ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

মাছ ধরে অভাব-অনটন দূর হচ্ছে না সুন্দরবনের জেলেদের

জি এম জাকির হোসেন, দাকোপ (খুলনা) থেকে
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার
mzamin

সেই ছোটকাল থেকে সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরছি। সত্তর বছরের বেশি বয়স হয়ে গেল, এখনো সেই মাছ ধরেই যাচ্ছি। কিন্তু সংসারের অভাব-অনটন দূর করতি পারলাম না! এহন ভাবছি ছাওয়ালগের কথা। আগের মতো সুন্দরবনে আর মাছও পাওয়া যায় না। আমার জীবন তো কাটে গেল, ছাওয়ালগের কি হবে?’ সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের সামনে কয়রা সদর ইউনিয়নের সত্তরোর্ধ্ব জেলে হযরত আলী সানা হতাশার সুরে এসব কথাই বলছিলেন।  শুধু হযরত আলীই নন, তার মতো সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল অন্য জেলেদের সংসারের হালচালও প্রায় একই রকম। জানা যায়, দীর্ঘ ৩ মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর গত ১লা সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরার অনুমতি দিয়েছে বন বিভাগ। কিন্তু আগে যেখানে একেক জন জেলে একটি পাস পারমিট (বিএলসি) নিয়ে পুরো খুলনা রেঞ্জের প্রতিটি নদী-খালে মাছ ধরতে পারতেন, সেখানে এখন থেকে কোনো জেলে একটির বেশি খালে মাছ ধরতে পারবেন না। 

এতে চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার জেলেরা। কয়রা উপজেলার সুন্দরবন বন বিভাগের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন সূত্র জানায়, সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জে ছোট-বড় মিলিয়ে তিন শতাধিক নদী-খাল রয়েছে। কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের অধীন সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরার জন্য ৯৪২ জন জেলের অনুমোদন রয়েছে। এদের মধ্যে ১৩ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬৭৫ জন জেলে বনে প্রবেশের পাস পারমিট সংগ্রহ করেছেন। পাস পারমিটপ্রাপ্ত জেলেদের মধ্যে ৪৫০ জন মাছ ও ২২৫ জন জেলে কাঁকড়া সংগ্রহের জন্য পাস নিয়েছেন। বৈধভাবে এক একটি পাস পারমিটের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২ জন জেলে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যেতে পারবেন।  

সংখ্যানুপাতে এক একটি নদী-খালে ৬ জন করে জেলের মাছ ধরার অনুমতি রয়েছে। সূত্র জানায়, এক সপ্তাহের জন্য সুন্দরবনে মাছ ধরার জন্য একজন জেলের প্রবেশ ফি ১৫ টাকা ও কাঁকড়া ধরার জন্য প্রবেশ ফি ১২ টাকা। এর ওপর রয়েছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। এ ছাড়া প্রতি কেজি ইলিশ ও ভেটকি মাছ ধরার জন্য ২৪ টাকা, বাগদা ও গলদা চিংড়ি ৫০ টাকা, সাদা মাছ ৬ টাকা ৪০ পয়সা ও গুঁড়া চিংড়ি ৫ টাকা করে দিতে হয়। রফিকুল নামে একজন জেলে বলেন, ‘গাঙে আগে বড় বড় মাছ ছিল। এখন সে ধরনের মাছ আর নেই। ফলে আমরা জেলেরা অশান্তিতে আছি।’ সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের বন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ টিকিয়ে রাখার জন্যই বন বিভাগের পক্ষ থেকে মাছ ধরার ওপর একটু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তবে এতে জেলেদের খুব একটা ক্ষতি হবে না।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status