ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় স্বামীকে হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করেন স্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার

 গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে ১২ নম্বর গেটে একটি ট্রলি ব্যাগ পাওয়া যায়। কফি রঙের ট্রলি ব্যাগে ছিল মানব শরীরের ২ হাত, ২ পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ। তবে মাথাসহ আরও কিছু অংশ না থাকায় তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি কেউ। একপর্যায়ে পুলিশ ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে এনআইডি ডাটাবেজ দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করে। একইসঙ্গে হত্যায় জড়িত স্ত্রী ও সন্তানদের আটকের পর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী লাশের আরও কয়েকটি অংশও উদ্ধার করেছে।

প্রাথমিকভাবে জানা যায়, সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় মোহাম্মদ হাসান (৫৮) নামের এই ব্যক্তিকে স্ত্রী, দুই ছেলে ও পুত্রবধূ  মিলে হত্যা করে লাশ খণ্ডবিখণ্ড করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন। শনিবার পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর একটি টিম নগরের আকমল আলি সড়ক সংলগ্ন খাল থেকে  মোহাম্মদ হাসানের দেহের কয়েকটি  অংশ উদ্ধার করেছে। তবে মাথার অংশ এখনো উদ্ধার করা যায়নি। নিহত মোহাম্মদ  হাসান বাঁশখালীর কাথারিয়ার সাহেব মিয়ার পুত্র। তিনি দুই ছেলে এবং এক মেয়ের পিতা। ঘটনার পর থেকে হাসানের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান পিবিআইয়ের হেফাজতে থাকলেও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলি পালিয়ে গেছে।

জানা গেছে, ২৭-২৮ বছর ধরে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল হাসানের। সম্প্রতি তিনি ফিরে আসলে বাঁশখালীতে থাকা  পৈতৃৃক সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে দিতে চাপ দেন স্ত্রী সন্তানরা। কিন্তু তিনি দিচ্ছিলেন না। গত ১৯ই সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় চিকিৎসার নামে হাসানের স্ত্রী চট্টগ্রাম শহরে ছোট ছেলের বাসায় আসেন। ঘটনার দিন বড় ছেলে মোস্তাফিজুরও সেই বাসায় যান। হাসানকেও ডেকে নেয়া হয়। রাতে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে স্ত্রী, দুই ছেলে এবং ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করে। ঠাণ্ডা মাথায় লাশ কেটে টুকরো করে ট্রলি ব্যাগে করে আট টুকরো ফেলা হয় পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাট এলাকার খালে। মাথা এবং বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়েছে। ছোট ছেলেই তার বাবার শরীরের টুকরোগুলো বিভিন্নস্থানে ফেলেন।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার হাসান দীর্ঘদিন পরিবার থেকে আলাদা ছিলেন। সম্প্রতি তিনি ঘরে ফিরেন। ফেরার পর থেকে স্ত্রী ও সন্তানরা তার সম্পত্তি তাদের নামে হস্তান্তরে চাপ দেয়। কিন্তু হাসান একমত না হওয়ায় তাকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। আমরা তার স্ত্রী ও বড় ছেলেকে হেফাজতে নিয়েছি।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status