বাংলারজমিন
টাঙ্গাইলে বিদ্যুতের মই টানার কাজে এসে কোটিপতি
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবারটাঙ্গাইলের সখীপুরে বিদ্যুতের মই টানার কাজ করতে এসে বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের সংস্পর্শে কোটিপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে অন্তর আহমেদ নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। কয়েক বছর আগে সখীপুরে বেসরকারি বিদ্যুৎ শ্রমিকদের সঙ্গে পরিচিত হয় অন্তরের। একপর্যায়ে বিদ্যুতের বিল নিয়ে গ্রামে গ্রামে, বাসা-বাড়িতে বিতরণের কাজ নেন। দীর্ঘদিন এ কাজে থাকায় অফিসারদের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। ফলে এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন, গ্রাহকের নতুন মিটার করে দেয়া ও ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপনের কাজে তদবির করে মোটা অঙ্কের টাকা কামানো শুরু হলে আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। তার বিরুদ্ধে সখীপুর পিডিবি’র (বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড) কয়েকজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
জানা যায়, বিদ্যুৎ অফিসের দালালি ও ঠিকাদারদের কাজ বাগিয়ে নিতে সখীপুরের এমপি, ভালুকার এমপি, বিদ্যুৎ বিভাগের বড় অফিসার, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি’র সঙ্গে ছবি তুলে সেগুলো ব্যবহার করেন তিনি। এসব ছবি এখন তার বাসায় বিলবোর্ড আকারে বাঁধিয়ে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, অন্তর আহমেদের দলীয় কোনো পদ নেই। সে এক প্রকার অনুপ্রবেশকারী। অভিযোগ রয়েছে, অন্তর আহমেদের কথা না শুনলে কর্মকর্তাদের হতে হয় অপমান-অপদস্থ। তার হুমকিতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম ও অর্চ্যুদাশ গুপ্ত অন্যত্র বদলি হয়েছেন। প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম সখীপুর থানায় জিডিও করেছেন।
একটি পক্ষের থেকে ঘুষ নিয়ে এমপি’র ডিও লেটার এনে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শামসুল আলম ও লাইনম্যান (এ) মিজানুর রহমান মুন্নাকে অন্যত্র বদলি করে দিয়েছেন। তাদের পরিবর্তে আসাদের কাছ থেকেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়েছেন তিনি। পিডিবি সূত্রে জানা যায়, সখীপুর পিডিবি’র (বিক্রয় ও বিতরণ) নির্বাহী প্রকৌশলীকে তিনি এমপি’র ডিও লেটার এনে এখানে পদায়ন করেছেন বলে বেড়াচ্ছেন। এ কারণে নির্বাহী প্রকৌশলী তার কথামতো ঠিকাদার নিয়োগ, ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন, সংযোগ লাইনসহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। বিদ্যুৎ অফিসের তার, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি তিনি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয় করেন। এ ছাড়া বিকল হওয়া ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপনে তাকে দিতে হয় এক থেকে দেড় লাখ টাকা। যেটি গ্রাহকদের বিনামূল্যে পাওয়ার কথা। সম্প্রতি তিনি ২৮ লাখ টাকা দামের একটি প্রাইভেটকার কিনেছেন। পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্মাণ করেছেন বহুতল বিশিষ্ট বাড়ি। নামে-বেনামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। বিদ্যুৎ অফিসে তিনি এখন ‘অঘোষিত জমিদার’। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অন্তর আহমেদ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সখীপুর পিডিবি’র (বিক্রয় ও বিতরণ) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর তালুকদার সঠিক নিয়মে সবকিছু চলছে জানিয়ে বলেন, একটি পক্ষ বিদ্যুৎ অফিসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।