বাংলারজমিন
২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি
ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবারপ্রচণ্ড গরমে যখন নাভিশ্বাস উঠেছিল জনজীবনে সেই সময় গত বুধবারের বৃষ্টি জনজীবনে প্রশান্তির সৃষ্টি করলেও তিনদিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। বুধবার গভীর রাত থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের পর বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার সন্ধ্যা অবধি নীলফামারী জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের দরুন জেলার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় যান ও মানুষের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া মানুষ বের হচ্ছে না বাড়ির বাইরে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হযেছে। আরও বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়ে। এ ছাড়াও বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন্নআয়ের মানুষ। টানা বৃষ্টিপাতের দরুন বিপাকে পড়েছে অটোরিকশা ও ভ্যান চালকরা। যাত্রী না থাকায় সারাদিনে তারা আয় করতে পারেনি, ফলে পরিবার নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে জেলার নিম্নাঞ্চল হয়েছে প্লাবিত।
শহরের রিকশাচালক আব্দুর রশিদ জানান, বৃষ্টির কারণে যাত্রী কম পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আয় কমে গিয়ে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছি। গফুর নামে এক রিকশাচালক জানান, সারাদিনে ১৫০ টাকা পেয়েছি। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ শত টাকা পর্যন্ত আয় হয়ে থাকে। ভ্যান চালক আব্দুল লতিফ জানান, বৃষ্টির কারণে কাঁচামাল আমদানি কমে যাওয়ায় ভ্যানের আয়ও কমে গেছে। প্রতিদিন যেখানে কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ শত টাকা ইনকাম করে থাকি সেখানে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকা ভাড়া মেরেছি। আকাশের যা অবস্থা সারাদিন বৃষ্টি হতে পারে। সারাদিন বৃষ্টি হলে ভাড়া মারতে না পারলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
তফিজুল নামে এক পান বিক্রেতা জানান, বৃষ্টির কারণে মানুষজন বাড়ি থেকে বের হতে না পারায় বিক্রি অনেক কমে গেছে। বৃষ্টির সময় দোকানে আয় কমে যায় ফলে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। পৌর শহরের হোটেল ব্যবসায়ী রকি জানান, বৃষ্টির কারণে বিক্রি কমে যাওয়ায় দোকানে প্রায় ৬ হাজার টাকার মতো লোকসান হয় । শনিবার সকালেও বৃষ্টি আসার কারণে দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। টানা বৃষ্টিপাতের দরুন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরাও পড়েছেন বিপাকে। ছাতা নিয়ে স্কুল-কলেজে গেলেও বৃষ্টির পানিতে ভিজেই তাদের ক্লাস করতে হচ্ছে।
তাছাড়া গত তিনদিন থেকে টানা বৃষ্টিতে অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ব্যাংকসহ সকল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বিভিন্ন এনজিওকর্মীদেরও নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বৃষ্টির কারণে। অফিসে যেতে হবে বলেই বাধ্য হয়ে অনেকেই বাড়ি থেকে বের হয়েছে। এদিকে ভারী বৃষ্টিপাতের দরুন উপজেলার নিম্নাঞ্চল জায়গাগুলোতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ডোমার ফায়ার সার্ভিসের ভেতর পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি মানুষজনকে কষ্ট করে চলাচল করতে হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, এ রকম বৃষ্টি তারা অনেকদিন দেখেননি। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে জেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিমলা আবহাওয়া অধিপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবুজ আহম্মেদ জানিযেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হযেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলেও তিনি জানান।
মন্তব্য করুন
বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]