছে অন্যান্য ডিসিপ্লিনগুলোতেও। শুরুটা হয়েছে সকালে শুটিংয়ের মধ্যদিয়ে। তারপর একে এক ব্যর্থ হয়েছে জিমন্যাস্টিক্স, তায়কোয়ান্দো, সাঁতার। হকিতেও সুখবর দিতে পারেনি জিমি-সারোয়ারা। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন জাপানের কাছে হেরেছে ৭-২ গোলের বড় ব্যবধানে।
শুটিংয়ে ব্যর্থ কলি-তাবাসসুম
সকালে বাংলাদেশের সঙ্গে ক্রিকেটের সেমিফাইনাল ছিলো ভারতের। সেখানে না গিয়ে ভারতের বেশিরভাগ সাংবাদিক জড়ো হয়েছিলেন হাংজুর ফুংইয়ং স্পোর্টস সেন্টারে। সেখানে যথারীতি পদকের দেখা পেয়েছে ভারত। দলগততে রৌপ্য ও ব্যক্তিগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছেন রামিতা। তবে বড় মঞ্চে আবারও মনযোগ ধরে রাখতে না পেওে হতাশ করেছেন বাংলাদেশের শুটাররা। বিশেষ করে কামরুন নাহার কলি ও নাফিসা তাবাসসুম নিজেদেও সেরা স্কোরও করতে পারেননি। দুই তারকার ব্যর্থতার দিনে আশার প্রদীপ হয়ে জ¦লে ছিলেন শায়রা আরেফিন। ব্যক্তিগত ইভেন্টে ১৩তম হয়েছেন বাংলাদেশের এই শুটার। এদিন ব্যক্তিগত ইভেন্টে প্রথম তিনটি সিরিজে তিনজনই ছিলেন দারুণ ছন্দে। এরমধ্যে শায়রা আরেফিন তো মুক্ত মনে শট মেরেছেন। প্রথম সিরিজে ১০৫.২ স্কোর করার পর দ্বিতীয় সিরিজে করেন ১০৪.৭। তৃতীয় সিরিজে ১০৬.৫ স্কোর ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জল করেছিলেন। কিন্তু শেষ তিনটি সিরিজে যথাক্রমে ১০৩.৬, ১০৩.৯ এবং ১০৪.১ শট মারায় স্কোরটা ফাইনালে ওঠার জন্য যথেষ্ট ছিল না। ক্যারিয়ার সেরা ৬২৮ স্কোর করা শায়রা ১৩তম হয়ে শেষ করেন। মাত্র ১ দশমিক ৯ স্কোরের জন্য ফাইনাল রাউন্ডে উঠতে পারেননি তিনি। গত জানুয়ারিতে জাকার্তায় বিশ্বকাপ শুটিংয়ের ফাইনালে ্ওঠে ইতিহাস গড়া কলি বাংলাদেশের তিন প্রতিযোগিতার মধ্যেই হযেছেন তৃতীয। ৬২৩.৩ স্কোর করা কলি ৫৯ জন প্রতিযোগিতার মধ্যে হয়েছেন ২৭তম। অথচ ৬২৮.৪ স্কোর করে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে হয়েছিলেন ষষ্ঠ। কলির মতো যাকে ঘিরে পদকের আশা ছিল সেই নাফিসা ৬২৪.৭ স্কোর হয়েছেন ২৫তম। ব্যক্তিগত ইভেন্টে ব্যর্থতার ধারাটা দলগত ইভেন্টেও ছিল। দলগত লড়াইয়েও শায়রা দুই সতীর্থের চেয়ে ছিলেন সেরা পারফরমার। যথারীতি এখানেও প্রথম তিন সিরিজে শুটিংটা ভালো হয়েছিলেন তাদের। এক সময় তো মনে হয়েছিল বাছাইপর্বে তৃতীয় হয়েই টিম ফাইনালে খেলবে তারা। কিন্তু শেষ দিকে মনযোগ ধরে রাখতে না পারা, কলি এবং নাফিসার ছন্দপতনে ১৮৭৬ স্কোর করা বাংলাদেশ বাছাইপর্বে হযেছে নবম। যে স্বপ্ন ছিল শুটিংকে ঘিরে, শুরুতেই ধাক্কা খাওয়ায় হতাশ কর্তারা। আজ ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের একক ও দলগত ইভেন্টে অংশ নিবেন বাংলাদেশের তিন শুটার তানজিদ বিন আলম, রবিউল ইসলাম ও অর্নব শারার।
