বাংলারজমিন
নদীগর্ভে ২২ দোকান
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঝুঁকিতে কুড়িগ্রামের পাগলার বাজার
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার
পাগলার বাজার। ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে এ বাজারটি। বাজারটি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানার দুর্গম নারায়ণপুর ইউনিয়নের পদ্মারচর গ্রামে অবস্থিত। এ বছরের বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে বাজারের দেড়শ’ দোকানের মধ্যে ২২টি দোকান চলে গেছে নদীগর্ভে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে পদ্মারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পদ্মারচর আবাসন প্রকল্প, আবাদি জমি ও শতাধিক বসতবাড়ি। বাজারটি রক্ষায় এলাকাবাসী, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীগণ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। পাগলার বাজারে ভাঙনের কথা আমরা জানতে পারলাম। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের নৌঘাট থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা শ্যালো নৌকাযোগে পৌঁছানো হয় পাগলার বাজার নামক স্থানে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় বাজারটির ভাঙনকবলিত দুর্দশা।
বাজারের উত্তর-পশ্চিম পার্শ্ব ঘেঁষে ২২টি দোকানের স্থানটি নদীতে ধসে পড়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি দোকান। পাগলার বাজারের ইজারাদার শাহাজুল হক জানান, ২০১২ সালে বাজারটি স্থাপন করা হয়। প্রথমে এমপির বাজার নামকরণ করা হলেও একজন অচেনা পাগলের আবির্ভাবের পর এর নাম হয়ে যায় পাগলার বাজার। এই বাজারের আশেপাশে কোনো বাজার নেই। এখানকার ১০টি চরের ২০ হাজার মানুষের কেনাকাটার জন্য রয়েছে একমাত্র এই বাজারটি। এটি ভেঙে গেলে বাজারের দেড়শ’ ব্যবসায়ী পড়ে যাবে চরম বিপদে। আমরা বাজার, স্কুল ও আবাসনটি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করেছি। বাজারের ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম ও রফিকুল মাস্টার জানান, আমাদের পদ্মারচরটি প্রায় ৭০ বছরের পুরনো চর। এখানে প্রায় ২ হাজার ৬শ’ পরিবারের বসবাস। এই বাজার ভেঙে গেলে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা-বিক্রেতা বিপদে পড়ে যাবে। এ বাজারের দুলাল ও আলী হোসেন জানান, জেলার দুর্গম ব্রহ্মপুত্র নদের ভিতরে স্থানীয়দের উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাগলার বাজারটি আশপাশের ১০টি চরের মানুষের একমাত্র বাজার ও সময় কাটানোর জায়গা। এ ছাড়াও সপ্তাহে হাট বসে শুক্র ও সোমবার। হাটটি বিলীন হলে বিপদে পড়বে ২০ হাজার মানুষ।