বাংলারজমিন
গারো পাহাড় দখল করে চাষাবাদ নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার
জামালপুর জেলার উত্তর সীমান্তে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমানায় গারো পাহাড়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি ছিল এই গারো পাহাড়। এখানে উঁচু-নিচু টিলায় হাজারো প্রজাতির গাছপালায় ছিল ভরপুর। পাহাড়ের উঁচু-নিচু টিলার নিচ দিয়ে বয়ে যায় ঝর্ণার স্বচ্ছ পানি। হাজারো প্রজাতির জীবজন্তু সাপ বিচ্ছুর আনাগোনা ছিল পাহাড়জুড়ে। বাঘ, ভালুক, হরিণ, বানর, কাঠবিড়ালি, বন্যশূকর, বন্যগরু-মহিষ, এমনকি বন্যহাতির বিচরণ ছিল পাহাড়জুড়ে। এখানে বাস করতো হাতেগোনা কিছু উপজাতি পরিবার। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের জমিতে জুমচাষ করে, লাকড়ি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু বর্তমানে গারো পাহাড়ের হাজারও জনগোষ্ঠী অবৈধভাবে পাহাড়ের উঁচু-নিচু টিলায় ঘরবাড়ি নির্মাণ করে পাহাড়ের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে। সৌন্দর্য হারিয়েছে পাহাড়টি। অবৈধভাবে বসবাসকারীরা পাহাড়ের গাছপালা সাবাড় করে ধানসহ শিমুল, আলু, করলা, বেগুন, লাও, শিম, বরবটি ইত্যাদি ফসলের চাষাবাদ করে চলছে। ন্যাড়া পাহাড় হয়েছে গাছপালা পশুপাখি শূন্য। আগের মতো এখন আর ঝর্ণায় পানি নেই। জানা গেছে, পাহাড়ের গাছপালা সাবাড় করে ফেলায় পাহাড়ের পরিবেশ নষ্ট হয়ে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। বনের পশুপাখি জীবজন্তু বিলুপ্ত হয়েছে। বনের আদিম রূপ হারিয়ে ফেলেছে। বন-জঙ্গল হয়েছে জনসাধারণের বাড়িঘর। রীতিমতো চাষের আওতায় এনেছে বনভূমি। বনবিভাগের সমীক্ষায় এখানে বনভূমির জমির পরিমাণ ২৭৬৭ একর। ইতিমধ্যে বেদখল হয়েছে ১৪৬ একর। বালুঝুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল হাসান জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ৩১ জন অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জামালপুর জেলা প্রশাসক শিগগিরই ব্যবস্থা নেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।