সাঁতারের হিটে আটে আট
হাংজু অলিম্পিক স্টেডিয়ামের একুয়াটিক স্পোর্টস সেন্টাওে হিটে আট জনের মধ্যে অষ্টম হয়েছে বাংলাদেশের সাঁতারু সামিউল ইসলাম রাফি। ১০০ মিটার ব্যাক স্ট্রোকে ২৮ জনের মধ্যে ২১ তম হয়েছেন বাংলাদেশের এই সাঁতারু। তিনি সময় নিয়েছেন এক মিনিট দশমিক শূন্য দ্ইু সেকেন্ড (১.০০.০২)। গত বছর বুদাপেস্টে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়ে কম সময় নিয়েছেন সামি। সেখানে তার টাইমিং ছিলো এক মিনিট ২ দশমিক তিন এক সেকেন্ড (১.০২.৩১)।
জিমন্যাস্টিক্স
প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই জিমন্যাস্ট সাংখিয়ং খুমি ও আবু সাঈদ রাফি। পমেল হর্সে সাংখিয়ং খুমি ৯ দশমিক ৫৬৬ স্কোর করেছেন। আর আবু সাঈদ রাফির স্কোর ৪ দশমিক ৬৬। পেনাল্টিতে চার পয়েন্ট কেটে নেয়া হয় আবু সাঈদের। ভল্টিং-এ আবু সাঈদ রাফি ১২. ৯৬৬ ও সাংখিয়ং খুমি ১১.৫৩৩ স্কোর করেছেন। রিং-এ সাংখিয়ং খুমি ৯.৪০০ স্কোর করেন। তবে ইনজুরির কারণে প্যারালাল বারে অংশ নেননি তিনি।
তায়কোয়ানদো
পুমসের ব্যক্তিগত ইভেন্টের রাউন্ড অব সিক্সটিন থেকে বিদায় নিয়েছেন নূরুদ্দিন হোসেন ও রুমা খাতুন। সৌদি আরবের ওয়াহিদ খলিলের বিপক্ষে নূরুদ্দিন করেন ৯০.১ পয়েন্ট। আর ওয়াহিদের স্কোর ১০৩.৪। নারীদের ইভেন্টে রুমা খাতুন ৯৮.৬ স্কোর করেছেন। আর ইরানের মারজান সালাহশৌরি করেছেন ১০৮.৩ স্কোর।
হকিতেও বড় হার
এশিয়ান গেমসের হকিতে বড় হার দিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের। তবে এদিন বাংলাদেশ হেরেছে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন জাপানের কাছে। শহর থেকে বেশ দুরে গুংসু পার্ক স্টেডিয়ামে ৭-২ গোলে হেরেছে জিমিরা। ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টারেই ছিটকে যায় বাংলাদেশ। ৪-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে অবশ্য খেলায় ফিরেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। কোনো গোল হজম না করেই এক গোল পরিশোধ করে তারা। ম্যাচের ২৯তম মিনিটে এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের গোলের সূচনা করেন আশরাফুল ইসলাম। তৃতীয় কোয়ার্টারেও বাংলাদেশ খারাপ খেলেনি। এক গোল হজমের পাশাপাশি আরেক গোল পরিশোধ করে তারা। ৪৩ মিনিটে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন পুষ্কর ক্ষিসা মিমো। শেষ কোয়ার্টারে আরো দুই গোল হজম করে এবং আর কোনো গোল করতে না পারায় ৭-২ গোলের ব্যবধান নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে। গেমসে আগামীকাল পাকিস্তানের মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ।