দেশ বিদেশ
আইন ভেঙে তিনি আইআইইউসি’র উপাচার্য
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনে বলা হয়েছে শিক্ষাজীবনে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর দুটিতে প্রথম শ্রেণি থাকতে হবে। যদি কোনোটিতে দ্বিতীয় শ্রেণি থাকে, তাহলে বিকল্প হিসেবে পিএইচডি ডিগ্রি থাকতে হবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে (আইআইইউসি) উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে এ আইন মানা হয়নি। চট্টগ্রামের বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে আছেন অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ। শিক্ষাজীবনে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কিন্তু তার কোনো পিএইচডি ডিগ্রি নেই। জাতীয় সংসদের প্রণীত আইনকে অবজ্ঞা করেই তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক পদে যোগ দেন। ওই পদে যোগদানের জন্য তার নিজের হাতে লিখিত আবেদনপত্রের একটি কপি আমাদের হাতে এসেছে। সেখানে শিক্ষাগত যোগ্যতায় উল্লেখ করা হয়- তিনি সাতকানিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সালে এসএসসি পাস করেন।
আইআইইউসি’র একাধিক শিক্ষক জানান, আনোয়ারুল আজিম আরিফ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তিনি সরকারি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১-২০১৫ পর্যন্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। এক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের জন্য তার যথাযথ যোগ্যতা ছিল। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনানুযায়ী তার নির্দিষ্ট যোগ্যতা নেই। কারণ তিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে অনার্স ডিগ্রি পাস করেছেন। এ ছাড়া বিকল্প যোগ্যতা হিসেবে তিনি কোনো পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করতে পারেননি। সেক্ষেত্রে তাকে আইআইইউসি’র উপাচার্য নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমে জাতীয় সংসদের প্রণীত আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে কখনো এরকম অনিয়ম হয়নি। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আনোয়ারুল আজিম আরিফ মানবজমিনকে বলেন, ‘আমি তো আর আমাকে নিয়োগ দেইনি। আমাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। আপনি উনার সঙ্গে, চ্যান্সেলরের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেন।’ জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আইআইইউসি’র উপাচার্য যদি নিজের যোগ্যতা গোপন করে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত
এদেশে আওয়ামীলীগ করলে পড়ালেখা । কিসের যোগ্যতা।
এখন ভিসি,প্রিন্সিপাল ইত্যাদি পদের জন্য আসল যোগ্যতা হলো জি হুজুর জি হুজুর করতে পারা।
উনি এর আগে দেশের শীর্ষ স্থানীয় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন! কিভাবে? যদিও আইনে নেই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার জন্য পিএইচডি ডিগ্রির, কিন্তু পিএইচডি ডিগ্রির মতন একটা ডিগ্রি ছাড়া কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তা নিয়োগ পাবে? তাছাড়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক! এ ভিন্নতা কেন?
পা-চাটার সংস্কৃতির এখন আসল সংস্কৃতি।
জনাব আনোয়ারুল আজিম আরিফ এর নিয়োগপ্রাপ্তির মূল শর্ত/যোগ্যতা হলো উনি একজন খাঁটি আওয়ামীলীগার। এটাই সবচাইতে বড় মাপকাঠি। অন্যান্য শর্ত শিথিল হলেও চলবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতার চেয়ে ও আওয়ামী আনুগত্য থাকলে যথেষ্ট!¡!!!
পত্রিকায় নিউজটি পাঠ করে অবাক হলাম।আইআই ইউসি'র মতো একটি স্বনামধন্য বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ভিসি হিসেবে নিয়োগ পেলেন কিভাবে? নিশ্চয়ই এতে ট্রাষ্টি বোর্ডের হাত রয়েছে।কারণ বর্তমান ট্রাষ্টি বোর্ড ওনাকে মনোনীত না করলে যথাযথ কতৃপক্ষও নিয়োগ দিতেন না।
এটা বাংলাদেশে আশ্চর্যের কিছু নয়। এ ধরনের নিয়োগ অতীতে অনেক হয়েছে।বিষয়টি সরকারকে জমানোর পরও কোনো কাজ হয়নি। আজীম সাহেবের তো অন্তত মাষটারসে একি ১ম ক্লাস আছে কিন্তু জীবনে সব ২য় শরেনী নিয়ে উপাচার্য হয়েছেন এমন ঘটনাও কারো অজানা নয়। বি উ বি টি তে আবু সাসেহ দুই টার্ম ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে যথা যত তদন্ত করে উপাচার্য সহ যারা সংশ্লিষ্ট ছিলেন তাদের আইনের কাঁঠ গড়ায় এন উপযুক্ত শাস্তি জেল জরিমানা করলেই তখন সকলে সজাগ হবেন। আমরা তো খবর দিলাম এবার ফল দেখতে চাই।